● ‘কবর’ কবিতা
প্রখ্যাত পল্লিকবি জসীমউদ্দীন রচিত ‘কবর’ কবিতাটি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘রাখালী’ (প্রকাশকাল: ১৯২৭) -তে সংকলিত একটি অনন্য সৃষ্টি। তবে এই কবিতাটি সর্বপ্রথম ‘কল্লোল’ সাহিত্যপত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত একটি আবেগঘন কবিতা, যার পঙক্তি সংখ্যা ১১৮টি।
কবিতার সূচনায় কবি বলেন:
“এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।”
এই পঙক্তিগুলোর মাধ্যমে কবি এক চিরন্তন বেদনাবিধুর পারিবারিক সম্পর্ক ও শোকের চিত্র তুলে ধরেছেন, যা বাংলা সাহিত্যে এক অপূর্ব সংযোজন।
● কবি জসীমউদ্দীন সম্পর্কে
জসীমউদ্দীন বাংলা সাহিত্যের এক অমর নাম। তিনি কেবল একজন কবিই নন, ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ ও পল্লিসাহিত্যের সংগ্রাহক। তাঁর জন্ম ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি, ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে তাঁর মাতুলালয়ে।
গ্রামীণ জীবনের হৃদয়ছোঁয়া চিত্র তুলে ধরার জন্য তিনি পরিচিত ‘পল্লিকবি’ নামে। তাঁর লেখায় বাংলার মাঠ-ঘাট, নদী, গাছপালা, সম্পর্ক, প্রেম ও বিচ্ছেদের সৌন্দর্য সহজ ভাষায় অনুরণিত হয়েছে।
● অন্যান্য সাহিত্যকর্ম
জসীমউদ্দীনের বিখ্যাত কবিতা ‘নিমন্ত্রণ’, তাঁর ‘ধানখেত’ নামক কাব্যগ্রন্থে স্থান পেয়েছে, যা ১৯২৭ সালে প্রকাশিত হয়।
তাঁর নির্বাচিত কবিতার একটি উল্লেখযোগ্য সংকলনগ্রন্থ হলো ‘সুচয়নী’।
তিনি সংগীতচর্চাতেও পিছিয়ে ছিলেন না। তাঁর রচিত গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
-
রঙ্গিলা নায়ের মাঝি
-
গাঙ্গের পাড়
-
জারিগান
● উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
জসীমউদ্দীন বাংলা সাহিত্যে অসংখ্য কাব্যগ্রন্থ উপহার দিয়েছেন, যেগুলোর প্রতিটিতেই গ্রামীণ জীবনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো:
-
রাখালী
-
ধানখেত
-
বালুচর
-
রূপবতী
-
নক্সী কাঁথার মাঠ
-
সোজন বাদিয়ার ঘাট
-
মাটির কান্না
-
মা যে জননী কান্দে
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) এবং বাংলাপিডিয়া।