বাংলা সাহিত্যে প্রথম মুসলিম নাট্যকার রচিত নাট্যগ্রন্থ কোনটি?
A
জগৎ মোহিনী
B
বসন্তকুমারী
C
আয়না
D
মোহনী প্রেমপাস
উত্তরের বিবরণ
‘বসন্তকুমারী’ নাটক:
মীর মশাররফ হোসেন রচিত ‘বসন্তকুমারী’ (১৮৭৩) বাংলা সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাটক। এটি মুসলমান নাট্যকার কর্তৃক রচিত প্রথম নাটক হিসেবে বিবেচিত।
নাটকটির কাহিনিতে রয়েছে—ইন্দ্রপুরের এক বৃদ্ধ রাজার যুবতী রাণী গ্রহণ, সেই রাণীর রাজার যুবক পুত্রের প্রতি আকর্ষণ, প্রেম নিবেদন, পুত্রের প্রত্যাখ্যান এবং বিমাতার প্রতিহিংসাপরায়ণ ষড়যন্ত্র—যার পরিণতিতে রাজপরিবারের সবার মৃত্যু ঘটে।
নাটকটির অপর নাম ‘বৃদ্ধস্য তরুণী ভার্যা’।
এছাড়া একই বছর মীর মশাররফ হোসেন রচিত তাঁর দ্বিতীয় নাটক ‘জমীদার দর্পণ’ প্রকাশিত হয়।
মীর মশাররফ হোসেন:
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন উনিশ শতকের একজন বিশিষ্ট বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিক, যিনি উপন্যাস, নাটক ও প্রবন্ধ রচনায় বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন।
তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ছাত্রাবস্থায় সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালির গ্রামবার্তা প্রকাশিকা-র মফঃস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করেন। পরবর্তীতে আজিজননেহার ও হিতকরী নামক দুটি পত্রিকার সম্পাদনা করেন।
তিনি ছিলেন বঙ্কিমচন্দ্রের সমসাময়িক গদ্যশিল্পী এবং বাঙালি মুসলমান সাহিত্যজগতের অগ্রদূত।
তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম:
নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
-
টালা অভিনয়
উপন্যাস:
-
বিষাদ-সিন্ধু
আত্মজীবনীমূলক রচনা:
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
উৎস:
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 5 months ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের 'ভ্রান্তিবিলাস' কোন নাটকের গদ্য অনুবাদ?
Created: 3 months ago
A
মার্চেন্ট অব ভেনিস
B
কমেডি অব এররস
C
অ্যা মিডসামার নাইটস ড্রিম টেমিং অব দ্য শ্রুনাইটস ড্রিম
D
টেমিং অব দ্য শ্রু
ভ্রান্তিবিলাস
- ভ্রান্তিবিলাস রচিত হয় ১৮৬৯ সালে, বিদ্যাসাগরের প্রথম রচনা বেতালপঞ্চবিংশতির বাইশ বছর পরে।
- ভ্রান্তিবিলাস বিশ্বখ্যাত নাট্যকার শেক্সপীয়রের 'কমেডি অব এররস' নাটক অবলম্বনে রচিত।
- বইয়ের 'বিজ্ঞাপন' শিরোনাম অংশে তিনি লিখেছেন:
'কিছু দিন পূর্বে, ইংলন্ডের অদ্বিতীয় কবি শেক্সপীয়রের প্রণীত ভ্রান্তিপ্রহসন পড়িয়া আমার বোধ হইয়াছিল, এতদীয় উপাখ্যানভাগ বাঙ্গালাভাষায় সঙ্কলিত হইলে লোকের চিত্তরঞ্জন হইতে পারে। তদনুসারে ঐ প্রহসনের উপাখ্যানভাগ বাঙ্গালাভাষায় সঙ্কলিত ও ভ্রান্তিবিলাস নামে প্রচারিত হইল।'
- এরপরে তিনি বলেছেন যে এই নাটকের কাব্য-অংশ শেক্সপীয়রের অন্যান্য নাটকের চেয়ে 'নিকৃষ্ট', কিন্তু এর কাহিনী-অংশ কৌতুকপূর্ণ। সেজন্য তিনি এই নাটকটি বাংলাভাষায় রূপান্তরের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
-------------------------
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ ঈশ্বরচন্দ্রকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 'ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা' নামেও স্বাক্ষর করতেন।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম গদ্যে যতিচিহ বা বিরামচিহ্নের ব্যবহার শুরু করেন।
- তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ বেতাল পঞ্চবিংশতি (১৮৪৭)। এই গ্রন্থে তিনি প্রথম যতি বা বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করেন।
• বিদ্যাসাগরের কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম:
- শকুন্তলা,
- সীতার বনবাসের,
- ভ্রান্তিবিলাস ইত্যাদি।
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
- আখ্যান মঞ্জরী,
- বোধোদয়,
- বর্ণপরিচয়,
- কথামালা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং ‘ভ্রান্তিবিলাস’ গ্রন্থ।
0
Updated: 3 months ago
'নেমেসিস' নাটকে নূরুল মোমেন কোন বিষয়কে তুলে ধরেছেন?
Created: 3 months ago
A
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ
B
ঊনপঞ্চাশের মন্বন্তর
C
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন
D
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ
'নেমেসিস' নাটক
- 'নেমেসিস' নুরুল মোমেন রচিত শ্রেষ্ঠ নাটক।
- ১৯৩৯-৪৩ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নুরুল মোমেন ১৯৪৪ সালে নাটকটি লেখেন এবং ‘শনিবারের চিঠি’ পত্রিকায় তা প্রকাশিত হয়।
- নাটকটি গ্রন্থাকারে প্রকাশ পায় ১৯৪৮ সালে।
- নাটকটি স্কুল মাস্টার সুরজিত নন্দী নামের এক চরিত্র বিশিষ্ট নাটক। এক চরিত্র বিশিষ্ট এমন নাটক বাংলা সাহিত্যে কম বলে ‘নেমেসিস’ উল্লেখযোগ্য।
- এ নাটকে সমকালীন দুর্ভিক্ষ, মজুতদারদের পিশাচবৃত্তি ও নিরন্নদের হাহাকারের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে।
- 'নেমেসিস' নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম- সুরজিত নন্দী।
--------------------
• নুরুল মোমেন:
- নুরুল মোমেন এর জন্ম ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গায় ১৯০৬ সালে।
- নুরুল মোমেনের প্রথম নাটক রূপান্তর ১৯৪২ সালে ঢাকা বেতার-এ প্রচারিত হয়। তিনি নিজে নাটকটি পরিচালনা করেন। ১৯৪৭ সালে নাটকটি গ্রন্থরূপে প্রকাশিত হয়।
- তাঁর 'নেমেসিস' নাটকটি প্রথম শনিবারের চিঠি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। 'নেমেসিস' নাটকটি পঞ্চাশ-দশকের মন্বন্তরের পটভূমিতে রচিত।
- নুরুল মোমেন রচিত প্রথম রম্যগ্রন্থ 'বহুরূপা'।
• নুরুল মোমেন এর বিখ্যাত নাটক:
- যদি এমন হতো,
- নয়া খান্দান,
- আলোছায়া,
- আইনের অন্তরালে,
- শতকরা আশি,
- রূপলেখা,
- যেমন ইচ্ছা তেমন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
প্রথম বাংলা সার্থক ট্র্যাজেডি নাটক রচনা করেন কে?
Created: 5 months ago
A
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
B
দীনবন্ধু মিত্র
C
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
D
দ্বিজেন্দ্রলাল রায়
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্র্যাজেডি নাটক: কৃষ্ণকুমারী
‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটকটি মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচনা করেন ১৮৬০ সালে এবং এটি প্রকাশিত হয় ১৮৬১ সালে।
-
নাটকের কাহিনি সংগৃহীত হয়েছে উইলিয়াম টডের ‘রাজস্থান’ গ্রন্থ থেকে।
-
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্র্যাজেডি নাটক, যা মধুসূদনের নাট্যসাহিত্যে বিশেষ অবদান হিসেবে বিবেচিত।
-
নাটকের উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হলো: কৃষ্ণকুমারী, মদনিকা, ভীমসিংহ, জগৎসিংহ ও ধনদাস।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
-
জন্ম: ২৫ জানুয়ারি ১৮২৪, যশোর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে, কপোতাক্ষ নদের তীরে।
-
বাংলা ভাষায় সনেট এবং অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক।
-
‘পদ্মাবতী’ নাটকের দ্বিতীয় অঙ্কের দ্বিতীয় গর্ভাঙ্কে তিনি প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দ প্রয়োগ করেন।
-
অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ কাব্যগ্রন্থ: তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য।
তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য নাটকসমূহ:
-
শর্মিষ্ঠা
-
পদ্মাবতী
-
কৃষ্ণকুমারী
-
মায়াকানন
প্রহসন (হাস্যরসাত্মক নাট্য)
একেই কি বলে সভ্যতা?-
বুড়ো সালিকের ঘাড়ে রোঁ
কাব্যগ্রন্থ:
-
তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য
-
মেঘনাদবধ কাব্য
-
ব্রজাঙ্গনা কাব্য
-
বীরাঙ্গনা কাব্য
-
চতুর্দশপদী কবিতাবলী
উৎস: বাংলা ভাষা সাহিত্য ও জিজ্ঞাসা - ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 5 months ago