"বউ কথা কও, বউ কথা কও কও কথা অভিমানিনী সেধে সেধে কেঁদে কেঁদে যাবে কত যামিনী"- এই কবিতাংশটুকুর কবি কে?
A
বেনজীর আহমেদ
B
কাজী নজরুল ইসলাম
C
জীবনানন্দ দাশ
D
শামসুর রাহমান
উত্তরের বিবরণ
মহুয়ার গান ও ‘বউ কথা কও’
‘মহুয়ার গান’ হলো কাজী নজরুল ইসলামের রচিত এক বিশেষ নজরুলগীতি সংকলন, যাতে স্থান পেয়েছে প্রেম, প্রকৃতি ও আবেগঘন অনুভূতির অপূর্ব ছোঁয়া।
এই গীতিগ্রন্থটি ডি. এম. লাইব্রেরি থেকে ১ জানুয়ারি, ১৯৩০ সালে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি মোট ১৫টি গান নিয়ে রচিত, যার পৃষ্ঠা সংখ্যা ছিল মাত্র ১৩ এবং দাম ছিল দুই আনা।
এই সংকলনের অন্তর্ভুক্ত গানগুলো হলো:
-
কে দিল খোঁপাতে ধুতুরা ফুল লো
-
একডালি ফুলে ওরে সাজাব কেমন করে
-
বউ কথা কও
-
কত খুঁজিলাম নীল কুমুদ তোরে
-
কোথা চাঁদ আমার
-
ফণীর ফণায় জ্বলে মণি
-
মহুল গাছে ফুল ফুটেছে
-
আজি ঘুম নহে, নিশি জাগরণ
-
খোলো খোলো গো দুয়ার
-
ভরিয়া পরান শুনিতেছি গান
-
(ওগো) নতুন নেশার আমার এ মদ
-
মোরা ছিনু একেলা, হইনু দুজন
-
ও ভাই আমার এ নাও যাত্রী না লয়
-
আমার গহীন জলে নদী
-
তোমায় কুলে তুলে বন্ধু আমি নামলাম জলে
গান: বউ কথা কও
কবি: কাজী নজরুল ইসলাম
বউ কথা কও, বউ কথা কও, কও কথা অভিমানিনী
সেধে সেধে কেঁদে কেঁদে যাবে কত যামিনী।।
সে কাঁদন শুনি হের নামিল নভে বাদল,
এলো পাতার বাতায়নে যুঁই চামেলী কামিনী।।
আমার প্রাণের ভাষা শিখে ডাকে পাখি পিউ কাঁহা,
খোঁজে তোমায় মেঘে মেঘে আঁখি মোর সৌদামিনী।।
এই গানটি প্রেমিক হৃদয়ের আকুল আবেদন ও বিরহের গভীরতা প্রকাশ করে, যা নজরুলগীতির এক অনন্য নিদর্শন।
উৎস:
-
‘মহুয়ার গান’ - কাজী নজরুল ইসলাম
-
‘বউ কথা কও’ গান
0
Updated: 5 months ago
প্রথম সাহিত্যিক গদ্যের স্রষ্টা কে?
Created: 1 month ago
A
রাজা রামমোহন রায়
B
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
C
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
বাংলা গদ্যের বিকাশ এক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে। আদি নিদর্শন থেকে শুরু করে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজ, সংবাদপত্র, মিশনারিদের অবদান এবং অবশেষে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের হাতে সাহিত্যিক গদ্যের জন্ম—সবকিছুই এক ধারাবাহিক বিকাশের অংশ। নিচে বিষয়গুলো ক্রমান্বয়ে তুলে ধরা হলো:
-
আদি নিদর্শন: বাংলা গদ্যের মূল বিকাশ উনিশ শতকে হলেও তার আগে কিছু নমুনা পাওয়া যায়। প্রাচীনতম উদাহরণ হিসেবে ধরা হয় কোচবিহারের রাজার ১৫৫৫ সালে আসামের রাজার কাছে লেখা চিঠি। যদিও এ নিয়ে পণ্ডিতদের মধ্যে মতভেদ আছে, তবে এ থেকে বোঝা যায় সেই সময় থেকেই যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলা গদ্যে চিঠি লেখা শুরু হয়েছিল।
-
ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের ভূমিকা: বাংলা গদ্যের বিকাশে ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের অবদান অপরিসীম। ১৮০১ সালে রামরাম বসুর রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র বাংলা হরফে ছাপা প্রথম মৌলিক গ্রন্থ হিসেবে প্রকাশিত হয়। মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারসহ কলেজের অন্যান্য লেখকরা সংস্কৃত-প্রভাবিত ভাষা ব্যবহার করলেও এসব গ্রন্থ মূলত পাঠ্যপুস্তক হিসেবে রচিত হয়।
-
সংবাদপত্র ও সাময়িকপত্র: ১৮১৮ সালে শ্রীরামপুর মিশন থেকে প্রকাশিত সমাচার-দর্পণ, রামমোহন রায়ের সম্বাদকৌমুদী (১৮২১) এবং ভবানীচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমাচারচন্দ্রিকা (১৮২২) বাংলা গদ্যকে আরও সহজ, কেজো ও ভাবপ্রকাশক্ষম করে তোলে। পরবর্তী সময়ে সম্বাদপ্রভাকর (১৮৩১) এবং তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা (১৮৪৩) এই বিকাশকে আরো ত্বরান্বিত করে।
-
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের অবদান: ১৮৪৭ সালে বিদ্যাসাগর তাঁর বেতালপঞ্চবিংশতি প্রকাশ করলে বাংলা গদ্যের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। তাঁর লেখায় প্রথমবার সাহিত্যিক গদ্যের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে ওঠে।
-
তিনি শব্দ-সামঞ্জস্য, অন্বয়, সঠিক পদক্রম বজায় রেখে স্বতন্ত্র শৈলী গড়ে তোলেন।
-
বিষয়বস্তুর উপযোগী শব্দ, অনুপ্রাস ও সাঙ্গীতিক ছন্দ এনে তিনি ভাষাকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করেন।
-
তাঁর সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল শ্বাসযতি ও অর্থযতির সমন্বয়, যা বাংলা গদ্যকে সাবলীল ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।
-
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা গদ্যকে সাহিত্যিক উচ্চতায় পৌঁছে দেন।
-
জীবনী ও অবদান: বিদ্যাসাগর (১৮২০–১৮৯১) মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলা গদ্যকে সুললিত শব্দবিন্যাস, পদবিভাগ ও যতি দ্বারা সহজবোধ্য ও শিল্পসমৃদ্ধ করে তোলেন। প্রথমবার তিনি গদ্যের ধ্বনি, ছন্দ ও সুর উপলব্ধি করেন। শ্বাসপর্ব ও অর্থপর্বের ভেদরেখা অনুসারে যতিচিহ্ন প্রবর্তন করেন, যা গদ্যকে সুবিন্যস্ত ও সাহিত্যোপযোগী করে।
-
সমকালীন ও পরবর্তী মতামত:
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে বাংলা গদ্যের ‘প্রথম শিল্পী’ বলেছেন।
-
প্রমথনাথ বিশি অভিহিত করেছেন ‘বাংলা গদ্যের যথার্থ শিল্পী’ হিসেবে।
-
তাঁকে ‘বাংলা গদ্যের জনক’ বলা হয়, কারণ তিনি গদ্যকে জীবন্ত ও গতিশীল রূপ দেন।
-
সব মিলিয়ে বলা যায়, যদিও বিদ্যাসাগরের আগে গদ্যের বিকাশে বহু মানুষের অবদান ছিল, তবুও সাহিত্যিক গদ্যের প্রথম স্রষ্টা হিসেবে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরই স্বীকৃত।
0
Updated: 1 month ago
কোন খ্যাতিমান লেখক 'বীরবল' ছদ্মনামে লিখতেন?
Created: 5 months ago
A
প্রমথনাথ বিশী
B
প্রমথ চৌধুরী
C
প্রেমেন্দ্র মিত্র
D
প্রমথ নাথ বসু
প্রমথ চৌধুরী ছিলেন একজন সাহিত্যিক ও বাংলা চলিত গদ্যরীতির প্রবর্তক।
-
তিনি ১৮৬৮ সালের ৭ আগস্ট যশোরে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তাঁর সাহিত্যিক ছদ্মনাম ছিল 'বীরবল'।
-
'বীরবলের হালখাতা' নামক গ্রন্থটি ১৯০২ সালে ভারতী পত্রিকায় প্রথম প্রকাশিত হয়, যা বাংলা সাহিত্যে প্রথম চলিত রীতির প্রয়োগের নিদর্শন।
-
বাংলা কাব্য সাহিত্যে তিনিই প্রথম ইতালীয় সনেট প্রবর্তন করেন।
-
তিনি 'সবুজপত্র' পত্রিকাটির সম্পাদক হিসেবেও কাজ করেছেন।
প্রমথ চৌধুরীর রচিত প্রধান কাব্যগ্রন্থ:
-
সনেট পঞ্চাশৎ
-
পদচারণ
প্রবন্ধগ্রন্থসমূহ:
-
তেল নুন লকড়ি
-
বীরবলের হালখাতা
-
নানাকথা
-
আমাদের শিক্ষা
-
রায়তের কথা
-
নানাচর্চা
-
আত্মকথা
-
প্রবন্ধসংগ্রহ
গল্পগ্রন্থ:
-
চার ইয়ারী কথা
-
আহুতি
-
নীললোহিত
অন্যদিকে, প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছদ্মনাম ছিল কৃত্তিবাস ভদ্র ও লেখরাজ সামন্ত।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 5 months ago
বাংলা সাহিত্যে 'ভোরের পাখি' বলা হয় কাকে?
Created: 5 months ago
A
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
রাজশেখর বসু
C
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
D
বিহারীলাল চক্রবর্তী
বিহারীলাল চক্রবর্তী
বিহারীলাল চক্রবর্তী আধুনিক বাংলা গীতিকবিতার অন্যতম পথিকৃৎ এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাব্যগুরু হিসেবে বিশেষভাবে পরিচিত।
তিনি বাংলা গীতিকবিতার জনক বলে স্বীকৃত এবং আধুনিক বাংলা গীতিকাব্যের প্রথম ও প্রধান কবি হিসেবে গণ্য হন। রবীন্দ্রনাথ তাকে ভালোবেসে ‘ভোরের পাখি’ আখ্যায় ভূষিত করেছিলেন।
তাঁর প্রথম সার্থক গীতিকবিতা ছিল ‘বঙ্গসুন্দরী’, আর শ্রেষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ‘সারদা মঙ্গল’।
বিহারীলাল চক্রবর্তীর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ:
-
স্বপ্নদর্শন
-
সঙ্গীতশতক
-
বঙ্গসুন্দরী
-
নিসর্গ সন্দর্শন
-
বন্ধু বিয়োগ
-
সারদা মঙ্গল
-
প্রেমপ্রবাহিনী
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 5 months ago