‘পঞ্চতন্ত্র’ হলো সৈয়দ মুজতবা আলী রচিত একটি রম্যরচনা, যা তাঁর ব্যঙ্গ, রসবোধ ও তীক্ষ্ণ ভাষাশৈলীর অসাধারণ নিদর্শন। তিনি বাংলা সাহিত্যে রম্যরচনার এমন এক অনন্য ধারা সৃষ্টি করেছেন, যেখানে রস, বুদ্ধি ও মানবজীবনের তির্যক পর্যবেক্ষণ মিলেমিশে এক উচ্চমানের সাহিত্যরূপ পেয়েছে।
-
‘পঞ্চতন্ত্র’ গ্রন্থটি হাস্যরসাত্মক ও ব্যঙ্গাত্মক প্রবন্ধধর্মী রচনা, যেখানে মানবজীবনের নানান বিচিত্রতা, সমাজের ভণ্ডামি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির অসংগত দিকগুলো রসাত্মক ভাষায় প্রকাশ পেয়েছে।
-
এতে লেখক রসিকতা, বিদ্রূপ ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে সমাজ ও জীবনের গভীর সত্যকে সহজ-সরলভাবে তুলে ধরেছেন।
-
সৈয়দ মুজতবা আলীর রম্যরচনাগুলো কেবল হাস্যরস নয়, বরং পাঠকের চিন্তা-চেতনাকেও নাড়া দেয়।
সৈয়দ মুজতবা আলী (১৯০৪–১৯৭৪):
-
জন্ম: ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯০৪, শ্রীহট্ট (বর্তমান সিলেট) জেলার করিমগঞ্জে।
-
পৈতৃক নিবাস: মৌলভীবাজারের উত্তরসুর গ্রাম।
-
তিনি ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্পকার, রম্যরচয়িতা ও ভাষাবিদ।
-
শিক্ষা: ১৯২৬ সালে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (শান্তিনিকেতন) থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
-
জীবনের বিভিন্ন সময়ে আফগানিস্তান, মিশর, জার্মানি, ভারত ও বাংলাদেশের নানা স্থানে অধ্যাপনা ও সাহিত্যচর্চা করেছেন।
-
তাঁর লেখায় ভ্রমণ, জীবনদর্শন, রসবোধ ও মানবিকতা গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
-
কাজী নজরুল ইসলামের ‘রুবাইয়াৎ-ই-ওমর খৈয়াম’ গ্রন্থের ভূমিকা তিনি রচনা করেছিলেন।
-
মৃত্যু: ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭৪, ঢাকা।
উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্ম:
উপন্যাস:
রম্যরচনা:
ছোটগল্পগ্রন্থ:
সৈয়দ মুজতবা আলী ছিলেন বাংলা রম্যসাহিত্যের এক অসাধারণ প্রতিভা, যিনি তাঁর রচনায় বিদ্রূপ, মানবিকতা ও তীক্ষ্ণ রসবোধের অনন্য সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন। ‘পঞ্চতন্ত্র’ তাঁর সেই সাহিত্যধারারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যেখানে হাস্যরসের আড়ালে লুকিয়ে থাকে গভীর মানবিক উপলব্ধি ও সমাজ-সমালোচনা।