কোনটি ঐতিহাসিক নাটক?
A
শর্মিষ্ঠা
B
রাজসিংহ
C
পলাশীর যুদ্ধ
D
রক্তাক্ত প্রান্তর
উত্তরের বিবরণ
নাটক ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’
-
মুনীর চৌধুরী রচিত ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ নাটকটির ভিত্তি রয়েছে মহাকবি কায়কোবাদের ‘মহাশ্মশান’ গ্রন্থের কাহিনির ওপর।
-
এটি মুনীর চৌধুরীর প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌলিক নাটক।
-
নাটকটি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধ (১৭৬১)কে কেন্দ্র করে তিন অঙ্কে রচিত।
-
‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ একটি ঐতিহাসিক নাটক নয়, বরং ইতিহাস-আশ্রিত নাটক।
-
নাটকের একটি বিখ্যাত উক্তি হলো:
‘মানুষ মরে গেলে পচে যায়। বেঁচে থাকলে বদলায়।’
যা নবাব সুজাউদ্দৌলা বলেন।
উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ:
ইব্রাহিম কার্দি, জোহরা, হিরণবালা ইত্যাদি।
অন্যদিকে,
-
‘পলাশির যুদ্ধ’ নবীনচন্দ্র সেনের একটি ঐতিহাসিক আখ্যান কাব্য।
-
‘শর্মিষ্ঠা’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম সফল নাটক, রচনা করেছেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত।
-
‘রাজসিংহ’ (১৮৮২) বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের একটি উপন্যাস, যা তিনি একমাত্র ঐতিহাসিক উপন্যাস হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মুনীর চৌধুরী সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ:
-
মুনীর চৌধুরী একজন বাংলাদেশি শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী ছিলেন।
-
তিনি ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।
-
শিক্ষা ও কর্মজীবনে তিনি বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মুনীর চৌধুরীর নাটকসমূহ:
মৌলিক নাটক:
-
রক্তাক্ত প্রান্তর
-
চিঠি
-
কবর
-
দণ্ডকারণ্য
অনুবাদ নাটক:
-
কেউ কিছু বলতে পারে না
-
রূপার কৌটা
-
মুখরা রমণী বশীকরণ
উৎস:
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 5 months ago
বাংলা নাটক প্রথম অভিনীত হয় কত সালে?
Created: 2 months ago
A
১৭৯৫ সালে
B
১৭৯০ সালে
C
১৭৯৮ সালে
D
১৮৯৫ সালে
বাংলা নাটকের উৎস ও বিকাশ
-
আঠারো শতকের শেষদিকে নেপালে বাংলা নাটক রচিত ও অভিনীত হয়।
-
তবে বাংলা নাট্যসাহিত্যের ইতিহাসে এসব নাটক কেবল কৌতূহল সৃষ্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, অন্য কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।
-
বাংলা নাটকের প্রথম অভিনয় অনুষ্ঠিত হয় ১৭৯৫ সালে।
-
রুশদেশীয় আগন্তুক হেরাসিম লেবেডফ কলকাতায় প্রথম ‘বেঙ্গল থিয়েটার’ নামে একটি রঙ্গালয় স্থাপন করেন।
-
তিনি The Disguise ও Love is the best Doctor নাটকগুলো বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে এদেশীয় অভিনেতাদের দ্বারা অভিনয় করান।
-
এতে ভারতচন্দ্র রচিত গান সংযোজিত ছিল।
-
১৮৩১ সালে প্রসন্নকুমার ঠাকুর কলকাতায় ‘হিন্দু থিয়েটার’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্রথম বাংলা নাট্যাভিনয়ের উপযোগী রঙ্গমঞ্চ।
-
সেখানে ভারতচন্দ্রের অন্নদামঙ্গল কাব্যের বিদ্যাসুন্দর অংশের নাট্যরূপ* অভিনীত হয়।
-
বাংলা মৌলিক নাটক রচনার সূচনা ঘটে ১৮৫২ সালে।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago
'হাত-হদাই' একটি-
Created: 2 days ago
A
কাব্যগ্রন্থ
B
উলন্যাস
C
গল্পগ্রন্থ
D
নাটক
‘হাত-হদাই’ বাংলা নাট্যসাহিত্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এটি একটি নাটক, যেখানে সমাজ, পরিবার ও মানবজীবনের নানা দিক বাস্তবধর্মী ভাষায় উপস্থাপিত হয়েছে। নাটকটির ভাষা ও সংলাপে গ্রামীণ জীবনের সহজ সরল রূপ ফুটে উঠেছে, যা পাঠক ও দর্শক উভয়ের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
• ‘হাত-হদাই’ নাটকটি রচনা করেছেন প্রখ্যাত নাট্যকার সেলিম আল দীন (১৯৪৯–২০০৮)। তিনি বাংলাদেশের আধুনিক নাট্যধারার অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক ও ‘গণনাট্য’ আন্দোলনের অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত। তাঁর নাটকগুলোতে বাঙালির ঐতিহ্য, লোকজ সংস্কৃতি ও সামাজিক বাস্তবতার সংমিশ্রণ দেখা যায়।
• এই নাটকটি মূলত গ্রামীণ সমাজের জীবনের টানাপোড়েন, কুসংস্কার ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে রচিত। লেখক এতে গ্রামের মানুষের হাসি-কান্না, প্রেম-সংঘাত ও মানসিক টানাপোড়েনকে জীবন্তভাবে উপস্থাপন করেছেন।
• নাটকটির নাম ‘হাত-হদাই’ প্রতীকী অর্থ বহন করে। এখানে ‘হাত’ ও ‘হদাই’ মানুষের পারস্পরিক নির্ভরতা, সহযোগিতা ও দ্বন্দ্বের প্রতিরূপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
• সেলিম আল দীন তাঁর নাটকে দেশজ ভাষা ও লোকধারার শব্দচিত্র ব্যবহার করেছেন, যা তাঁর রচনাকে অন্যদের থেকে আলাদা করেছে। তিনি বাংলা নাটকে ‘দেশীয় ফর্ম’ প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে লোকসংগীত, পালাগান ও আঞ্চলিক ভাষার মিশ্রণ দেখা যায়।
• নাটকটি প্রথম মঞ্চস্থ হয়েছিল ঢাকার নাট্যদল ‘আরন্যক নাট্যদল’-এর মাধ্যমে, যা সেলিম আল দীনেরই প্রতিষ্ঠিত সংগঠন।
• ‘হাত-হদাই’-এর চরিত্রগুলো বাস্তব জীবনের সাধারণ মানুষ থেকে নেওয়া, যেমন কৃষক, গৃহবধূ, দিনমজুর ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। এতে সমাজের শ্রেণি বৈষম্য ও মানবিক টানাপোড়েনের চিত্র ফুটে উঠেছে।
• এই নাটকের মূল উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মানবিক বোধ ও সামাজিক দায়বদ্ধতা জাগ্রত করা। সেলিম আল দীন বিশ্বাস করতেন, নাটক কেবল বিনোদন নয়, সমাজ পরিবর্তনের মাধ্যমও হতে পারে।
• নাটকটির ভাষা, গঠন ও উপস্থাপনায় এমন বাস্তবতা ও অনুভূতি রয়েছে যা দর্শককে সমাজের আয়না দেখতে সাহায্য করে।
অতএব, ‘হাত-হদাই’ একটি নাটক, যা শুধু সাহিত্য নয়, বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজজীবনের গভীর বাস্তবচিত্রও তুলে ধরে। এর মাধ্যমে সেলিম আল দীন বাংলা নাট্যসাহিত্যে এক নতুন মাত্রা যুক্ত করেছেন।
0
Updated: 2 days ago
বাংলা সাহিত্যে প্রথম সার্থক ট্রাজেডি নাটক কোনটি?
Created: 2 months ago
A
কৃষ্ণকুমারী
B
শর্মিষ্ঠা
C
সধবার একাদশী
D
নীলদর্পণ
কৃষ্ণকুমারী নাটক
-
মাইকেল মধুসূদন দত্ত রচিত ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটকটি ১৮৬১ সালে প্রকাশিত হলেও রচনা শুরু হয়েছিল ১৮৬০ সালে।
-
এর কাহিনি সংগৃহীত হয়েছিল উইলিয়াম টডের “রাজস্থান” গ্রন্থ থেকে।
-
এই নাটককে বাংলা সাহিত্যের প্রথম সফল ট্রাজেডি নাটক ধরা হয়।
-
প্রথম মঞ্চস্থ হয় কলকাতার শোভাবাজার থিয়েটারে, ১৮৬৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে।
👉 উল্লেখযোগ্য চরিত্রগুলো হলো—
কৃষ্ণকুমারী, মদনিকা, ভীমসিংহ, জগৎসিংহ ও ধনদাস।
বাংলা সাহিত্যে প্রথমদিকের নাটকের ধারা
-
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক নাটক → শর্মিষ্ঠা (মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
-
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক কমেডি নাটক → পদ্মাবতী (মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
-
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্রাজেডি নাটক → কৃষ্ণকুমারী (মাইকেল মধুসূদন দত্ত)
-
প্রহসন ‘সধবার একাদশী’ → দীনবন্ধু মিত্র
-
নীলদর্পণ (১৮৬০) → দীনবন্ধু মিত্রের প্রথম নাটক (বেনামে প্রকাশিত)।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
-
বাংলা কাব্যসাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক।
-
প্রথম অমিত্রাক্ষর ছন্দের কাব্যগ্রন্থ → তিলোত্তমাসম্ভব (১৮৬০)।
-
তবে প্রথম ব্যবহার করেছিলেন তার পদ্মাবতী নাটকে।
-
বাংলা ভাষায় প্রথম চতুর্দশপদী কবিতা রচনা করেন তিনিই।
-
তাকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যসমূহ—
-
তিলোত্তমাসম্ভব
-
মেঘনাদবধ কাব্য
-
ব্রজাঙ্গনা
-
বীরাঙ্গনা
-
চতুর্দশপদী কবিতাবলী
উৎস:বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 2 months ago