'অনল প্রবাহ' রচনা করেন-
A
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী
B
মোজাম্মেল হক
C
এয়াকুব আলী চৌধুরী
D
মুনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
উত্তরের বিবরণ
‘অনল প্রবাহ’ কাব্যগ্রন্থ:
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী রচিত ‘অনল প্রবাহ’ একটি মুসলিম জাগরণমূলক কাব্যগ্রন্থ, যা প্রকাশিত হয় ১৯০০ সালে। এতে মুসলমানদের অবস্থা ও অধঃপতনের জন্য ইংরেজ শাসকদের প্রতি কবির গভীর ক্ষোভ ও প্রতিবাদ প্রকাশ পেয়েছে। কাব্যের মূল বাণী— “যা চলে গেছে তার জন্য শোক বৃথা, বরং জাতির হৃতগৌরব উদ্ধারের প্রচেষ্টাই মুখ্য”— জাতীয়তাবাদী চেতনার পরিচয় বহন করে।
এই কাব্যে হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভারত ভিক্ষা’ ও ‘ভারত বিলাপ’ কবিতার স্পষ্ট প্রভাব পরিলক্ষিত হয়।
প্রথম সংস্করণে মোট নয়টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত ছিল—
১. অনল-প্রবাহ
২. তুর্যধ্বনি
৩. মূর্ছনা
৪. বীর-পূজা
৫. অভিভাষণ : ছাত্রগণের প্রতি
৬. মরক্কো-সঙ্কটে
৭. আমীর-আগমনে
৮. দীপনা
৯. আমীর-অভ্যর্থনা
১৩১৫ বঙ্গাব্দে (১৯০৮ সালে) বইটির পরিবর্তিত ও পরিবর্ধিত দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হলে ব্রিটিশ সরকার তা বাজেয়াপ্ত করে এবং সিরাজীর নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তিনি তখন ফরাসি অধিকৃত চন্দননগরে আশ্রয় নেন এবং প্রায় আট মাস আত্মগোপনে থাকেন। পরবর্তীতে আত্মসমর্পণ করলে ইংরেজ শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে তাঁকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
সাহিত্যকর্ম:
উপন্যাস:
-
রায়নন্দিনী
-
তারাবাঈ
-
ফিরোজা বেগম
প্রবন্ধ:
-
স্বজাতি প্রেম
-
তুর্কি নারী জীবন
-
স্পেনীয় মুসলমান সভ্যতা
কাব্যগ্রন্থ:
-
অনল প্রবাহ
-
উচ্ছ্বাস
-
উদ্বোধন
-
স্পেন বিজয় কাব্য
ভ্রমণ কাহিনী:
-
তুরস্ক ভ্রমণ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা - ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 5 months ago
'সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
Created: 1 month ago
A
সৈয়দ আলী আহসান
B
সুকান্ত ভট্টাচার্য
C
হুমায়ুন আজাদ
D
নির্মলেন্দু গুণ
সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
-
এটি হুমায়ুন আজাদের রচিত একটি কাব্যগ্রন্থ।
-
গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে।
হুমায়ুন আজাদ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত তথ্য:
-
জন্ম: ২৮ এপ্রিল ১৯৪৭, রাড়িখাল, বিক্রমপুর।
-
পেশা: লেখক ও অধ্যাপক।
-
প্রথম কাব্যগ্রন্থ: অলৌকিক ইস্টিমার (১৯৭৩)।
-
পুরস্কার: বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৬)।
-
মৃত্যু: ১২ আগস্ট ২০০৪।
হুমায়ুন আজাদের কাব্যগ্রন্থসমূহ:
-
অলৌকিক ইস্টিমার
-
জ্বলো চিতাবাঘ
-
সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
-
যতোই গভীরে যাই মধু, যতোই উপরে যাই নীল
-
আমি বেঁচেছিলাম অন্যদের সময়ে
-
কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 1 month ago
'ভ্রান্তিবিলাস' করা লেখা?
Created: 1 day ago
A
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
B
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রাসাগর
C
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
D
প্রমথ চৌধুরী
উত্তর: খ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রাসাগর
এই উত্তরটি সঠিক কারণ 'ভ্রান্তিবিলাস' রচনার মূল লেখক ছিলেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রাসাগর, যিনি বাংলা সাহিত্য ও শিক্ষাক্ষেত্রে একজন প্রখ্যাত সংস্কারক ও লেখক। তিনি ১৯শ শতাব্দীর সামাজিক ও শিক্ষাগত পরিবর্তনের সাথে মিলিয়ে বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। 'ভ্রান্তিবিলাস' তাঁর সাহিত্যকর্মের মধ্যে একটি, যা সমাজের রীতি-নীতি, মানুষের আচরণ ও দৈনন্দিন জীবনের ভ্রান্তি বা ভুলের হাস্যরসাত্মক চিত্র তুলে ধরে।
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রাসাগরের জীবন ও সাহিত্য সম্পর্কে কিছু মূল তথ্য:
-
শিক্ষা সংস্কারক: তিনি শুধু সাহিত্যিকই ছিলেন না, বরং বাংলা ভাষার শিক্ষাকে সহজ ও সমৃদ্ধ করার কাজে মনোনিবেশ করেছিলেন। পাঠ্যপুস্তক, ব্যাকরণ, প্রবন্ধসহ বিভিন্ন রচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য বাংলা ভাষা সহজ ও বোধগম্য করেছিলেন।
-
সামাজিক চেতনা: তাঁর রচনাগুলোতে সামাজিক বিষয়, বিশেষ করে সমাজের ভ্রান্ত ধারণা ও অনাচার নিয়ে রচনা করা হয়েছে। 'ভ্রান্তিবিলাস'-এ এই ভ্রান্তি ও মানুষের অজান্তে করা ভুলের উপস্থাপনা করা হয়েছে হাস্যরসের মাধ্যমে, যা পাঠককে মনোরঞ্জনসহ শিক্ষণীয় বার্তা দেয়।
-
ভাষার সরলতা: বিদ্রাসাগর সাহিত্যিকদের মধ্যে প্রখ্যাত ছিলেন ভাষার সরল ও স্পষ্ট ব্যবহার করার জন্য। তিনি এমনভাবে সাহিত্য রচনা করতেন যাতে সাধারণ মানুষও সহজে তা বুঝতে পারে।
-
সমকালীন প্রভাব: ১৯শ শতাব্দীর সমাজে তার সাহিত্য ও শিক্ষা কার্যক্রম মানুষের চিন্তা-চেতনায় প্রভাব ফেলে। সামাজিক সংস্কার, শিক্ষার প্রসার ও নৈতিক শিক্ষার প্রচার তাঁর রচনার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
-
সাহিত্য ও প্রবন্ধ: 'ভ্রান্তিবিলাস' ছাড়াও তিনি বাংলা সাহিত্যে নানা প্রবন্ধ, উপন্যাস ও শিক্ষাসামগ্রী রচনা করেছেন, যা সমকালীন পাঠকদের জন্য শিক্ষণীয় ও বিনোদনমূলক।
সংক্ষেপে বলা যায়, 'ভ্রান্তিবিলাস' রচনার মাধ্যমে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রাসাগর সমাজের ভ্রান্ত ধারণা, মানুষের দৈনন্দিন ভুল এবং সামাজিক রীতি-নীতি নিয়ে হাস্যরসাত্মক চিত্রায়ণ করেছেন। তাঁর এই সাহিত্যকর্ম শুধু বিনোদনই প্রদান করেনি, বরং পাঠককে ভাবিয়ে দেখিয়েছে মানুষের ভুল থেকে শিক্ষণীয় শিক্ষা গ্রহণের গুরুত্ব।
অতএব, প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো খ) ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্রাসাগর, কারণ তিনি এই রচনার লেখক এবং বাংলা সাহিত্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অমুল্য।
0
Updated: 1 day ago
'উত্তম পুরুষ' উপন্যাসের রচয়িতা কে?
Created: 3 months ago
A
শওকত ওসমান
B
জহির রায়হান
C
শহীদুল্লাহ কায়সার
D
রশীদ করীম
▣ উত্তম পুরুষ (উপন্যাস পরিচিতি)
রশীদ করীম প্রণীত ‘উত্তম পুরুষ’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। এই সাহিত্যকর্মে লেখক আধুনিক মনন ও সংবেদনশীলতার এক অনন্য চিত্র উপস্থাপন করেছেন।
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র শাকেরকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে এক জটিল সম্পর্কজালের, যেখানে অণিমা, সেলিনা, মুশতাক, শেখর, সলিল, চন্দ্রা, শিশির, নিহার ভাবি প্রমুখ চরিত্র যুক্ত হয়ে তৈরি করেছে এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক আবহ। লেখক যে পরিশীলিত ভাষা ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে উপন্যাসকে নির্মাণ করেছেন, তা পাঠকের সাহিত্যপিপাসা মেটাতে সক্ষম।
চরিত্রগুলোর মধ্যে জটিল মানসিক দ্বন্দ্ব এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন অনেক সময় পাঠকের মনে এক শ্বাসরুদ্ধকর অনুভূতির সৃষ্টি করে।
▣ রশীদ করীম: সংক্ষিপ্ত জীবনী
রশীদ করীম জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৫ সালের ১৪ আগস্ট, কলকাতায়। বাংলা কথাসাহিত্যে অনন্য অবদান রাখার জন্য তিনি বহু সম্মানে ভূষিত হন। তাঁর প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭২), একুশে পদক (১৯৮৪), লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯১) এবং জনকণ্ঠ পুরস্কার (২০০১)। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনের অবসান ঘটে ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর, তাঁর প্রয়াণের মাধ্যমে।
▣ রচনাসম্ভার
উপন্যাস:
-
উত্তম পুরুষ
-
প্রসন্ন পাষাণ
-
আমার যত গ্লানি
-
সোনার পাথরবাটি
-
বড়ই নিঃসঙ্গ
-
লান্সবাক্স
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
আর এক দৃষ্টিকোণ
-
মনের গহীনে তোমার মূর্তিখানি
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago