ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য কোন কাব্যের উপজীব্য?
A
জিঞ্জির-কাজী নজরুল ইসলাম
B
সাত সাগরের মাঝি-ফররুখ আহমদ
C
দিলরুবা-আবদুল কাদির
D
নূরনামা-আবদুল হাকিম
উত্তরের বিবরণ
কাব্যগ্রন্থ: সাত সাগরের মাঝি
-
রচয়িতা: ফররুখ আহমদ
-
প্রকাশকাল: ১৯৪৪
-
প্রকৃতি: মুসলিম জাগরণমূলক কাব্যগ্রন্থ
-
মূল উপজীব্য: ইসলামের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুসলিম উম্মাহর জাগরণ
-
কবিতার সংখ্যা: ১৯টি
-
অন্তর্ভুক্ত উল্লেখযোগ্য কবিতা:
-
সাত সাগরের মাঝি (গ্রন্থের শেষ কবিতা)
-
সিন্দাবাদ
-
পাঞ্জেরি
-
লাশ
-
আউলাদ
-
দরিয়ার শেষরাত্রি
-
-
বৈশিষ্ট্য:
-
আরব্য উপন্যাস, ইরান-আরবের সংস্কৃতি ও পুরাণকথা ব্যবহৃত হয়েছে।
-
বঙ্গীয় শব্দ ও অনুষঙ্গ পরিহার করে মুসলিম চেতনার রূপায়ণ ঘটানো হয়েছে।
-
কবি পরিচিতি: ফররুখ আহমদ
-
জন্ম: ১০ জুন ১৯১৮, মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মাঝাইল গ্রামে।
-
পরিচিতি: মুসলিম পুনর্জাগরণবাদী কবি
-
খ্যাতি অর্জন:
-
লাশ কবিতার মাধ্যমে (১৯৪৪ সালের কলকাতার দুর্ভিক্ষের প্রেক্ষাপটে রচিত)
-
-
পুরস্কার:
-
আদমজী পুরস্কার (১৯৬৬) – কাহিনী কাব্য হাতেমতায়ী এর জন্য
-
ইউনেস্কো পুরস্কার (১৯৬৬) – শিশুতোষ কাব্য পাখির বাসা এর জন্য
-
ফররুখ আহমদের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ:
-
সাত সাগরের মাঝি
-
সিরাজাম মুনীরা
-
নৌফেল ও হাতেম
-
মুহূর্তের কবিতা
-
সিন্দাবাদ
-
হাতেমতায়ী
-
নতুন লেখা
-
হাবেদা মরুরকাহিনী
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা — ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 5 months ago
বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য সংকলন 'চর্যাপদ' -এর আবিষ্কারক-
Created: 4 months ago
A
ডক্টর মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ
B
ডক্টর সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
C
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
D
ডক্টর সুকুমার সেন
চর্যাপদ বাংলা ভাষার সর্বপ্রথম কাব্যগ্রন্থ হিসেবে পরিচিত। এটি কেবল বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন নয়, বরং এটি গানের সংকলন হিসেবেও বিবেচিত হয়। চর্যাপদের ভাষা প্রাচীন, রূপান্তরমান (আর্ন্ধবঙ্গীয় প্রাকৃতঘেঁষা) এবং এর মূল উপজীব্য ছিল বৌদ্ধ সহজিয়া সাধনার দার্শনিক ও গূঢ় ভাবধারা।
আবিষ্কার ও গুরুত্ব
১৯০৭ সালে বিশিষ্ট পণ্ডিত ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপালের রাজ দরবার লাইব্রেরি থেকে চর্যাপদের পাণ্ডুলিপি আবিষ্কার করেন।
-
এই পাণ্ডুলিপি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করে।
পদকর্তা ও সংখ্যা
চর্যাপদে বৌদ্ধ সহজিয়াগণ বিভিন্ন গূঢ় তত্ত্ব তুলে ধরেছেন কবিতার মাধ্যমে।
-
ড. সুকুমার সেন তাঁর ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস (প্রথম খণ্ড)’ গ্রন্থে ২৪ জন পদকর্তার নাম উল্লেখ করেছেন। তবে তাঁর মতে চর্যাপদের মোট পদ সংখ্যা ৫১টি, যদিও তিনি নিজের রচিত ‘চর্যাগীতি পদাবলী’ গ্রন্থে ৫০টি পদের উল্লেখ করেন এবং আলোচনা অংশে মুনিদত্তের ৫০টি ব্যাখ্যার কথাও বলেন।
-
অপরদিকে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর সম্পাদিত ‘Buddhist Mystic Songs’ গ্রন্থে ২৩ জন কবির নাম এবং ৫০টি পদের কথা উল্লেখ করেন।
অনুবাদ ও ব্যাখ্যা
চর্যাপদের তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেন কীর্তিচন্দ্র।
-
১৯৩৮ সালে প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন।
-
সংস্কৃত ভাষায় চর্যাপদের ব্যাখ্যা করেন মুনিদত্ত। তবে তিনি ১১ নম্বর পদের ব্যাখ্যা করেননি।
চর্যাপদ কেবল বাংলা ভাষার শুরুর ধাপেই একটি সাহিত্যিক চিহ্ন নয়, এটি বাঙালির আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক ঐতিহ্যের প্রাচীন প্রমাণও বটে। বৌদ্ধ সহজিয়া সাধনার গভীর অন্তর্দৃষ্টি এই পদগুলোর মধ্যে দিয়ে প্রতিফলিত হয়েছে, যা বাংলা সাহিত্যের গর্ব ও ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – মাহবুবুল আলম
-
বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 4 months ago
মধ্যযুগের কোন কবির কাব্যকে 'রাজকণ্ঠের মণিমালা' বলে অভিহিত করা হয়েছে?
Created: 1 month ago
A
চণ্ডীদাস
B
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
C
গোবিন্দদাস
D
বিদ্যাপতি
বিদ্যাপতি
-
পরিচয়: বিদ্যাপতি ছিলেন বৈষ্ণব কবি এবং পদসঙ্গীত ধারার রূপকার। বাঙালী না হলেও বাংলা সাহিত্যে তার অবদান গুরুত্বপূর্ণ।
-
ভাষা ও রচনা:
-
মাতৃভাষা মৈথিলি ছাড়াও সংস্কৃত, অবহট ও ব্রজবুলিতে পদাবলি রচনা করেছেন।
-
শৈব বংশের হওয়ায় তিনি বহু শৈবসঙ্গীতও রচনা করেছেন।
-
-
উপাধি: মৈথিল কোকিল, অভিনব জয়দেব, নব কবিশেখর, কবিরঞ্জন, কবিকণ্ঠহার, পণ্ডিত ঠাকুর, সদুপাধ্যায়, রাজপণ্ডিত ইত্যাদি।
-
সৃজনশীল অবদান:
-
ব্রজবুলিতে রাধাকৃষ্ণ বিষয়ক পদাবলি তার শ্রেষ্ঠ কীর্তি।
-
বিদ্যাপতি সহস্রাধিক পদাবলি রচনা করেছেন। রাধাকৃষ্ণের উল্লেখ রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক পদে।
-
অন্যান্য পদগুলিও প্রেমলীলা বিষয়ক হিসাবে গ্রহণযোগ্য।
-
-
কাব্য ও কাব্যসমালোচকের মন্তব্য:
-
মিথিলার রাজসভায় বিদ্যাপতি সংস্কৃত ও প্রাকৃত ভাষার ভাব, শব্দ, ছন্দ ও অলঙ্কারের রত্নরাজি ব্যবহার করে রাধার প্রেম বর্ণনা করেছেন।
-
বঙ্কিমচট্টোপাধ্যায়: “বিদ্যাপতির কবিতা স্বর্ণহার, বিদ্যাপতির গান মুরজবীণাসঙ্গিনী স্ত্রীকণ্ঠগীতি।”
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: বিদ্যাপতির কাব্যকে “রাজকণ্ঠের মণিমালা” বলে অভিহিত করেছেন।
-
0
Updated: 1 month ago
আলাওলের 'তোহফা' কোন ধরনের কাব্য?
Created: 2 months ago
A
আত্মজীবনী
B
প্রণয়কাব্য
C
নীতিকাব্য
D
জঙ্গনামা
তোহফা কাব্য
-
‘তোহফা’ কবি আলাওলের পঞ্চম কাব্য। এটি মূলত বিখ্যাত সুফী সাধক শেখ ইউসুফ গদা দেহলভীর ফারসি গ্রন্থ ‘তোহফাতুন নেসায়েহ্’-এর বাংলা অনুবাদ।
-
আলাওল এই কাব্য ১৬৬৪ সালে রচনা সম্পন্ন করেন। সেই সময় নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে বলেন, তিনি ছিলেন দুর্ভাগ্যপীড়িত ও বৃদ্ধ।
-
কাব্যটি ধর্মীয় জ্ঞান ও নৈতিক উপদেশে পরিপূর্ণ। এটি আরাকানের শ্রীমন্ত সোলেমানের আদেশে রচিত হয়েছিল।
-
যদিও এটি কাব্যরূপে লেখা, মূলত এতে ধর্মীয় নীতিকথাই প্রকাশ পেয়েছে।
-
এই কাব্য ৪৫টি অধ্যায়ে বিভক্ত। এতে মুসলমানদের ধর্মীয় আচার-আচরণ, করণীয় ও সামাজিক জীবনযাত্রা বিষয়ে আলোচনা রয়েছে।
-
তৌহিদ, ঈমান, জ্ঞান, শরিয়ত, এবাদত, বিবাহ প্রভৃতি বিষয় পয়ার ছন্দে উপস্থাপন করে কবি আলাওল এটিকে মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ধর্মগ্রন্থ হিসেবে মর্যাদা দেন।
কবি আলাওল
-
আলাওল ছিলেন ১৭শ শতকের একজন বিখ্যাত মুসলিম কবি এবং আরাকান রাজসভার প্রধান কবি।
-
তিনি প্রথম জীবনে আরাকান রাজা উমাদারের দেহরক্ষী অশ্বারোহী হিসেবে কাজ করতেন।
-
তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ঠ কাব্য ‘পদ্মাবতী’, যা তিনি মাগন ঠাকুরের উৎসাহে লেখেন। এটি মালিক মুহম্মদ জায়সির হিন্দি কাব্য ‘পদুমাবৎ’-এর অনুবাদ।
আলাওলের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ
-
পদ্মাবতী
-
সিকান্দার নামা
-
তোহফা
-
সপ্তপয়কর
-
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল
-
রাগতালনামা
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – ড. মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago