'ললিতা তথা মানস' কাব্যগ্রন্থটি রচনা করেন কে?
A
সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত
B
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
C
জীবনানন্দ দাশ
D
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
উত্তরের বিবরণ
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
-
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালে চব্বিশ পরগনা জেলার কাঁঠালপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তিনি ছিলেন ঔপন্যাসিক, সাংবাদিক এবং বাংলার নবজাগরণের অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব। তাঁকে বাংলা উপন্যাসের জনক বলা হয়।
-
তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ হলো ‘ললিতা তথা মানস’ (১৮৫৬)।
-
তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘রাজমোহন’স ওয়াইফ’, যা ইংরেজি ভাষায় রচিত।
-
বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃত তাঁর রচনা ‘দুর্গেশনন্দিনী’ (১৮৬৫)।
-
তাঁর উল্লেখযোগ্য তিনটি উপন্যাস হলো— আনন্দমঠ, দেবী চৌধুরানী ও সীতারাম; যা বঙ্কিমচন্দ্রের উপন্যাস-ত্রয়ী হিসেবে পরিচিত।
-
তিনি ১৮৯৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 1 month ago
বিধবার প্রেম নিয়ে রচিত উপন্যাস কোনটি?
Created: 1 month ago
A
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘শেষ প্রশ্ন’
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘চোখের বালি’
C
কাজী নজরুল ইসলামের ‘কুহেলিকা’
D
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ‘কপালকুণ্ডলা’
চোখের বালি (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর)
-
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘চোখের বালি’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস।
-
এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০৩ সালে।
-
এই রচনার মাধ্যমে রবীন্দ্রনাথ বাংলা উপন্যাসকে এক নতুন ধারায় নিয়ে আসেন।
-
তিনি এখানে কাহিনির ভার কমিয়ে চরিত্রের মনের দ্বন্দ্ব, আশা-আকাঙ্ক্ষা ও সংকটকে মূল বিষয় হিসেবে ব্যবহার করেন।
-
প্রধান চরিত্র বিনোদিনী ছিলেন এক বিধবা; তার প্রেম, দুঃখ, প্রত্যাশা কাহিনিকে সামনে এগিয়ে নেয়।
-
আশালতা ছিলেন মহেন্দ্রর স্ত্রী ও পতিব্রতা নারী। কিন্তু মহেন্দ্র স্ত্রীকে উপেক্ষা করে বিধবা বিনোদিনীর প্রতি আকৃষ্ট হন।
প্রধান চরিত্র: বিনোদিনী, মহেন্দ্র, আশালতা, বিহারী, রাজলক্ষ্মী প্রমুখ।
শেষ প্রশ্ন (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
-
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘শেষ প্রশ্ন’ উপন্যাসে তিনি বিশ শতকের প্রথম ভাগের শিক্ষিত মধ্যবিত্ত সমাজকে চিত্রিত করেছেন।
-
মানুষের রূপান্তরশীল জীবন, সমাজ ও মানসিকতার পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের কাহিনি গড়ে ওঠে।
কুহেলিকা (কাজী নজরুল ইসলাম)
-
কাজী নজরুল ইসলামের রাজনৈতিক উপন্যাস ‘কুহেলিকা’ প্রথম প্রকাশিত হয় ১৩৪১ বঙ্গাব্দে (১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দে) ‘নওরোজ’ পত্রিকায়।
-
এটি একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটভিত্তিক উপন্যাস, যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামের ইঙ্গিত ও সমাজচিত্র এক বৃহৎ ক্যানভাসে ফুটে উঠেছে।
-
উপন্যাসের নায়ক জাহাঙ্গীর।
-
বিখ্যাত উক্তি: “ইহারা মায়াবিনীর জাত, ইহারা সকল কল্যাণের পথে মায়াজাল পাতিয়া রাখিয়াছে।”
চরিত্র: কুহেলিকা, তাহমিনা, ফিরদৌস বেগম ইত্যাদি।
কপালকুণ্ডলা (বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)
-
‘কপালকুণ্ডলা’ (১৮৬৬) বঙ্কিমচন্দ্রের দ্বিতীয় উপন্যাস।
-
এটি একদিকে রোমান্টিক, অন্যদিকে সমাজ ও সংস্কারের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরে।
-
গল্পের কেন্দ্রে আছে বনবাসিনী কপালকুণ্ডলা এবং নবকুমারের বিবাহ ও সমাজসংঘাত।
-
উপন্যাসে প্রকৃতির সৌন্দর্য, রহস্য এবং চরিত্রের ট্র্যাজিক পরিণতি একে বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে।
-
নায়িকা কপালকুণ্ডলার সংলাপ “পথিক তুমি পথ হারাইয়াছ?” – বাংলা সাহিত্যের প্রথম রোমান্টিক সংলাপ হিসেবে খ্যাত।
-
লেখকের জীবদ্দশায় এর আটটি সংস্করণ প্রকাশিত হয় এবং এটি অনেকের মতে বঙ্কিমচন্দ্রের শ্রেষ্ঠ উপন্যাস।
চরিত্র: কপালকুণ্ডলা, নবকুমার, কাপালিক ইত্যাদি।
উৎস: বাংলাপিডিয়া এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 1 month ago
'বিষাদ-সিন্ধু' কার রচনা?
Created: 3 months ago
A
কায়কোবাদ
B
মীর মশাররফ হোসেন
C
মোজাম্মেল হক
D
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
বিষাদ-সিন্ধু’ (১৮৮৫–১৮৯১) হলো বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস আশ্রিত এক অনন্য উপন্যাস, যা লেখক মীর মশাররফ হোসেনকে অসামান্য খ্যাতির আসনে অধিষ্ঠিত করে। কারবালার মর্মান্তিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এই উপন্যাসে হাসান ও হোসেনের শাহাদাতের করুণ কাহিনি, দামেস্ক শাসক মাবিয়ার পুত্র এজিদের রক্তপিপাসু চরিত্র এবং জয়নাবের রূপে মোহিত হয়ে বহু মানুষের ধ্বংসযজ্ঞ—সবকিছু মিলিয়ে এটি হয়ে উঠেছে ধর্ম, ইতিহাস ও মানবিক আবেগের এক বিস্ময়কর মহাগাঁথা।
তবে ইতিহাসের প্রতি অন্ধ আনুগত্য নয়, বরং তা থেকে শিল্পসাহিত্যের উপযোগী বেছে নেওয়া কৌশল এই উপন্যাসকে করেছে স্বকীয়। গ্রন্থটি তিনটি পর্বে বিভক্ত:
-
মহরম পর্ব্ব (১৮৮৫)
-
উদ্ধার পর্ব্ব (১৮৮৭)
-
এজিদ-বধ পর্ব্ব (১৮৯১)
এই তিনটি পর্বে রয়েছে মোট ৬৩টি 'প্রবাহ' বা অধ্যায়—যার মধ্যে মহরম পর্বে ২৬টি প্রবাহসহ উপক্রমণিকা, উদ্ধার পর্বে ৩০টি প্রবাহ, এবং এজিদ-বধ পর্বে ৫টি প্রবাহ ও উপসংহার অংশ রয়েছে।
এই উপন্যাসের জনপ্রিয়তার পেছনে মূলত দুটি প্রধান কারণ:
-
ইসলাম ধর্মঘটিত স্পর্শকাতর কাহিনি, যা মুসলিম পাঠকের হৃদয়ে গভীর আবেদন সৃষ্টি করে।
-
সাহিত্যিক গুণ ও শৈলী, যা জ্ঞানপিপাসু ও রসিক পাঠকের কাছে এটিকে একটি শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্মে পরিণত করেছে।
এখানে মাইকেল মধুসূদনের ‘মেঘনাদবধ কাব্য’ থেকে অনুপ্রাণিত অ্যান্টি-এস্টাব্লিশমেন্ট চেতনার প্রতিফলনও লক্ষণীয়।
মীর মশাররফ হোসেন: পথিকৃৎ মুসলিম সাহিত্যিক
মীর মশাররফ হোসেন জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর ১৮৪৭ সালে, কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়া গ্রামে। তিনি ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক—বাংলা গদ্যসাহিত্যের বঙ্কিমযুগের একজন গুরুত্বপূর্ণ লেখক এবং মুসলিম সমাজে সাহিত্যজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত।
ছাত্রজীবনেই ‘সংবাদ প্রভাকর’ ও ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’য় সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করে তিনি লেখালেখির সূচনা করেন। তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন ‘গ্রামবার্তা’র সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ।
তিনি ‘গাজী মিয়াঁ’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন। সম্পাদনা করেছেন দুটি পত্রিকা—‘আজিজননেহার’ ও ‘হিতকরী’।
প্রথম রচনা:
-
‘রত্নবতী’ (১৮৬৯): এটি বাংলা ভাষায় কোনো মুসলিম লেখকের প্রথম গদ্যগ্রন্থ।
🎭 নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমিদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
গো-জীবন
এইভাবে মীর মশাররফ হোসেন তাঁর সাহিত্যসাধনায় যেমন ধর্ম ও ইতিহাসকে সৃজনশীল রূপে প্রকাশ করেছেন, তেমনি বাংলা গদ্যসাহিত্যের উন্নয়নে রেখেছেন অমোচনীয় অবদান।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 3 months ago
'লালসালু' উপন্যাসে কোন চরিত্রটি নারী প্রতিবাদের প্রতীক?
Created: 2 weeks ago
A
আমেনা
B
জমিলা
C
ফাতেমা
D
রহিমা
লালসালু সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ রচিত একটি প্রখ্যাত উপন্যাস, যা ১৯৪৮ সালে কলকাতা থেকে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। উপন্যাসটি বাংলার গ্রামজীবনের বাস্তবতা, সৌন্দর্য, মাধুর্য ও কঠোরতা চিত্রায়ন করে এবং অসংখ্য গ্রামীণ মানুষের জীবনকে ফুটিয়ে তোলে। নোয়াখালি অঞ্চলের মজিদ নামের একটি কূটচরিত্র গারোপাহাড়ি অঞ্চলে গিয়ে ধর্মের নামে স্থানীয় মানুষকে কীভাবে শোষণ করে, সেই ঘটনা উপন্যাসে উল্লিখিত।
উপন্যাসের মূল বিষয় ধর্মব্যবসায়ীদের স্বরূপ উন্মোচন এবং নারী জাগরণের প্রেক্ষাপটে সমাজচেতনা। স্বল্পবয়সী স্ত্রী জমিলা মজিদের শোষণ প্রতিহত করে, উপন্যাসে তিনি বিদ্রোহিণী ও প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত।
-
উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ:
-
মজিদ
-
খালেক ব্যাপারি
-
জমিলা
-
রহিমা
-
আমেনা
-
আক্কাস
-
তাহেরের বাপ
-
হাসুনির মা
-
-
উক্তি: উপন্যাসে ধর্মব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে, "খোদার এলেমে বুক ভরে না তলায় পেট শূন্য বলে।"
-
অনুবাদ ও খ্যাতি:
-
ইংরেজিতে Tree Without Roots (১৯৬৭) নামে অনূদিত হয়েছে
-
ফরাসি ভাষায় অনূদিত হয়েছে, নাম Le Arbre Sans Maîme (১৯৬১)
-
ফরাসি অনুবাদ করেছেন সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর পত্নী অ্যান মেরি
-

0
Updated: 2 weeks ago