"প্রাণের বান্ধব রে বুড়ি হইলাম তোর কারণে।" - গানটির গীতিকার কে?
A
শাহ আবদুল করিম
B
রাধারমন
C
শেখ ওয়াহিদ
D
কুদ্দুস বয়াতি
উত্তরের বিবরণ
“পরানের বান্ধবরে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে”—এই জনপ্রিয় গানটির গীতিকার হলেন লোককবি শেখ ওয়াহিদুর রহমান। গানটি গেয়েছেন সুফিয়া কাঙালিনী।
শেখ ওয়াহিদুর রহমান (জন্ম: ১৯৩৯) মূলত সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার এক নির্জন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সেখানেই তাঁর শৈশব ও কৈশোর কেটেছে। ফলে তাঁর গানে গ্রামীণ মাটি, প্রকৃতি, সংস্কৃতি ও আঞ্চলিক স্বাদ সবসময়ই পাওয়া যায়।
তিনি যদিও খুব পরিচিত নাম নন, তবে তাঁর অনেক গান আমরা শুনি—কিন্তু গীতিকারের নাম উল্লেখ না থাকায় সাধারণ মানুষ তাঁকে চিনতে পারে না। এজন্য অনেক ক্ষেত্রে গানগুলোকে “অজ্ঞাত গীতিকার” হিসেবে ধরা হয়। অথচ শেখ ওয়াহিদ এই লোকগানের জগতে যথেষ্ট পরিচিত ও সম্মানিত।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে মজার ছলে “দুষ্ট ছেলে” নামে ডাকতেন।
তিনি সহজ-সরল ভাষায় গান লিখে ‘বাউল কবি’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তাঁর গানে বৈচিত্র্য অনন্য—পল্লিগীতি, ভাটিয়ালি, গণসঙ্গীত, মরমি ও আধ্যাত্মিক ধারা ছাড়াও শাক্ত পদাবলি লিখেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু গান হলো:
-
আমার মাটির গাছে লাউ ধইরাছে
-
অপূর্ব তটিনী ওগো
-
অমৃত কূপের সুধা খেলে
-
অলি দরবেশ কারে বলে
-
আল-আরাবি নাবীজি আমার
-
আদমকে বানাইয়া খোদা
এছাড়াও তিনি বহু বিয়ের গানও রচনা করেছেন। যেমন—
-
মেনদি বাটো তোমরা সখি
-
মিতু আসবে নওশা সেজে
-
আজ ঝিলমিল ঝিলমিল
-
পালকি চড়ে যাইগো ভাবি
-
বিয়াই মজলিসে দেখবে
-
সখীরা সব সাজাও কন্যা
তাঁর গান শুনলেই বোঝা যায়—শেখ ওয়াহিদ লোকবাংলার সাধারণ মানুষের প্রতিনিধি।
উৎস: ‘শেখ ওয়াহিদ গীতি সমগ্র’ – শেখ ওয়াহিদুর রহমান

0
Updated: 1 month ago
বাংলা আদি অধিবাসীগণ কোন ভাষাভাষী ছিলেন?
Created: 1 month ago
A
বাংলা
B
সংস্কৃত
C
হিন্দি
D
অস্ট্রিক
বাংলা ভাষা ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষা-গোষ্ঠীর অন্তর্গত এবং নব্য-ভারতীয় আর্য ভাষা থেকে উদ্ভূত। এটি ইন্দো-ইউরোপীয় ভাষাগোষ্ঠীর শতম শাখা থেকে এসেছে। বাংলার আদি জনগোষ্ঠী মূলত অস্ট্রিক ভাষাভাষী ছিল।
ভারতীয় উপমহাদেশের আঞ্চলিক ভাষাগুলোর প্রাথমিক উৎস অ-আর্য ভাষা। আর্যদের ভাষাকে বৈদিক ভাষা বলা হতো এবং বেদের ভাষাকেও বৈদিক ভাষা বলা হয়। বৈদিক ভাষার সংস্কারজাত নতুন ভাষা হল সংস্কৃত, যার শব্দ হিসেবে উল্লেখ প্রথম পাওয়া যায় মহাকাব্য রামায়ণে।
বাংলার নিকটতম আত্মীয় ভাষা হলো অহমিয়া ও ওড়িয়া। ধ্রুপদী ভাষা ও পালির সঙ্গে বাংলার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক লক্ষ্য করা যায়। ভাষা উৎপত্তি বিষয়ে গবেষকদের মধ্যে দুইটি প্রধান মতামত বিদ্যমান:
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ: বাংলা এসেছে গৌড়ি প্রাকৃত থেকে, যা গৌড়ি অপভ্রংশ হয়ে বঙ্গ-কামরুপির মাধ্যমে বাংলা ভাষায় রূপান্তরিত হয়েছে।
-
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়: বাংলা এসেছে মাগধী প্রাকৃত থেকে, যা মাগধী অপভ্রংশ হয়ে বাংলা ভাষায় এসেছে।
ভাষা গবেষকরা সাধারণত ড. শহীদুল্লাহর মতামতকে অধিক গ্রহণযোগ্য মনে করেন এবং অন্যান্য পণ্ডিতগণও এই মতকে প্রাধান্য দিয়েছেন। বাংলার ইতিহাসকে তিনটি ঐতিহাসিক পর্যায়ে ভাগ করা হয়:
-
প্রাচীন বাংলা: ৯০০/১০০০–১৩৫০ খ্রিস্টাব্দ, যার প্রধান লিখিত নিদর্শন চর্যাগীতি।
-
মধ্য বাংলা: ১৩৫০–১৮০০ খ্রিস্টাব্দ।
-
আধুনিক বাংলা: ১৮০০-এর পরবর্তী সময়।

0
Updated: 1 month ago
নিচের কোনটি যৌগিক কালের উদাহরণ নয়?
Created: 1 month ago
A
করছিলাম
B
করেছি
C
করছি
D
করব
যৌগিক কালের উদাহরণ নয়: করব
যৌগিক কাল হল সেই ধরণের ক্রিয়ার কাল, যা একাধিক ধাতুর সমন্বয়ে গঠিত।
-
যৌগিক কালের ক্রিয়া গঠনের জন্য মূল ধাতুর সাথে ‘ইয়া’ বা ‘ইতে’ প্রত্যয় যোগ করা হয় এবং সহায়ক ধাতু যেমন ‘√আছ্’, ‘√থাক্’ প্রয়োগ করা হয়।
-
বাংলায় ঘটমান এবং পুরাঘটিত কালগুলো যৌগিক কালের উদাহরণ। অর্থাৎ,
-
পুরাঘটিত বর্তমান
-
ঘটমান বর্তমান
-
পুরাঘটিত অতীত
-
ঘটমান অতীত
-
পুরাঘটিত ভবিষ্যৎ
-
ঘটমান ভবিষ্যৎ
-
উদাহরণ
-
করছিলাম → ঘটমান অতীত (যৌগিক)
-
করছি → ঘটমান বর্তমান (যৌগিক)
-
করেছি → পুরাঘটিত অতীত (যৌগিক)
-
করব → সাধারণ ভবিষ্যৎ (সরল কাল, যৌগিক নয়)
উৎস: ভাষা-শিক্ষা, ড. হায়াৎ মামুদ

0
Updated: 1 month ago
'সবুজপত্র' প্রকাশিত হয় কোন সালে?
Created: 1 month ago
A
১৯০৯
B
১৯১০
C
১৯১৪
D
১৯২১
সবুজপত্র পত্রিকা
বাংলা সাহিত্যে চলিত গদ্যরীতি প্রথম প্রবর্তন করেন প্রমথ চৌধুরী। তিনি ১৯১৪ সালে (বৈশাখ ১৩২১ বঙ্গাব্দ) মাসিক ‘সবুজপত্র’ পত্রিকা প্রকাশ শুরু করেন, যা প্রায় ১৩ বছর ধরে প্রকাশিত হয়েছিল। এই পত্রিকার মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যে চলিত রীতি প্রতিষ্ঠা পায়।
প্রমথ চৌধুরী
-
বাংলা ভাষার সাধু ও চলিত রূপ নিয়ে প্রথম তুলনামূলক আলোচনা করেন প্রমথ চৌধুরী।
-
তিনি ছিলেন চলিত গদ্যের প্রবর্তক ও একাধারে বিদ্রূপাত্মক প্রাবন্ধিক।
-
তাঁর ছদ্মনাম ছিল ‘বীরবল’।
-
১৯০২ সালে ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত ‘বীরবলের হালখাতা’ নামক প্রবন্ধে প্রথম তিনি চলিত রীতির ব্যবহার করেন।
-
বাংলা কাব্যে তিনিই প্রথম ইতালীয় সনেট রূপ প্রবর্তন করেন।
-
তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘সবুজপত্র’ (১৯১৪) বাংলা গদ্যে এক নতুন যুগের সূচনা করে।
প্রবন্ধগ্রন্থসমূহ
-
নানা কথা
-
আমাদের শিক্ষা
-
রায়তের কথা
-
প্রবন্ধ সংগ্রহ
-
বীরবলের হালখাতা
-
তেল-নুন-লকড়ি
গল্পগ্রন্থসমূহ
-
চার ইয়ারী কথা
-
নীললোহিত
-
আহুতি
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago