'হপ্তপয়কর' কার রচনা?
A
সৈয়দ আলাওল
B
জৈনুদ্দিন
C
দীনবন্ধু মিত্র
D
অমিয় দেব
উত্তরের বিবরণ
হপ্তপয়কর কাব্য
-
রচনা কাল: ‘হপ্তপয়কর’ কাব্যটি সপ্তদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে রচিত।
-
রচনা স্থান: এটি আরাকান রাজসভায় সৈয়দ আলাওল রচনা করেন।
-
বিষয়বস্তু: কাব্যটি মূলত রাজপুত্র বাহরামের সাতটি রাতের কাহিনী নিয়ে গঠিত। রাজপুত্র বাহরাম সাতরাত্রি ধরে সাতজন পরির কাছে সাতটি গল্প শুনেন।
-
সাহিত্যিক গুরুত্ব: পারসি ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ‘হপ্তপয়কর’ একটি বিশেষ স্থান অধিকার করে।
সৈয়দ আলাওলের অন্যান্য বিখ্যাত সাহিত্যকর্ম
-
পদ্মাবতী
-
হপ্তপয়কর
-
সিকান্দারনামা
-
তোহ্ফা
-
সয়ফুলমুলুক বদিউজ্জামাল ইত্যাদি
উৎস: ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা; বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
'উত্তম পুরুষ' উপন্যাসের রচয়িতা কে?
Created: 2 months ago
A
শওকত ওসমান
B
জহির রায়হান
C
শহীদুল্লাহ কায়সার
D
রশীদ করীম
▣ উত্তম পুরুষ (উপন্যাস পরিচিতি)
রশীদ করীম প্রণীত ‘উত্তম পুরুষ’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৬১ সালে। এই সাহিত্যকর্মে লেখক আধুনিক মনন ও সংবেদনশীলতার এক অনন্য চিত্র উপস্থাপন করেছেন।
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র শাকেরকে ঘিরে নির্মিত হয়েছে এক জটিল সম্পর্কজালের, যেখানে অণিমা, সেলিনা, মুশতাক, শেখর, সলিল, চন্দ্রা, শিশির, নিহার ভাবি প্রমুখ চরিত্র যুক্ত হয়ে তৈরি করেছে এক গভীর মনস্তাত্ত্বিক আবহ। লেখক যে পরিশীলিত ভাষা ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গিতে উপন্যাসকে নির্মাণ করেছেন, তা পাঠকের সাহিত্যপিপাসা মেটাতে সক্ষম।
চরিত্রগুলোর মধ্যে জটিল মানসিক দ্বন্দ্ব এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন অনেক সময় পাঠকের মনে এক শ্বাসরুদ্ধকর অনুভূতির সৃষ্টি করে।
▣ রশীদ করীম: সংক্ষিপ্ত জীবনী
রশীদ করীম জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৫ সালের ১৪ আগস্ট, কলকাতায়। বাংলা কথাসাহিত্যে অনন্য অবদান রাখার জন্য তিনি বহু সম্মানে ভূষিত হন। তাঁর প্রাপ্ত উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭২), একুশে পদক (১৯৮৪), লেখিকা সংঘ পুরস্কার (১৯৯১) এবং জনকণ্ঠ পুরস্কার (২০০১)। দীর্ঘ সাহিত্যজীবনের অবসান ঘটে ২০১১ সালের ২৬ নভেম্বর, তাঁর প্রয়াণের মাধ্যমে।
▣ রচনাসম্ভার
উপন্যাস:
-
উত্তম পুরুষ
-
প্রসন্ন পাষাণ
-
আমার যত গ্লানি
-
সোনার পাথরবাটি
-
বড়ই নিঃসঙ্গ
-
লান্সবাক্স
প্রবন্ধগ্রন্থ:
-
আর এক দৃষ্টিকোণ
-
মনের গহীনে তোমার মূর্তিখানি
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago
'লালসালু' উপন্যাসটির লেখক কে?
Created: 3 months ago
A
মুনির চৌধুরী
B
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
C
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
D
শওকত আলী
লালসালু
প্রকাশ ও প্রেক্ষাপট:
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ রচিত ‘লালসালু’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে কলকাতা থেকে। বাংলা সাহিত্যে এটি একটি মাইলফলক, যেখানে গ্রামবাংলার জীবন, প্রকৃতি ও ধর্মীয় শোষণের বাস্তবতা গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
কাহিনিসূত্রের মূল সুর:
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ, এক ধূর্ত ধর্মব্যবসায়ী। সে নোয়াখালি থেকে গারো পাহাড়ি অঞ্চলের এক গ্রামে এসে নামহীন একটি কবরকে পিরের মাজার বলে দাবি করে এবং ধর্মের নামে সরল মানুষদের ধোঁকা দিয়ে নিজের আধিপত্য কায়েম করে। মজিদের এই ষড়যন্ত্রে ধর্ম হয়ে ওঠে একটি শক্তিশালী অস্ত্র।
প্রধান চরিত্রসমূহ:
-
মজিদ — ধর্মব্যবসায়ী, কেন্দ্রীয় চরিত্র
-
জমিলা — মজিদের দ্বিতীয়, প্রতিবাদী তরুণী স্ত্রী
-
খালেক ব্যাপারি — প্রভাবশালী গ্রামবাসী
-
রহিমা — মজিদের প্রথম স্ত্রী
-
আমেনা, আক্কাস, তাহেরের বাপ, হাসুনির মা — অন্যান্য গ্রামীণ চরিত্র, যারা উপন্যাসে সমাজচিত্রকে ঘনীভূত করে
দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতেই অপমানিত মজিদ:
যদিও মজিদ ক্ষমতা, অর্থ ও নারীত্ব সব কিছু নিজের করায়ত্ত করতে চায়, কিন্তু জমিলা তাকে লাঞ্ছিত করে তার কর্তৃত্বের ভিত্তিকে নাড়িয়ে দেয়। জমিলাকে লেখক এক বিদ্রোহিণী নারীর প্রতীকে রূপ দিয়েছেন।
উপন্যাসের মূল্যায়ন:
'লালসালু' কেবল ধর্ম নিয়ে নয়, এটি সময়, সমাজ, ক্ষমতা ও প্রতারণার সীমানা পেরিয়ে এক কালোত্তীর্ণ সাহিত্যকীর্তি। লেখকের ভাষায়,
"খোদার এলেমে বুক ভরে না, তলায় পেট শূন্য বলে।" — এই একটি পঙক্তিতেই মজিদের মতো ধর্মব্যবসায়ীদের ভণ্ডামি ফুটে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক অনুবাদ ও স্বীকৃতি:
-
ইংরেজিতে: Tree Without Roots (১৯৬৭)
-
ফরাসিতে: L’Arbre Sans Racines (১৯৬১), অনুবাদক: লেখকের স্ত্রী Anne Marie
✍️ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্: সমাজ-সচেতন কথাশিল্পী
-
জন্ম: ১৫ আগস্ট ১৯২২, ষোলশহর, চট্টগ্রাম
-
ছাত্রজীবনে সম্পাদনা করতেন হাতে লেখা পত্রিকা ভোরের আলো (ফেনি স্কুলে)
-
প্রথম গল্প: হঠাৎ আলোর ঝলকানি, প্রকাশিত হয় ঢাকা কলেজ ম্যাগাজিনে
-
পেশাগতভাবে কাজ করেছেন ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় (১৯৪৫-১৯৪৭)
উল্লেখযোগ্য উপন্যাস:
-
লালসালু (১৯৪৮)
-
চাঁদের অমাবস্যা
-
কাঁদো নদী কাঁদো
-
The Ugly Asian (ইংরেজি)
গল্পগ্রন্থ:
-
নয়নচারা
-
দুই তীর ও অন্যান্য গল্প
নাটক:
-
বহিপীর
-
তরঙ্গভঙ্গ
-
উজান মৃত্যু
এইভাবে ‘লালসালু’ কেবল এক উপন্যাস নয়, বরং ধর্মীয় ভণ্ডামি ও ক্ষমতার লোভে সমাজে কীভাবে সাধারণ মানুষ নিপীড়িত হয়, তার এক শক্তিশালী সাহিত্যিক দলিল। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর এই সৃষ্টি বাংলা কথাসাহিত্যের এক অসাধারণ অর্জন।

0
Updated: 3 months ago
'বত্রিশ সিংহাসন' কার রচনা?
Created: 2 months ago
A
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার
B
রামরাম বসু
C
বিদ্যাসাগর
D
রাজীব লোচন মুখোপাধ্যায়
মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কারের রচনা - বত্রিশ সিংহাসন।
• বত্রিশ সিংহাসন:
- ‘বত্রিশ সিংহাসন' (১৮০২) মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার অনূদিত কাহিনি সংকলন।
- বাংলা গদ্যের আদিপর্বের ইতিহাসে এই রচনাটি উল্লেখযোগ্য ।
-------------------------------
• মৃত্যুঞ্জয় বিদ্যালঙ্কার:
- তিনি ছিলেন সংস্কৃত পণ্ডিত, ভাষাবিদ, লেখক।
- উইলিয়াম কেরীর সুপারিশে তিনি ১৮০১ সালের ৪ মে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ এর বাংলা বিভাগের হেড-পণ্ডিত নিযুক্ত হন।
- তিনি উনিশ শতকের প্রথম ভালো বাংলা গদ্য লেখক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
- এছাড়াও তিনি কাজ করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির জজ-পণ্ডিত হিসেবে।
• তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:
- বত্রিশ সিংহাসন,
- হিতোপদেশ,
- রাজাবলি,
- প্রবোধচন্দ্রিকা,
- বেদান্তচন্দ্রিকা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago