বাংলা সাহিত্যের পঠন-পাঠনের সুবিধার জন্য বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে তিনটি যুগে ভাগ করা হয়েছে, ____ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন যুগ।
A
৪৫০-৬৫০
B
৬৫০-৮৫০
C
৬৫০-১২০০
D
৬৫০-১২৫০
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যের যুগবিভাগ
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্-এর মতে
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে তিনি তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন—
-
প্রাচীন যুগ : ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ – ১২০০ খ্রিস্টাব্দ
-
মধ্যযুগ : ১২০১ খ্রিস্টাব্দ – ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ
-
আধুনিক যুগ : ১৮০১ খ্রিস্টাব্দ – বর্তমান সময়
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে
তিনিও তিন ভাগে বিভক্ত করেছেন, তবে প্রাচীন যুগের সূচনা সময় নিয়ে তাঁর মত শহীদুল্লাহ্-র থেকে ভিন্ন—
-
প্রাচীন যুগ : ৯৫০ খ্রিস্টাব্দ – ১২০০ খ্রিস্টাব্দ
-
মধ্যযুগ : ১২০১ খ্রিস্টাব্দ – ১৮০০ খ্রিস্টাব্দ
-
আধুনিক যুগ : ১৮০১ খ্রিস্টাব্দ – বর্তমান সময়
মধ্যযুগের একটি বৈশিষ্ট্য
মধ্যযুগের প্রথম দেড় শতক অর্থাৎ ১২০১ – ১৩৫০ সালকে “অন্ধকার যুগ” বলা হয়।
অন্যান্য গবেষকরা
দীনেশ্চন্দ্র সেন, সুকুমার সেন, গোপাল হালদার, মুহম্মদ এনামুল হকসহ আরও অনেকেই সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের উল্লেখিত যুগবিভাগকে সমর্থন করেছেন।
তবে, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ এক বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন—
তিনি মধ্যযুগ ও আধুনিক যুগের সময়সীমা সুনীতিকুমারের মতোই মেনে নিলেও প্রাচীন যুগের সীমা তিনি ৬৫০ খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু করেছেন, যা মোট ৫৫০ বছর (৬৫০ – ১২০০ খ্রিস্টাব্দ) হিসেবে গণনা করা হয়।
উৎস : বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 1 week ago
কবিওয়ালা ও শায়েরের উদ্ভব ঘটে কখন?
Created: 2 weeks ago
A
আঠারো শতকের শেষার্ধে ও উনিশ শতকের প্রথমার্ধে
B
ষোড়শ শতকের শেষার্ধে ও সপ্তদশ শতকের প্রথমার্ধে
C
সপ্তদশ শতকের শেষার্ধে ও সপ্তদশ শতকের প্রথমার্ধে
D
উনিশ শতকের শেষার্ধে ও বিংশ শতকের প্রথমার্ধে
কবিওয়ালা ও শায়ের
আঠার শতকের শেষ দিকে এবং উনিশ শতকের শুরুতে, কলকাতার সমাজে বড় ধরনের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের প্রভাব পড়ে। এই পরিস্থিতিতে হিন্দু সমাজে কবিওয়ালা এবং মুসলিম সমাজে শায়ের উদ্ভব ঘটে।
প্রধান কবিওয়ালদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য:
-
গোঁজলা গুই
-
হুরু ঠাকুর
-
এন্টনি ফিরিঙ্গি
সূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 2 weeks ago
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিকের নাম কি?
Created: 1 month ago
A
মোতাহের হোসেন
B
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
C
মীর মশাররফ হোসেন
D
ফররুখ আহমদ
মীর মশাররফ হোসেন: একজন পথপ্রদর্শক সাহিত্যিক
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন একজন বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়ার লাহিনীপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা সাহিত্যে প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক হিসেবে তার বিশেষ স্থান রয়েছে। তাঁর সাহিত্যগুরু ছিলেন গ্রামবার্তার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ।
মশাররফ হোসেনের সাহিত্যজীবন শুরু হয় ছাত্রাবস্থায় যখন তিনি সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালির গ্রামবার্তা পত্রিকার জন্য মফস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করতেন। পরবর্তীতে তিনি ‘আজিজননেহার’ এবং ‘হিতকরী’ নামক দুটি পত্রিকার সম্পাদকত্বও পালন করেন। তিনি উনিশ শতকের বাঙালি মুসলিম লেখকদের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী গদ্যকার এবং বঙ্কিমচন্দ্র যুগের প্রধান সাহিত্য ব্যক্তিত্ব।
তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মসমূহ:
নাটক
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
প্রহসন
-
টালা অভিনয়
-
এর উপায় কী
-
ফাঁস কাগজ
-
ভাই ভাই এইতো চাই
উপন্যাস
-
বিষাদ-সিন্ধু
আত্মজীবনীমূলক রচনা
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
অন্যদিকে, মুসলিম পুনর্জাগরণ আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ কবি হিসেবে পরিচিত ছিলেন ফররুখ আহমদ।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
দোভাষী পুঁথি বলতে কি বোঝায়?
Created: 1 month ago
A
দুই ভাষায় রচিত পুঁথি
B
কয়েকটি ভাষার শব্দ ব্যবহার করে মিশ্রিত ভাষায় রচিত পুঁথি
C
তৈরি করা কৃত্রিম ভাষায় রচিত পুঁথি
D
আঞ্চলিক বাংলায় রচিত পুঁথি
• পুথি সাহিত্য:
- পুথি সাহিত্য আরবি, উর্দু, ফারসি ও হিন্দি ভাষার মিশ্রণে রচিত এক বিশেষ শ্রেণীর বাংলা সাহিত্য। আঠারো থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এর ব্যাপ্তিকাল। এ সাহিত্যের রচয়িতা এবং পাঠক উভয়ই ছিল মুসলমান সম্প্রদায়।
- পুথি (বা পুঁথি) শব্দের উৎপত্তি ‘পুস্তিকা’ শব্দ থেকে। এ অর্থে পুথি শব্দদ্বারা যেকোনো গ্রন্থকে বোঝালেও পুথি সাহিত্যের ক্ষেত্রে তা বিশেষ অর্থ বহন করে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিশেষ সময়ে রচিত বিশেষ ধরণের সাহিত্যই পুথি সাহিত্য নামে পরিচিত।
- হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনু. ১৬৮০-১৭৭০) আমীর হামজা রচনা করে এ কাব্যধারার সূত্রপাত করেন। আরবদেশের ইতিহাস-পুরাণ মিশ্রিত কাহিনি অবলম্বনে রচিত আমীর হামজা জঙ্গনামা বা যুদ্ধ বিষয়ক কাব্য।
- মধ্যযুগে প্রায় পাঁচশ বছর ধরে বাংলা ভাষার যে ঐতিহ্য তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে এ কাব্যের ভাষার মিল নেই। বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি, ফারসি প্রভৃতি শব্দের মিশ্রণজাত একটি ভিন্ন ভাষায় কাব্যটি রচিত। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এ কাব্যে ৩২% বিদেশি শব্দের পরিসংখ্যান দিয়েছেন। হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, ২৪ পরগনা প্রভৃতি অঞ্চলের মুসলমানদের কথ্যভাষা এর উৎস ছিল বলে মনে করা হয়।
- গরীবুল্লাহ নিজে এবং তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এ ভাষায় আরও কয়েকখানি কাব্য রচনা করেন। তাঁদের অনুসরণে পরবর্তীকালে বহু সংখ্যক মুসলমান কবি এ জাতীয় কাব্য রচনা করেন।
- এগুলির পাঠক ছিল সর্বস্তরের মুসলমান; তবে নিম্নবিত্তের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষের কাছে এর জনপ্রিয়তা ছিল সর্বাধিক।
- পুথি সাহিত্যের শব্দসম্ভার ও ভাষারীতি লক্ষ করে বিভিন্ন জন এর বিভিন্ন নামকরণ করেছেন। রেভারেন্ড জেমস লং এ ভাষাকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা’, আর এ ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
- কলকাতার বটতলার ছাপাখানার বদৌলতে প্রচার লাভ করে বলে এগুলি ‘বটতলার পুথি’ নামেও পরিচিত হয়।
- গবেষকগণ ভাষা-বৈশিষ্ট্য ও বাক্যরীতির দিক থেকে বিচার করে প্রথমে এগুলিকে দোভাষী পুথি এবং পরবর্তীকালে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ বলে অভিহিত করেন।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago