A
মধ্যযুগীয় কাব্যের হস্তলিখিত পাণ্ডুলিপি
B
বটতলা নামক স্থানে রচিত কাব্য
C
দোভাষী বাংলায় রচিত পুঁথি সাহিত্য
D
অবিমিশ্র দেশজ বাংলায় রচিত লোকসাহিত্য
উত্তরের বিবরণ
🔸 বটতলার পুথি
বটতলার পুথি বলতে বোঝায় এমন কিছু কাব্য যেগুলো দোভাষী বা মিশ্র ভাষায় লেখা। এগুলোর ভাষায় বাংলা, আরবি, ফারসি, উর্দু ও হিন্দি শব্দের মিশ্রণ দেখা যায়। এই ধারা কলকাতার বটতলার ছাপাখানায় মুদ্রিত হতো বলেই এদের 'বটতলার পুথি' বলা হয়।
🔸 পুথি সাহিত্য:
-
পুথি সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের একটি বিশেষ ধারা, যার বিকাশ ঘটে আঠারো থেকে উনিশ শতকে। এই সাহিত্যের পাঠক ও লেখক—উভয়ই মূলত মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ ছিলেন।
-
‘পুথি’ শব্দটি এসেছে ‘পুস্তিকা’ থেকে, তবে সাহিত্যিক অর্থে এটি একধরনের ছন্দবদ্ধ, বর্ণনাধর্মী কাব্যকেই বোঝায়।
-
এ ধারার সূত্রপাত করেন কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনুমানিক ১৬৮০–১৭৭০)। তাঁর রচিত “আমীর হামজা” কাব্য আরবদেশের ইতিহাস-পুরাণ এবং যুদ্ধকাহিনিকে কেন্দ্র করে গঠিত।
-
এই সাহিত্যে ব্যবহৃত ভাষায় প্রায় ৩২% বিদেশি শব্দ রয়েছে (সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের মতে)। হুগলি, হাওড়া, কলকাতা ও ২৪ পরগনার মুসলমানদের কথ্যভাষাই এ ভাষার মূল উৎস।
-
গরীবুল্লাহ ও তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজার পথ অনুসরণে বহু কবি এই ধরনের কাব্য রচনা করেন। সাধারণত নিম্নবিত্ত মুসলমানদের মধ্যে এ সাহিত্য ছিল বেশি জনপ্রিয়।
-
ভাষার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী গবেষকরা একে ‘দোভাষী পুথি’ বা ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ নামে চিহ্নিত করেছেন। রেভারেন্ড জেমস লং এ ভাষাকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা’।
এভাবেই পুথি সাহিত্য বাংলা সাহিত্যের এক ব্যতিক্রমী ও গুরুত্বপূর্ণ ধারা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
উৎস: বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 2 months ago