'স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায়' চরণটি কার রচনা?
A
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত
B
মধুসূদন দত্ত
C
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
D
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়
উত্তরের বিবরণ
‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়’— এই অমর পঙ্ক্তিটি রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত দেশাত্মবোধক কাব্য পদ্মিনী উপাখ্যান থেকে নেওয়া। এটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রাথমিক দেশপ্রেমবোধক কবিতা, যা পরবর্তীতে স্বাধীনতা আন্দোলনের বিপ্লবীদের মধ্যে প্রেরণা জুগিয়েছিল।
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন একজন প্রখ্যাত কবি ও সাংবাদিক। তাঁর জন্ম হয় পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার বাকুলিয়া গ্রামে। ছাত্রজীবনেই তাঁর কবিতা ঈশ্বরগুপ্ত সম্পাদিত সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। তাঁর সাহিত্যিক যাত্রার প্রধান ও প্রথম উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি পদ্মিনী উপাখ্যান, যা ১৮৫৮ সালে প্রকাশিত হয়।
এই কাব্যটি টডের Annals and Antiquities of Rajasthan গ্রন্থের কাহিনির ওপর ভিত্তি করে রচিত একটি ঐতিহাসিক রোমান্টিক কবিতা। ইংরেজি কাব্যরীতির প্রভাবে গড়ে ওঠা এই কাব্যে রঙ্গলাল স্বাধীনতার প্রতি তাঁর গভীর আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরেন:
“স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়?
দাসত্বশৃঙ্খল বল কে পরিবে পায় হে, কে পরিবে পায়?”
এই পঙ্ক্তিগুলি পরবর্তীতে বিপ্লবীদের মধ্যে চেতনার সঞ্চার করে।
রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্য হলো:
-
কর্মদেবী
-
শূরসুন্দরী
-
কাঞ্চী কাবেরী
এছাড়াও, তিনি কালিদাসের ঋতুসংহার ও কুমারসম্ভব-এর বাংলা পদ্যানুবাদ করেন (১৮৭২)। তাঁর নীতিকুসুমাঞ্জলি (১৮৭২) সংস্কৃত নীতিগর্ভ ও তত্ত্বমূলক কবিতার আরেকটি অনুবাদসাহিত্য।
উৎস:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 3 months ago
'বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত' কে রচনা করেন?
Created: 1 month ago
A
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়
B
সুকুমার সেন
C
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ
D
মুহম্মদ এনামুল হক
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার পেয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন প্রতিভাবান বাঙালি ব্যক্তিত্ব, যিনি ভারতের উপমহাদেশে দার্শনিক, শিক্ষক এবং বহুভাষাবিদ হিসেবে সুপরিচিত।
‘জ্ঞানতাপস’ নামে তিনি বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন। এছাড়াও, তাঁকে ‘চলিষ্ণু অভিধান’ নামেও অভিহিত করা হয়।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে জাতিসত্তা সম্পর্কে তাঁর বিখ্যাত উক্তি ছিল, “আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার থেকেও অধিক সত্য আমরা বাঙালি।”
এই উক্তি বাঙালির ঐক্য ও পরিচয়ের গুরুত্বকে রূপায়িত করে। ১৯৫৯ সালে তিনি ‘বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত’ নামক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেন, যা বাংলা ভাষার ইতিহাস ও বিকাশকে তুলে ধরে।
ড. শহীদুল্লাহর ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ হলো—‘ভাষা ও সাহিত্য’, ‘বাঙ্গালা ব্যাকরণ’, ‘বাংলা সাহিত্যের কথা’ ইত্যাদি। পাশাপাশি তিনি বাংলা একাডেমির ‘আঞ্চলিক ভাষার অভিধান’ সম্পাদনার দায়িত্বও পালন করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
'পদাবলী'র প্রথম কবি কে?
Created: 2 months ago
A
শ্রীচৈতন্য
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
জ্ঞানদাস
পুথি সাহিত্য হলো বাংলা ভাষায় রচিত একটি বিশেষ ধারা, যেখানে আরবি, ফারসি, উর্দু ও হিন্দি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়। এই সাহিত্যের বিকাশ ঘটে মূলত আঠারো থেকে উনিশ শতকের মধ্যবর্তী সময়ে এবং এর রচয়িতা ও পাঠকগোষ্ঠী প্রধানত ছিলেন মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত।
‘পুথি’ শব্দটি এসেছে ‘পুস্তিকা’ থেকে, যা সাধারণভাবে যেকোনো গ্রন্থ বোঝাতে ব্যবহৃত হলেও, এখানে এটি নির্দিষ্ট একটি সাহিত্যধারার প্রতিনিধিত্ব করে। বাংলা সাহিত্যের এক নির্দিষ্ট সময়ে, ভিন্ন ভাষার প্রভাব মিশিয়ে রচিত সাহিত্যকেই আমরা পুথি সাহিত্য নামে চিনি।
এই ধারার সূচনা করেন হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনুমানিক ১৬৮০–১৭৭০)। তাঁর রচিত আমীর হামজা কাব্যটি যুদ্ধ ও কাহিনিনির্ভর সাহিত্যের একটি দৃষ্টান্ত, যেখানে আরব বিশ্বের ইতিহাস ও পুরাণের ছাপ রয়েছে।
মধ্যযুগের প্রচলিত বাংলা সাহিত্যের ভাষার তুলনায় পুথি সাহিত্যের ভাষা ছিল সম্পূর্ণ আলাদা। এতে বাংলা শব্দের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে আরবি, ফারসি ও অন্যান্য বিদেশি শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। ভাষাতত্ত্ববিদ সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই সাহিত্যধারায় প্রায় ৩২% শব্দ ছিল বিদেশি উৎসের। ধারণা করা হয়, হুগলি, হাওড়া, কলকাতা ও ২৪ পরগনার মুসলমানদের কথ্যভাষাই এর মূল ভিত্তি ছিল।
গরীবুল্লাহ ও তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এই ভাষারীতিতে আরও কয়েকটি কাব্য রচনা করেন এবং তাঁদের দেখানো পথ অনুসরণ করে বহু মুসলমান কবি এই ধারা অনুসরণ করে সাহিত্য রচনা করেন। এসব সাহিত্যকর্মের পাঠক সাধারণত সমাজের সকল স্তরের মুসলমান ছিলেন, তবে নিম্ন-মধ্যবিত্ত পেশাজীবী, শ্রমজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর প্রচলন ছিল সবচেয়ে বেশি।
এই সাহিত্যের ভাষাগত বৈশিষ্ট্য বিবেচনায় বিভিন্ন নামকরণ করা হয়েছে। রেভারেন্ড জেমস লং এই ভাষাকে ‘মুসলমানী বাংলা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং এই ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
এছাড়া, কলকাতার বটতলার ছাপাখানায় এগুলোর ব্যাপক মুদ্রণ ও প্রচার হওয়ায় এগুলিকে ‘বটতলার পুথি’ নামেও ডাকা হয়। গবেষকদের মতে, ভাষা ও বাক্যগঠনের দিক থেকে এ সাহিত্যকে প্রাথমিকভাবে ‘দোভাষী পুথি’ এবং পরবর্তীতে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 2 months ago
কখনো উপন্যাস লেখেননি-
Created: 2 months ago
A
কাজী নজরুল ইসলাম
B
জীবনানন্দ দাশ
C
সুধীন্দ্রনাথ দত্ত
D
বুদ্ধদেব বসু
• সুধীন্দ্রনাথ দত্ত রচিত কোনো উপন্যাস গ্রন্থ নেই।
• সুধীন্দ্রনাথ দত্ত:
• সুধীন্দ্রনাথ দত্ত (১৯০১-১৯৬০) ছিলেন কবি, প্রাবন্ধিক ও পত্রিকা সম্পাদক। ১৯০১ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতার হাতীবাগানে তাঁর জন্ম।
• ১৯৩১ সাল থেকে দীর্ঘ বারো বছর তিনি পরিচয় পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। প্রমথ চৌধুরীর সবুজপত্রের সঙ্গেও তাঁর সম্পৃক্ততা ছিল।
• সুধীন্দ্রনাথ কর্মজীবনের পাশাপাশি সাহিত্যচর্চাও করেছেন। আধুনিক মনন ও বৈশ্বিক চেতনার কারণে তিনি বাংলা কাব্যে স্বতন্ত্র স্থান লাভ করেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি:
কাব্য:
• তন্বী,
• অর্কেস্ট্রা,
• ক্রন্দসী,
• উত্তরফাল্গুনী,
• সংবর্ত,
• দশমী।
গদ্যগ্রন্থ:
• স্বগত ,
• কুলায় ও কালপুরুষ।
• এছাড়া প্রতিধ্বনি (১৯৫৪) নামে তাঁর একটি অনুবাদগ্রন্থও আছে।
অন্যদিকে,
• বুদ্ধদেব বসু রচিত উপন্যাসসমূহ:
- তিথিডোর,
- সাড়া,
- সানন্দা,
- লালমেঘ,
- পরিক্রমা,
- কালো হাওয়া,
- নির্জন স্বাক্ষর,
- নীলাঞ্জনার খাতা ইত্যাদি।
• জীবনানন্দ দাশ রচিত উপন্যাসগুলো হলো:
- মাল্যবান;
- সতীর্থ;
- কল্যাণী।
• কাজী নজরুল ইসলাম রচিত উপন্যাস:
- বাঁধন-হারা,
- মৃত্যুক্ষুধা,
- কুহেলিকা।
উৎস: বাংলাপিডিয়া এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা সৌমিত্র শেখর।

0
Updated: 2 months ago