A
রামাই পণ্ডিত
B
শ্রীকর নন্দী
C
বিজয় গুপ্ত
D
লোচন দাস
উত্তরের বিবরণ
শূন্যপুরাণ
-
শূন্যপুরাণ হলো রামাই পণ্ডিত রচিত একটি বৌদ্ধধর্মীয় তত্ত্বগ্রন্থ এবং অন্ধকার যুগের সাহিত্য নিদর্শন।
-
এই গ্রন্থটি মূলত ধর্মীয় পূজাপদ্ধতির ওপর কেন্দ্রীভূত।
-
এটি গদ্য ও পদ্যের মিশ্রণে রচিত, এক ধরনের চম্পুকাব্য।
-
শূন্যপুরাণ মোট ৫১টি অধ্যায়ে বিভক্ত, যার প্রথম ৫টি অধ্যায় সৃষ্টিতত্ত্ব সম্পর্কিত।
-
গবেষকরা মনে করেন, এটি ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে রচিত হতে পারে।
-
গ্রন্থটি নামহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে বিশ্বকোষ প্রণেতা নাগেন্দ্রনাথ বসু তিনটি পুথির পাঠ সংগ্রহ করে ১৩১৪ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ’-এর মাধ্যমে এটিকে শূন্যপুরাণ নামে প্রকাশ করেন।
উৎস: ড. সৌমিত্র শেখর, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা

0
Updated: 2 weeks ago
'আবোল-তাবোল' কার লেখা?
Created: 1 month ago
A
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী
B
দক্ষিণারঞ্জন মিত্র মজুমদার
C
সুকুমার রায়
D
সত্যজিৎ রায়
'আবোল-তাবোল'-এর রচয়িতা সুকুমার রায়
বাংলা শিশুসাহিত্যের এক অনন্য নাম সুকুমার রায়। তিনি ১৮৮৭ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী ছিলেন একজন প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক, সংগীতজ্ঞ ও প্রযুক্তিনিপুণ ব্যক্তিত্ব। এই বিশিষ্ট রায় পরিবারের আদি নিবাস ছিল ময়মনসিংহ জেলার মসুয়া গ্রামে।
সুকুমার রায় শুধু একজন কবিই নন, ছিলেন ব্যঙ্গ-রসিকতার এক নিপুণ কারিগর। তাঁর পুত্র সত্যজিৎ রায় পরবর্তীতে বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্রকার হিসেবে অস্কার লাভ করেন।
সাহিত্যকর্মসমূহ:
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্ম মূলত কিশোর ও শিশু পাঠকদের জন্য হলেও প্রাপ্তবয়স্করাও তাঁর রচনায় বিমোহিত হন।
কবিতা সংকলন:
-
আবোল-তাবোল (ব্যঙ্গ ও কল্পনাপ্রবণ ছড়ার এক অমর সংকলন)
-
খাই খাই (খাবার নিয়ে মজার ছড়াসমূহ)
গল্প ও সংকলন:
-
হযবরল – এক স্বপ্নময় ও রহস্যঘেরা গল্প
-
পাগলা দাশু – কৌতুক ও ব্যঙ্গ-রসের সংমিশ্রণে ভরপুর একটি গল্প সংকলন
নাট্যকর্ম:
-
চলচিত্তচঞ্চরী – সমাজ ও মনস্তত্ত্বভিত্তিক নাটক
অন্যান্য উল্লেখযোগ্য রচনা:
-
অবাক জলপান
-
লক্ষণের শক্তিশেল
-
হেশোরাম হুশিয়ারের ডায়েরি
-
ঝালাপালা ও অন্যান্য নাটক
-
বহুরূপী
সুকুমার রায়ের সাহিত্যকর্মে রস, ছন্দ, ব্যঙ্গ ও কল্পনার এক অপরূপ মিশ্রণ রয়েছে যা বাংলা সাহিত্যে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক ও প্রিয়।
উৎস:
ড. সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা গ্রন্থ এবং ‘হ-য-ব-র-ল’ গ্রন্থের ভূমিকা।

0
Updated: 1 month ago
'শাশ্বত বঙ্গ' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
Created: 1 month ago
A
কাজী মোতাহার হোসেন
B
আবুল হুসেন
C
কাজী আবদুল ওদুদ
D
কাজী আনোয়ারুল কাদির
শাশ্বত বঙ্গ
- কাজী আবদুল ওদুদ রচিত ‘শাশ্বত বঙ্গ’ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য এবং বাঙালির সাংস্কৃতিক ইতিহাসের বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য একটি গ্রন্থ।
- একটি কবিতাসহ ৭৫টি প্রবন্ধ নিয়ে সংকলিত হয় এ গ্রন্থ।
- গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় বাংলা ১৩৫৮ সনে, কলকাতা থেকে।
- কাজী আবদুল ওদুদ রচিত নবর্পয্যায় (১ম ও ২য় খণ্ড), রবীন্দ্রকাব্য পাঠ, সমাজ ও সাহিত্য, হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ, আজকার কথা, নজরুল প্রতিভা, স্বাধীনতা-দিনের উপহার প্রভৃতি গ্রন্থের নির্বাচিত প্রবন্ধ এবং অপ্রকাশিত কিছু প্রবন্ধ নিয়ে গ্রন্থ আকারে ‘শাশ্বত বঙ্গ’ সংকলিত হয়।
--------------------------------
• কাজী আবদুল ওদুদ:
- কাজী আবদুল ওদুদ একজন শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, চিন্তাবিদ।
- তিনি ১৮৯৪ সালের ২৬ এপ্রিল ফরিদপুর জেলার পাংশা উপজেলার বাগমারা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন।
- আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ধারায় কাজী আবদুল ওদুদের প্রধান পরিচয় চিন্তাশীল লেখক হিসেবে। তবে তাঁর লেখালেখি শুরু হয় কথাসাহিত্যের মাধ্যমে।
- তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ মীর পরিবার পাঁচটি গল্পের সংকলন।
- এরপর তিনি তিনটি গল্প রচনা করেন যা পরবর্তী সময়ে তরুণ (১৯৪৮) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
- নদীবক্ষে ও আজাদ (১৯৪৮) তাঁর দু’টি উপন্যাস।
- নাটকও রচনা করেন দু’টি ‘পথ ও বিপথ’ (১৯৩৯) এবং ‘মানব-বন্ধু’। মানব-বন্ধু পরবর্তীকালে তরুণ গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
'লালসালু' উপন্যাসটির লেখক কে?
Created: 1 month ago
A
মুনির চৌধুরী
B
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
C
শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
D
শওকত আলী
লালসালু
প্রকাশ ও প্রেক্ষাপট:
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্ রচিত ‘লালসালু’ উপন্যাসটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯৪৮ সালে কলকাতা থেকে। বাংলা সাহিত্যে এটি একটি মাইলফলক, যেখানে গ্রামবাংলার জীবন, প্রকৃতি ও ধর্মীয় শোষণের বাস্তবতা গভীরভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
কাহিনিসূত্রের মূল সুর:
উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র মজিদ, এক ধূর্ত ধর্মব্যবসায়ী। সে নোয়াখালি থেকে গারো পাহাড়ি অঞ্চলের এক গ্রামে এসে নামহীন একটি কবরকে পিরের মাজার বলে দাবি করে এবং ধর্মের নামে সরল মানুষদের ধোঁকা দিয়ে নিজের আধিপত্য কায়েম করে। মজিদের এই ষড়যন্ত্রে ধর্ম হয়ে ওঠে একটি শক্তিশালী অস্ত্র।
প্রধান চরিত্রসমূহ:
-
মজিদ — ধর্মব্যবসায়ী, কেন্দ্রীয় চরিত্র
-
জমিলা — মজিদের দ্বিতীয়, প্রতিবাদী তরুণী স্ত্রী
-
খালেক ব্যাপারি — প্রভাবশালী গ্রামবাসী
-
রহিমা — মজিদের প্রথম স্ত্রী
-
আমেনা, আক্কাস, তাহেরের বাপ, হাসুনির মা — অন্যান্য গ্রামীণ চরিত্র, যারা উপন্যাসে সমাজচিত্রকে ঘনীভূত করে
দ্বিতীয় স্ত্রীর হাতেই অপমানিত মজিদ:
যদিও মজিদ ক্ষমতা, অর্থ ও নারীত্ব সব কিছু নিজের করায়ত্ত করতে চায়, কিন্তু জমিলা তাকে লাঞ্ছিত করে তার কর্তৃত্বের ভিত্তিকে নাড়িয়ে দেয়। জমিলাকে লেখক এক বিদ্রোহিণী নারীর প্রতীকে রূপ দিয়েছেন।
উপন্যাসের মূল্যায়ন:
'লালসালু' কেবল ধর্ম নিয়ে নয়, এটি সময়, সমাজ, ক্ষমতা ও প্রতারণার সীমানা পেরিয়ে এক কালোত্তীর্ণ সাহিত্যকীর্তি। লেখকের ভাষায়,
"খোদার এলেমে বুক ভরে না, তলায় পেট শূন্য বলে।" — এই একটি পঙক্তিতেই মজিদের মতো ধর্মব্যবসায়ীদের ভণ্ডামি ফুটে উঠেছে।
আন্তর্জাতিক অনুবাদ ও স্বীকৃতি:
-
ইংরেজিতে: Tree Without Roots (১৯৬৭)
-
ফরাসিতে: L’Arbre Sans Racines (১৯৬১), অনুবাদক: লেখকের স্ত্রী Anne Marie
✍️ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্: সমাজ-সচেতন কথাশিল্পী
-
জন্ম: ১৫ আগস্ট ১৯২২, ষোলশহর, চট্টগ্রাম
-
ছাত্রজীবনে সম্পাদনা করতেন হাতে লেখা পত্রিকা ভোরের আলো (ফেনি স্কুলে)
-
প্রথম গল্প: হঠাৎ আলোর ঝলকানি, প্রকাশিত হয় ঢাকা কলেজ ম্যাগাজিনে
-
পেশাগতভাবে কাজ করেছেন ‘দ্য স্টেটসম্যান’ পত্রিকায় (১৯৪৫-১৯৪৭)
উল্লেখযোগ্য উপন্যাস:
-
লালসালু (১৯৪৮)
-
চাঁদের অমাবস্যা
-
কাঁদো নদী কাঁদো
-
The Ugly Asian (ইংরেজি)
গল্পগ্রন্থ:
-
নয়নচারা
-
দুই তীর ও অন্যান্য গল্প
নাটক:
-
বহিপীর
-
তরঙ্গভঙ্গ
-
উজান মৃত্যু
এইভাবে ‘লালসালু’ কেবল এক উপন্যাস নয়, বরং ধর্মীয় ভণ্ডামি ও ক্ষমতার লোভে সমাজে কীভাবে সাধারণ মানুষ নিপীড়িত হয়, তার এক শক্তিশালী সাহিত্যিক দলিল। সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর এই সৃষ্টি বাংলা কথাসাহিত্যের এক অসাধারণ অর্জন।

0
Updated: 1 month ago