'বটতলার উপন্যাস' কার রচনা?
A
রশীদ করিম
B
রাজিয়া খান
C
রাহাত খান
D
রফিক আজাদ
উত্তরের বিবরণ
বটতলার উপন্যাস সমকালীন সমাজজীবন ও ব্যক্তিমানসকে কেন্দ্র করে লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস, যার রচয়িতা রাজিয়া খান। তিনি বাংলা সাহিত্যে আধুনিক ভাবনা ও নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গির জন্য সুপরিচিত।
• রাজিয়া খান তাঁর লেখায় সামাজিক রূপান্তর, ব্যক্তির স্বাধীনতা, নারী-পুরুষের অবস্থান ও বাস্তবতার সংঘাতকে সূক্ষ্মভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
• বটতলার উপন্যাসে মানুষের নৈতিক বিকাশ, সমাজের রূপ পরিবর্তন এবং সম্পর্কের টানাপোড়েন বাস্তবধর্মী বর্ণনায় তুলে ধরা হয়েছে।
• ভাষা ব্যবহারে তিনি সহজ-সাবলীল কিন্তু গভীর ভাবনার সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন, যা পাঠককে দ্রুত গল্পের ভেতরে নিয়ে যায়।
• উপন্যাসে চরিত্রগুলোর মানসিক টানাপোড়েন ও সমাজের পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তন পাঠকের সামনে পরিষ্কারভাবে ধরা পড়ে, যা তাঁর লেখার পরিপক্বতা নির্দেশ করে।
• বাংলা উপন্যাসে নারীর অভিজ্ঞতা ও দৃষ্টিভঙ্গিকে গুরুত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজিয়া খানের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এবং এই গ্রন্থ সেই ধারার একটি প্রভাবশালী উদাহরণ।
0
Updated: 8 hours ago
পদ বা পদাবলী বলতে কি বুঝায়?
Created: 4 months ago
A
লাচাড়ী ছন্দে রচিত পদ্য বা কবিতাবলী
B
পদ্যাকারে রচিত দেবস্তুতিমূলক রচনা
C
বাউল বা মরমী গীতি
D
বৌদ্ধ বা বৈষ্ণবীয় ধর্মের গূঢ় বিষয়ের বিশেষ সৃষ্টি
পদাবলী (বিশেষ্য পদ)
অর্থাৎ, বৈষ্ণব ও শাক্ত ধর্মভিত্তিক গীতিকাব্যের এক বিশেষ শাখা।
পদাবলী:
পদাবলী হলো এক ধরণের সামগ্রিক গীতিকাব্য যা লোকজ সাহিত্য, ধর্মীয় কাব্য এবং মানবীয় অনুভূতির মেলবন্ধন। ছন্দবদ্ধ, গীতিময় রচনাকে ‘পদ’ বলা হয়। রাধা-শ্রীকৃষ্ণের প্রেমলীলা এবং চৈতন্যদেবের ভক্তির সাধনাকে কেন্দ্র করেই মধ্যযুগে পদাবলী বা গীতিকাব্যের একটি বিশাল প্রবাহ সৃষ্টি হয়।
বৈষ্ণব পদাবলী:
বৈষ্ণব পদাবলী প্রধানত বৈষ্ণব ধর্ম ও কৃষ্ণ ভক্তির প্রতি নিবেদিত। এতে শ্রীকৃষ্ণ, গোপী প্রেম, কৃষ্ণের মহিমা ও ভক্তির গুণাবলী গভীরভাবে ফুটে ওঠে।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, পদাবলী একটি বিস্তৃত শব্দ, যা বিভিন্ন ধরনের গান ও গীতিকাব্যকে নির্দেশ করে, তবে বৈষ্ণব পদাবলী বলতে বোঝায় সেই পদাবলী
যা বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাবিত কাব্যধারা।অর্থাৎ, পদ বা পদাবলী মূলত পদ্যরূপে রচিত ভক্তিমূলক রচনা।
প্রাসঙ্গিক আলোচনা:
চৈতন্যদেবের আগের সময়ের সাহিত্যধারার মধ্যে পদাবলীর অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। এই ধারার সূচনা হয় চৈতন্যপূর্ব যুগেই। রাধা-শ্রীকৃষ্ণের লীলাবিষয়ক সাহিত্যিক ভাবনা, ভাষা ও ছন্দের দিক থেকে এক অনন্য অবস্থানে রয়েছে। এতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ আত্মার আত্মীয় হিসেবে কল্পিত, যেখানে ভক্ত ও ঈশ্বরের মধ্যে কোনো দূরত্ব নেই।
মধ্যযুগে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা এবং চৈতন্যদেবের ভক্তি সাধনাকে অবলম্বন করে পদাবলী বা গীতিকাব্যের ধারা ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়। চৈতন্যদেবের পরবর্তী বৈষ্ণব কবিরা এই সাহিত্যের সমৃদ্ধিতে ব্যাপক অবদান রাখেন। অনেক বিশ্লেষকের মতে, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মহান জাগরণ ঘটে এই পদাবলী রচনার মধ্য দিয়ে।
অনেকে মুসলমান কবিরাও রাধাকৃষ্ণের লীলার পদ রচনা করে বাংলা সাহিত্যের পরিধি প্রসারিত করেছেন, যেমন চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস, লোচনদাস, গোবিন্দদাস, কবিবল্লভ রায়শেখর, বলরাম দাস, নরোত্তম দাস, নরহরি দাস, রাধামোহন ঠাকুর ইত্যাদি। মৈথিল ভাষার বিখ্যাত কবি বিদ্যাপতিও চৈতন্যপূর্ব যুগের প্রভাবশালী পদ রচয়িতা।
মৈথিল ভাষায় রচিত বিদ্যাপতির পদাবলী বাংলা সাহিত্যের অমূল্য সম্পদ হিসেবে বিবেচিত। চণ্ডীদাস ও বিদ্যাপতি এই ধারার শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে বিবেচিত।
উৎস:
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 4 months ago
নিচের কোনটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা?
Created: 2 days ago
A
চতুরঙ্গ
B
বিষের বাঁশি
C
রাখালী
D
অগ্নিবীণা
ঘরে বাইরে (১৯১৬) হলো চলিত ভাষায় লিখিত রবীন্দ্রনাথের প্রথম উপন্যাস। চতুরঙ্গ, গোরা ও বৌ-ঠাকুরাণীর হাট সাধু ভাষায় লিখিত। এর মধ্যে চতুরঙ্গ সাধু ভাষায় লিখিত তার সর্বেশষ উপন্যাস।
0
Updated: 2 days ago
'অনল-প্রবাহ' রচনা করেন-
Created: 3 months ago
A
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী
B
মোজাম্মেল হক
C
এয়াকুব আলী চৌধুরী
D
মুনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী
অনল প্রবাহ কাব্য
• মুসলিম জাগরণের উদ্দেশ্যে লেখা কাব্য ‘অনল প্রবাহ’ রচনা করেন সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯০০ সালে।
• এই কাব্যে বলা হয়েছে, যেগুলো অতীতে চলে গেছে সেগুলো নিয়ে শোক করাটা বৃথা, বরং আমাদের জাতির হারানো গৌরব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করা উচিত। এখানে মুসলমানদের দুরবস্থা এবং ইংরেজদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে।
• ‘অনল প্রবাহ’-এর কবিতাগুলোতে হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ভারত ভিক্ষা’ ও ‘ভারত বিলাপ’ কবিতার প্রভাব দেখা যায়।
• ১৯০৮ সালে (১৩১৫ বঙ্গাব্দে) এই কাব্যের দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশ পায়, যা প্রথম সংস্করণ থেকে বড় ও পরিবর্তিত। প্রথম সংস্করণে মাত্র ৯টি কবিতা ছিল।
• প্রথম সংস্করণের কবিতার নামগুলো হলো: অনল-প্রবাহ, তুর্যধ্বনি, মূর্ছনা, বীর-পূজা, ছাত্রদের প্রতি অভিভাষণ, মরক্কো-সঙ্কট, আমীর-আগমন, দীপনা, আমীর-অভ্যর্থনা।
• বইটির দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশের পর তখনকার বাংলার সরকার এটি বাজেয়াপ্ত করে এবং সিরাজীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।
• সিরাজী তখন ফরাসি শাসিত চন্দননগরে গিয়ে ৮ মাস আত্মগোপন করেন। পরে আত্মসমর্পণ করলে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে।
সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর অন্যান্য রচনা
-
উপন্যাস: রায়নন্দিনী, তারাবাঈ, ফিরোজা বেগম
-
প্রবন্ধ: স্বজাতি প্রেম, তুর্কি নারী জীবন, স্পেনীয় মুসলিম সভ্যতা
-
কাব্যগ্রন্থ: অনল প্রবাহ, উচ্ছ্বাস, উদ্বোধন, স্পেন বিজয় কাব্য
-
ভ্রমণ কাহিনী: তুরস্ক ভ্রমণ
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর), বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago