'মাৎস্যন্যায়' কোন শাসন আমলে দেখা দেয়?
A
সেন শাসন আমলে
B
মোগল শাসন আমলে
C
পাল তাম্র শাসন আমলে
D
খিলজি শাসন আমলে
উত্তরের বিবরণ
বাংলার ইতিহাসে ‘মাৎস্যন্যায়’ শব্দটি ব্যবহার করা হয় এমন একটি সময় বোঝাতে যখন কেন্দ্রীয় শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ে এবং সমাজে শক্তিশালী দুর্বলের ওপর অত্যাচার করে। ৬৫০–৭৫০ খ্রিস্টাব্দের এই অরাজকতার সময় মূলত গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর শুরু হয় এবং পাল শাসনের উত্থানে শেষ হয়।
• ‘মাৎস্যন্যায়’ শব্দের অর্থ বড় মাছ ছোট মাছকে খেয়ে ফেলে, অর্থাৎ শক্তিশালী দুর্বলকে নিপীড়ন করে।
• এই সময়ে স্থানীয় শাসক ও সামন্তরা ক্ষমতার জন্য একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করতো এবং জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতো।
• পাল বংশের প্রথম শাসক গোপাল জনগণের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনেন।
• পাল শাসনের প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই দীর্ঘ অরাজকতা শেষ হয় এবং বাংলা একটি শক্তিশালী সাম্রাজ্যে রূপ নেয়।
0
Updated: 8 hours ago
কার পৃষ্ঠপোষকতায় 'নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়' প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠে?
Created: 45 minutes ago
A
দেবপাল
B
ধর্মপাল
C
বিগ্রহ পাল
D
নারায়ণ পাল
পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শাসক ধর্মপাল শিক্ষা ও জ্ঞানচর্চার উল্লেখযোগ্য সমর্থক ছিলেন। তার শাসনামলে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণার প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য জমি, অর্থ ও অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন, যার ফলে নালন্দা আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করে। এখানে ভারত, তিব্বত, চীন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বহু শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করতে আসত।
-
নালন্দায় দর্শন, যুক্তিবিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও বৌদ্ধশাস্ত্র পড়ানো হত
-
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশাল গ্রন্থাগার, পাঠাগার ও আবাসিক সুবিধা ছিল
-
পাল শাসকদের পৃষ্ঠপোষকতায় বৌদ্ধ ধর্ম ও মহাযান দর্শনের বিস্তার ঘটে
-
এ সময় নালন্দা শুধু ভারতবর্ষ নয়, সমগ্র এশিয়ার শিক্ষা কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়
0
Updated: 45 minutes ago
পাহাড়পুরের 'সোমপুর মহাবিহার' বাংলার কোন শাসন আমলের স্থাপত্য কীর্তির নিদর্শন?
Created: 3 months ago
A
মৌর্য
B
পাল
C
গুপ্ত
D
চন্দ্র
নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরে অবস্থিত সোমপুর মহাবিহার অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকের শুরুর দিকে পাল রাজবংশের শাসনামলে স্থাপিত হয়।
-
এটি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলায় অবস্থিত প্রাচীন বাংলার একটি বৌদ্ধ বিহার।
-
পাহাড়পুরের উৎখননকৃত বিহার কমপ্লেক্সকেই সোমপুর মহাবিহার বলা হয়।
-
পাল বংশের দ্বিতীয় রাজা ধর্মপাল (৭৮১-৮২১ খ্রিঃ) এই বিহার স্থাপন করেন বলে ধারণা করা হয়।
-
ধর্মপালের অসমাপ্ত কাজ তাঁর উত্তরসূরি দেবপালের শাসনামলে সম্পন্ন হয়।
-
বিহারের ধ্বংসাবশেষ থেকে পাওয়া মাটির সিলে উৎকীর্ণ রয়েছে: ‘শ্রী-সোমপুরে-শ্রী-ধর্মপালদেব-মহাবিহারিয়ার্য-ভিক্ষু-সংঘস্য’।
-
পাহাড়পুরকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা হয়। আয়তনে ভারতের নালন্দা মহাবিহারের সঙ্গে এর তুলনা হয়।
-
এটি প্রায় ৩০০ বছর ধরে বৌদ্ধদের অন্যতম ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল।
-
খ্রিষ্টীয় দশম শতকে বিহারের আচার্য ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান।
-
১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এটি আবিষ্কার করেন।
-
১৯৮৫ সালে ইউনেস্কো সোমপুর মহাবিহারকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয়।
0
Updated: 3 months ago
পাল বংশের সর্বশেষ রাজা কে ছিলেন?
Created: 2 weeks ago
A
ধর্মপাল
B
দেবপাল
C
মহীপাল
D
গোবিন্দপাল
পাল বংশ ছিল বাংলার ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল যুগ, যা অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত প্রায় চারশো বছর স্থায়ী ছিল। এই বংশের শাসকরা বৌদ্ধ ধর্মের মহান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং তাঁদের শাসনামলে বাংলা সাহিত্য, শিক্ষা ও স্থাপত্যে নতুন জাগরণ ঘটে। পাল বংশের সূচনা হয় গোপাল নামে এক শক্তিশালী রাজা দ্বারা, আর শেষ রাজা ছিলেন গোবিন্দপাল, যাঁর সময়ে এই রাজবংশের পতন ঘটে।
তথ্যগুলো সংক্ষেপে নিচে তুলে ধরা হলো—
-
পাল বংশের সূচনা:
পাল বংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন গোপাল (প্রায় ৭৫০ খ্রিষ্টাব্দে)। তাঁকে বাংলার জনগণ রাজা হিসেবে নির্বাচন করেছিলেন, যা ছিল গণভোটের মাধ্যমে রাজা নির্বাচনের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। -
প্রধান রাজারা:
ধর্মপাল, দেবপাল, বিগ্রহপাল, মহীপাল, এবং রামপাল—এরা ছিলেন পাল বংশের উল্লেখযোগ্য শাসক। তাঁদের সময়ে বাংলা রাজ্য শুধু একতাবদ্ধই হয়নি, বরং ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলেও প্রভাব বিস্তার করে। -
গোবিন্দপালের শাসনকাল:
গোবিন্দপাল ছিলেন পাল বংশের শেষ রাজা। ধারণা করা হয়, তাঁর শাসনকাল ছিল দ্বাদশ শতকের মধ্যভাগে (প্রায় ১১৬১–১১৮৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত)। এই সময়ে পাল সাম্রাজ্য দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সেন বংশ ক্রমে ক্ষমতা দখল করে। -
রাজনৈতিক অবস্থা:
গোবিন্দপালের সময়ে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা নষ্ট হয়ে যায়। প্রাদেশিক শাসকেরা স্বাধীনতা দাবি করে এবং সাম্রাজ্য ভেঙে ছোট ছোট রাজ্যে পরিণত হয়। ফলে সেন বংশের বল্লাল সেন এই সুযোগে পাল সাম্রাজ্যের পতন ঘটান। -
ধর্ম ও সংস্কৃতি:
পাল শাসকেরা ছিলেন মহাযান বৌদ্ধধর্মের অনুসারী। তাঁরা বিখ্যাত নালন্দা ও বিক্রমশীলা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও রক্ষণাবেক্ষণ করতেন। কিন্তু গোবিন্দপালের সময়ে এই ধর্মীয় ঐতিহ্যও ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়ে। -
অর্থনৈতিক অবস্থা:
শাসনামলের শেষ দিকে রাজকোষ শূন্য হয়ে যায়, বাণিজ্য কমে যায় এবং কৃষিকাজে অব্যবস্থাপনা দেখা দেয়। এসব কারণে প্রশাসনিক ও সামরিক দুর্বলতা আরও বেড়ে যায়। -
পতনের কারণ:
-
দুর্বল উত্তরাধিকার ও প্রশাসনিক অব্যবস্থা
-
আঞ্চলিক শাসকদের বিদ্রোহ
-
সেন রাজবংশের শক্তি বৃদ্ধি
-
মুসলিম শাসনের আগমন
-
-
ঐতিহাসিক গুরুত্ব:
গোবিন্দপালের পতনের মাধ্যমে বাংলা অঞ্চলে বৌদ্ধ শাসনের অবসান ঘটে এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী সেন বংশের উত্থান ঘটে। ইতিহাসে এই পরিবর্তনকে বাংলার রাজনৈতিক ও ধর্মীয় রূপান্তরের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে গণ্য করা হয়।
সবশেষে বলা যায়, গোবিন্দপাল ছিলেন সেই রাজা যাঁর সময়ে বাংলার পাল বংশের দীর্ঘ রাজত্বের পরিসমাপ্তি ঘটে। তাঁর পতনের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ সভ্যতার যুগ শেষ হয়ে নতুন সেন যুগের সূচনা হয়, যা বাংলার ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের জন্ম দেয়।
0
Updated: 2 weeks ago