বাংলার ইতিহাসে আলাউদ্দিন হুসেন শাহকে একজন দক্ষ প্রশাসক, কূটনীতিক ও সংস্কৃতিপ্রেমী শাসক হিসেবে গণ্য করা হয়। তার শাসনকাল ১৪৯৪ থেকে ১৫১৯ সাল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল এবং এ সময় শান্তি, সমৃদ্ধি, সাহিত্য ও সংস্কৃতির বিকাশ ঘটায় এই সময়কে বাংলার মুসলিম শাসনের স্বর্ণযুগ বলা হয়। তার শাসনে সমাজ, অর্থনীতি এবং বাণিজ্য ব্যবস্থা স্থিতিশীল রূপ লাভ করে।

• তার শাসনামলে চট্টগ্রামসহ বন্দরসমূহে বিদেশি বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়

• ফারসি ভাষার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্য, সঙ্গীত ও শিল্পকলার প্রসার ঘটে

• বিদ্রোহ দমন এবং সীমান্ত রক্ষা করে প্রশাসন সুসংগঠিত করেন

• বৈষম্য কমিয়ে হিন্দু-মুসলিম সহাবস্থান শক্তিশালী করেন

• বাংলায় মুসলমান শাসনের সূচনা:

বাংলায় মুসলমান শাসনের সূচনা হয় তুর্কি সেনাপতি ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজির মাধ্যমে।

ত্রয়োদশ শতকের শুরুতে তিনি বাংলার উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে রাজত্বকারী সেন বংশের শাসনের অবসান ঘটান এবং মুসলমান শাসনের ভিত্তি স্থাপন করেন।

ইখতিয়ার উদ্দিন মুহম্মদ বখতিয়ার খলজির বাল্যকাল ও প্রারম্ভিক জীবনের বিস্তারিত তথ্য ইতিহাসে স্পষ্ট নয়।

জানা যায়, তিনি উত্তর আফগানিস্তানের গরমশির (বর্তমান দাস্ত-ই মার্গ) অঞ্চলের বাসিন্দা ছিলেন।

জাতিতে তিনি ছিলেন তুর্কি, বংশে খলজি এবং পেশায় একজন ভাগ্যান্বেষী সৈনিক।

সাহস, দূরদর্শিতা ও সামরিক দক্ষতার মাধ্যমে তিনি বঙ্গ বিজয় করে ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেন।

বাংলার ইতিহাসে ১২০৪ সাল একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক, কারণ এই বছরই ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খলজি বাংলায় মুসলিম শাসনের সূচনা করেন। তার বিজয়ের মাধ্যমে বাংলা দিল্লি সালতানতের নিয়ন্ত্রণে আসে এবং নতুন প্রশাসনিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের পথ তৈরি হয়।

• বখতিয়ার খলজি খুব কম সংখ্যক সেনা নিয়ে নওদিয়া ও গৌড় দখল করেন, যা তার কৌশলগত দক্ষতার প্রমাণ।
• তার শাসন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে বাংলা অঞ্চলে তুর্কি প্রশাসন, ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থা এবং স্থাপত্যের বিস্তার শুরু হয়।
• এই বিজয় পরবর্তীকালে দিল্লি সুলতানদের বাংলা শাসনের ভিত্তি দৃঢ় করে।
• ইতিহাসে এই ঘটনা বাংলার মধ্যযুগীয় মুসলিম শাসনের সূচনা হিসেবে স্বীকৃত।