জাতীয়তাবাদের জনক হিসেবে কে পরিচিত?
A
প্লেটো
B
রুশো
C
ম্যাকিয়াভেলী
D
মন্টেস্কিউ
উত্তরের বিবরণ
একটি জাতির স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও রাজনৈতিক চেতনা গঠনে জাতীয়তাবাদ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাসে ম্যাকিয়াভেলীকে জাতীয়তাবাদের জনক বলা হয়, কারণ তিনি প্রথম জাতিকে রাষ্ট্রগঠনের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেন এবং জনগণের ঐক্যকে সর্বোচ্চ শক্তি হিসেবে দেখান। তাঁর ধারণা পরবর্তীতে আধুনিক জাতীয়তাবাদের ভিত গঠনে সহায়তা করে।
তালিকা আকারে প্রয়োজনীয় তথ্য
• ম্যাকিয়াভেলী (Niccolò Machiavelli, ১৪৬৯–১৫২৭) ইতালীয় রাজনৈতিক চিন্তাবিদ, যিনি বাস্তববাদী রাজনৈতিক তত্ত্বের সূচনা করেন।
• তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ The Prince-এ তিনি রাষ্ট্রের শক্তি, জনগণের ঐক্য ও স্বাধীনতার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
• তিনি মনে করতেন যে একটি জাতি তার স্বার্থ রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ হলে উন্নতি সম্ভব।
• মধ্যযুগীয় ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রচিন্তা ভেঙে তিনি জাতিকেন্দ্রিক রাজনৈতিক ধারণা সামনে আনেন।
• আধুনিক জাতীয়তাবাদের মূল উপাদান—রাষ্ট্র, জনগণ, সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা—এসব ধারণার প্রাথমিক রূপ তাঁর মাধ্যমে স্পষ্ট হয়।
• ইউরোপে জাতীয়তাবাদের বিকাশে তাঁর চিন্তা পরবর্তীকালে ফরাসি বিপ্লবসহ বহু আন্দোলনে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে।
0
Updated: 12 hours ago
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক কে?
Created: 3 weeks ago
A
ম্যাকিয়াভেলী
B
এরিস্টটল
C
সক্রেটিস
D
হেগেল
অ্যারিস্টটলকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কারণ তিনি প্রথম রাষ্ট্র, সরকার ও নাগরিক জীবনের বিশদ বিশ্লেষণ করেন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর রচনা ‘পলিটিক্স (Politics)’ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী গ্রন্থ। এতে তিনি রাষ্ট্রের উৎপত্তি, গঠন, উদ্দেশ্য এবং নাগরিকের ভূমিকা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন।
রাষ্ট্রের স্বাভাবিক উৎপত্তি: তিনি মনে করতেন, মানুষ স্বভাবতই রাজনৈতিক প্রাণী (Political Animal)। তাই সমাজ ও রাষ্ট্র মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন থেকে উদ্ভূত।
-
রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য: তাঁর মতে, রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো নাগরিকদের নৈতিক ও পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
-
সরকারের শ্রেণিবিভাগ: অ্যারিস্টটল রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও গণতন্ত্রকে সুশাসনের রূপ এবং স্বৈরতন্ত্র, অলিগার্কি ও ভ্রান্ত গণতন্ত্রকে কুশাসনের রূপ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
-
নাগরিকের ভূমিকা: তিনি নাগরিককে শুধু বাসিন্দা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে দেখেছেন।
-
আইন ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব: অ্যারিস্টটল জোর দিয়েছেন যে ন্যায়ভিত্তিক আইনই রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব ও কল্যাণ নিশ্চিত করে।
-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা: তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লক্ষ্য, পদ্ধতি ও ক্ষেত্র নির্ধারণ করেন, যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক চিন্তার ভিত্তি হয়ে ওঠে।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এরিস্টটলের অবদান: নিম্নে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এরিস্টটলের উল্লেখযোগ্য অবদানগুলো আলোচনা করা হলো—
১. রাষ্ট্রবিজ্ঞানের একটি পৃথক শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠা: এরিস্টটল প্রথম রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে নীতিশাস্ত্র থেকে পৃথক করে এটিকে স্বতন্ত্র বিজ্ঞান হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো এবং এর কার্যক্রমকে বিজ্ঞানসম্মতভাবে বিশ্লেষণ করেন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে সর্বোচ্চ জ্ঞান শাখা হিসেবে মর্যাদা দেন। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জন্য “Master of Science” বা সর্বোচ্চ বিজ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করেছেন।
২. ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি: এরিস্টটল মনে করতেন যে, রাষ্ট্রে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ স্বৈরাচারের জন্ম দেয়। তিনি ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের পক্ষে ছিলেন এবং সরকারে বিভিন্ন দায়িত্ব পৃথক করার পদ্ধতির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এটি আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ক্ষমতার পৃথকীকরণ নীতির প্রাথমিক ধারণা।
৩. বিপ্লবের তত্ত্ব: এরিস্টটল প্রথম বিপ্লব সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করেন। তিনি বলেছিলেন, যখন মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়, তখন তারা বিপ্লবের পথে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরিস্টটল বিপ্লব প্রতিরোধের এবং রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা রক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তাঁর বিপ্লবের তত্ত্ব আজও রাজনীতির অঙ্গনে গুরুত্বপূর্ণ।
৪. আইনের শাসন এবং সাংবিধানিক শাসন: এরিস্টটল সংবিধান ও আইনের শাসনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। তার মতে, একটি স্থিতিশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে আইন ও সংবিধানের নিয়ম মেনে চলা জরুরি। তিনি মনে করতেন, যেখানে আইন নেই, সেখানে শাসনের কোনো অর্থ নেই।
৫. আইনের সার্বভৌমত্ব: এরিস্টটল ব্যক্তিগত সার্বভৌমত্বের চেয়ে আইনের সার্বভৌমত্বকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। তার মতে, রাষ্ট্রের শক্তি তার আইন অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া উচিত, ব্যক্তির ইচ্ছানুযায়ী নয়। তার এই ধারণা থেকেই আধুনিককালে আইনের শাসনের ধারণা প্রসারিত হয়েছে।
সব মিলিয়ে, রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর বিশ্লেষণ আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এই কারণেই তাঁকে “রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক” বলা হয়।
More Details:
0
Updated: 3 weeks ago
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক কে?
Created: 4 weeks ago
A
ম্যাকিয়াভেলী
B
এরিস্টটল
C
সক্রেটিস
D
হেগেল
অ্যারিস্টটলকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কারণ তিনি প্রথম রাষ্ট্র, সরকার ও নাগরিক জীবনের বিশদ বিশ্লেষণ করেন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর রচনা ‘পলিটিক্স (Politics)’ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী গ্রন্থ। এতে তিনি রাষ্ট্রের উৎপত্তি, গঠন, উদ্দেশ্য এবং নাগরিকের ভূমিকা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন।
রাষ্ট্রের স্বাভাবিক উৎপত্তি: তিনি মনে করতেন, মানুষ স্বভাবতই রাজনৈতিক প্রাণী (Political Animal)। তাই সমাজ ও রাষ্ট্র মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন থেকে উদ্ভূত।
-
রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য: তাঁর মতে, রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো নাগরিকদের নৈতিক ও পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
-
সরকারের শ্রেণিবিভাগ: অ্যারিস্টটল রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও গণতন্ত্রকে সুশাসনের রূপ এবং স্বৈরতন্ত্র, অলিগার্কি ও ভ্রান্ত গণতন্ত্রকে কুশাসনের রূপ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
-
নাগরিকের ভূমিকা: তিনি নাগরিককে শুধু বাসিন্দা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে দেখেছেন।
-
আইন ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব: অ্যারিস্টটল জোর দিয়েছেন যে ন্যায়ভিত্তিক আইনই রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব ও কল্যাণ নিশ্চিত করে।
-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা: তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লক্ষ্য, পদ্ধতি ও ক্ষেত্র নির্ধারণ করেন, যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক চিন্তার ভিত্তি হয়ে ওঠে।
সব মিলিয়ে, রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর বিশ্লেষণ আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এই কারণেই তাঁকে “রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক” বলা হয়।
0
Updated: 4 weeks ago
ইতিহাসের জনক কে?
Created: 4 weeks ago
A
প্লেটো
B
হেরোডোটাস
C
এরিস্টটল
D
সক্রেটিস
হেরোডোটাস ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের একজন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, যাকে “আধুনিক ইতিহাসের জনক” বলা হয়। তিনি ইতিহাসকে গল্প বা কিংবদন্তি হিসেবে নয়, বরং বাস্তব ঘটনা ও গবেষণার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করার প্রথা শুরু করেন। এজন্যই তিনি ইতিহাসচর্চায় এক নতুন ধারার সূচনা করেন।
-
হেরোডোটাসের জন্ম ৪৮৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এশিয়া মাইনরের হ্যালিকারনাসাসে (বর্তমান তুরস্কে) হয়েছিল। তিনি এমন এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেন যখন গ্রিক সভ্যতা জ্ঞান, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে উন্নতির শীর্ষে ছিল। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভ্রমণপ্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবন, সংস্কৃতি ও যুদ্ধ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেন।
-
তাঁর বিখ্যাত রচনা “Histories” (ইতিহাসসমূহ), যেখানে তিনি মূলত গ্রিক ও পারসিক যুদ্ধের (Persian Wars) বিবরণ দেন। বইটিতে যুদ্ধের কারণ, ঘটনার ধারা এবং বিভিন্ন জাতির সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভূগোল সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
-
হেরোডোটাস শুধুমাত্র যুদ্ধের ইতিহাস লেখেননি; তিনি ঘটনাগুলোর পিছনের কারণ বিশ্লেষণ করেছেন এবং মানুষ ও সমাজের আচরণ বোঝার চেষ্টা করেছেন। এ কারণেই ইতিহাসকে তিনি শুধুমাত্র ঘটনার ধারাবিবরণী হিসেবে নয়, বরং গবেষণাভিত্তিক জ্ঞানের শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।
-
তাঁকে প্রায়ই থুসিডাইডিসের সঙ্গে তুলনা করা হয়, যিনি বাস্তববাদী ইতিহাসলেখার জন্য বিখ্যাত। থুসিডাইডিস রাজনৈতিক ও সামরিক ইতিহাসের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন, যেখানে হেরোডোটাস মানবজীবনের বিস্তৃত দিকগুলো তুলে ধরেন।
সব মিলিয়ে, হেরোডোটাস ইতিহাসকে যুক্তি, অনুসন্ধান ও তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপস্থাপন করে ইতিহাসচর্চার নতুন যুগের সূচনা করেন। তাঁর কাজ আজও ইতিহাস গবেষণার ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
0
Updated: 4 weeks ago