রসায়ন শাস্ত্রের জনক হিসেবে কাকে গণ্য করা হয়?
A
এরিস্টটল
B
আইজ্যাক নিউটন
C
জাবির ইবনে হাইয়ান
D
রবার্ট বয়েল
উত্তরের বিবরণ
একজন বিজ্ঞানী হিসেবে জাবির ইবনে হাইয়ান রসায়নের ভিত্তি গঠনে অসাধারণ অবদান রেখেছেন। তাঁর গবেষণা, পরীক্ষণ পদ্ধতি ও বৈজ্ঞানিক মনোভাব আধুনিক রসায়নের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। নিচের পয়েন্টগুলো তাঁর অবদান ও বৈজ্ঞানিক ভূমিকার মূল তথ্য তুলে ধরে।
-
জাবির ইবনে হাইয়ান (৭২১–৮১৫ খ্রি.) ইসলামের স্বর্ণযুগের একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী যাকে আধুনিক রসায়নের জনক বলা হয়।
-
তিনি পরীক্ষাগারভিত্তিক রসায়ন গবেষণার সূচনা করেন এবং বিজ্ঞানকে তত্ত্ব থেকে বাস্তব পরীক্ষার দিকে নিয়ে যান।
-
নাইট্রিক অ্যাসিড, হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি শক্তিশালী অ্যাসিড তৈরির পদ্ধতি প্রথম বর্ণনা করেন।
-
ধাতু বিশুদ্ধকরণ, বাষ্পীভবন, পাতন, স্ফটিকায়নসহ বহু পরীক্ষণ পদ্ধতির উন্নয়ন তাঁর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহ, বিশেষ করে কিতাব আল-কিমিয়া এবং কিতাব আল-সাবাইন, পরবর্তীকালে ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁ যুগের বিজ্ঞানকে গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
-
তাঁর কাজের বৈজ্ঞানিক যুক্তি, পরীক্ষামূলক পদ্ধতি এবং ধাতুবিদ্যার ব্যবহার আধুনিক রসায়নের ভিত্তিভূমি স্থাপন করে।
0
Updated: 6 hours ago
অণুজীব বিজ্ঞানের জনক কে?
Created: 1 month ago
A
রবার্ট কক্
B
লুইস পাস্তুর
C
এডওয়ার্ড জেনার
D
এন্টনি ভন লিউয়েনহুক
বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও জীবাণু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারীদের সংক্ষিপ্ত বিবরণ হলো। প্রথমে ওলন্দাজ বিজ্ঞানী অ্যান্টনি ভন লিউয়েনহুক ১৬৭৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর নিজস্ব আবিষ্কৃত সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে বৃষ্টির পানির এক ফোঁটায় ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন।
তিনি এ ক্ষুদ্র জীবাণুগুলোকে Animalcule অর্থাৎ ক্ষুদ্র প্রাণি নাম দেন। এজন্য তাঁকে Father of Bacteriology বা ব্যাকটেরিওলজির জনক হিসেবে মানা হয়।
-
পরবর্তীতে, জার্মান বিজ্ঞানী এহরেনবার্গ ১৮২৯ খ্রিস্টাব্দে এই জীবাণুগুলোকে ব্যাকটেরিয়া (Bacteria) নামে পরিচিত করেন।
-
ফরাসি বিজ্ঞানী লুই পাস্তুর (Louis Pasteur, ১৮২২-১৮৯৫) ব্যাকটেরিয়ার উপর ব্যাপক গবেষণা করে ব্যাকটেরিয়া তত্ত্ব (Germ Theory of Disease) প্রতিষ্ঠা করেন।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞানী ও তাঁদের অবদান:
-
রবার্ট কক্ (Robert Koch) যক্ষা রোগের জীবাণু আবিষ্কার করেন।
-
লুই পাস্তুর (Louis Pasteur) রোগজীবাণু তত্ত্ব উদ্ভাবন করেন। তিনি জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কার করে টিকাজগতে বিপ্লব ঘটান। এছাড়াও তিনি মুরগির কলেরা, গবাদি পশুর অ্যানথ্রাক্স, এবং পাস্তুরাইজেশন (Pasteurization) পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন।
-
এডওয়ার্ড জেনার (Edward Jenner) ১৭৯৬ খ্রিস্টাব্দে গুটি বসন্তের (Smallpox) টিকা আবিষ্কার করেন। এজন্য তাঁকে প্রতিষেধক বিদ্যার জনক (Father of Immunology) বলা হয়।
0
Updated: 1 month ago
আধুনিক বিজ্ঞানের জনক কে?
Created: 2 weeks ago
A
আইজ্যাক নিউটন
B
আলবার্ট আইনস্টাইন
C
গ্যালিলিও গ্যালিলেই
D
জোহানেস কেপলার
গ্যালিলিও গ্যালিলেই ছিলেন এমন এক বিজ্ঞানী যিনি বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারাকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছিলেন। তিনি পরীক্ষানির্ভর ও পর্যবেক্ষণভিত্তিক গবেষণার মাধ্যমে আধুনিক বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেন। তাই তাঁকে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলা হয়। নিচে তাঁর জীবন, আবিষ্কার ও অবদান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো।
জন্ম ও মৃত্যু: গ্যালিলিও গ্যালিলেই ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৫৬৪ সালে ইতালির পিসা শহরে জন্মগ্রহণ করেন এবং ৮ জানুয়ারি, ১৬৪২ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ ও দার্শনিক ছিলেন।
শিক্ষা ও প্রাথমিক জীবন: গ্যালিলিও প্রথমে চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন শুরু করলেও পরে তিনি গণিত ও প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই তাঁর যুক্তিবাদী চিন্তাধারা বিকশিত হয়।
প্রধান অবদান:
-
দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নয়ন: গ্যালিলিও প্রথম এমন একটি উন্নত দূরবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেন যার সাহায্যে তিনি আকাশ পর্যবেক্ষণ শুরু করেন। এর মাধ্যমে তিনি চাঁদের পাহাড়-খাদ, বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ (Io, Europa, Ganymede, Callisto) এবং শুক্রগ্রহের বিভিন্ন কলা পর্যবেক্ষণ করেন।
-
কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদে সমর্থন: গ্যালিলিও প্রমাণ করেন যে পৃথিবী সূর্যের চারপাশে ঘোরে। এই ধারণা তখনকার সময়ে চার্চের প্রচলিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে যাওয়ায় তিনি ধর্মীয় কর্তৃপক্ষের বিরোধিতার শিকার হন।
-
গতির সূত্রের অবদান: তিনি নিউটনের প্রথম ও দ্বিতীয় গতিসূত্রের ভিত্তি তৈরি করেন। তাঁর পরীক্ষাগুলো থেকে প্রমাণিত হয়, ভারী ও হালকা বস্তু একই গতিতে পড়ে, যা অ্যারিস্টটলের ধারণার বিরোধিতা করে।
-
বিজ্ঞানচর্চায় পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা: গ্যালিলিও বিজ্ঞানের তত্ত্ব যাচাইয়ের জন্য পরীক্ষানির্ভর প্রমাণ ব্যবহারের পদ্ধতি প্রচলন করেন। এই পরীক্ষাধর্মী চিন্তাভাবনাই আধুনিক বিজ্ঞানের মূল ভিত্তি।
বৈজ্ঞানিক বিপ্লবে ভূমিকা: গ্যালিলিওর যুগেই ইউরোপে শুরু হয় “Scientific Revolution” বা বৈজ্ঞানিক বিপ্লব। তাঁর আবিষ্কার ও যুক্তিভিত্তিক গবেষণা পরবর্তীতে নিউটন, কেপলারসহ অন্যান্য বিজ্ঞানীর পথপ্রদর্শক হয়।
ধর্মীয় বিরোধ ও বিচার: গ্যালিলিওর সূর্যকেন্দ্রিক মতবাদ ক্যাথলিক চার্চের শিক্ষার বিপরীতে যাওয়ায় ১৬৩৩ সালে তাঁকে রোমান ইনকুইজিশন আদালতে হাজির হতে হয়। তাঁকে নিজের মতবাদ প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা হলেও পরবর্তীকালে তাঁর তত্ত্বই প্রমাণিত হয় সঠিক।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:
-
Dialogue Concerning the Two Chief World Systems (1632)
-
Sidereus Nuncius (Starry Messenger, 1610)
এই বইগুলোতে তিনি তাঁর জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ ও তত্ত্বগুলো তুলে ধরেন।
গ্যালিলিওর প্রভাব ও উত্তরাধিকার:
-
আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপনে তাঁর অবদান অপরিসীম।
-
পদার্থবিজ্ঞানের পরীক্ষানির্ভর ধারার সূচনা করেন তিনিই।
-
বিজ্ঞানকে ধর্মের প্রভাবমুক্ত করে যুক্তি ও প্রমাণের উপর প্রতিষ্ঠিত করেন।
-
বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং একবার বলেছিলেন, “গ্যালিলিওই আধুনিক বিজ্ঞান জন্ম দিয়েছিলেন; তাঁর চেয়ে বড় অবদান আর কারও নেই।”
গ্যালিলিও শুধু একজন আবিষ্কারকই নন, তিনি ছিলেন বিজ্ঞানের ধারক ও বাহক। তাঁর গবেষণা, যুক্তিবাদী চিন্তা ও পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতি আজকের আধুনিক বিজ্ঞানের মূলভিত্তি গড়ে তুলেছে। তাই তাঁকে যথার্থভাবেই বলা হয় “আধুনিক বিজ্ঞানের জনক।”
0
Updated: 2 weeks ago