বাংলা সাহিত্যধারার প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ হলেন-
A
কাজী নজরুল ইসলাম
B
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
C
বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
D
প্যারীচাঁদ মিত্র
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যধারার প্রতিষ্ঠাতা পুরুষ হলেন প্যারীচাঁদ মিত্র।
-
তিনি “আলালের ঘরের দুলাল” (১৮৫৮) রচনা করে আধুনিক বাংলা উপন্যাস ও গদ্য সাহিত্যের পথিকৃৎ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
-
এই রচনায় তিনি সাধারণ মানুষের ভাষা, হাস্যরস ও বাস্তব জীবনের চিত্রকে সজীবভাবে তুলে ধরেন, যা পূর্ববর্তী সাহিত্যে অনুপস্থিত ছিল।
-
প্যারীচাঁদ মিত্র ‘টেকচাঁদ ঠাকুর’ ছদ্মনামে লেখালেখি করতেন এবং তাঁর লেখায় কলকাতার মধ্যবিত্ত সমাজের নৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক বাস্তবতা ফুটে ওঠে।
-
তিনি বাংলা গদ্যের ভাষাকে সংস্কৃতনির্ভরতা থেকে মুক্ত করে চলিত ও প্রমিত রূপে রূপান্তরিত করেন।
-
তাঁর সাহিত্যধারা থেকেই পরবর্তীতে বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল আধুনিকতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।
-
তাই তাঁকেই বাংলা আধুনিক গদ্য সাহিত্য ও উপন্যাসের সূচনাকারী বলা হয়।
0
Updated: 9 hours ago
দোভাষী পুঁথি বলতে কি বোঝায়?
Created: 3 months ago
A
দুই ভাষায় রচিত পুঁথি
B
কয়েকটি ভাষার শব্দ ব্যবহার করে মিশ্রিত ভাষায় রচিত পুঁথি
C
তৈরি করা কৃত্রিম ভাষায় রচিত পুঁথি
D
আঞ্চলিক বাংলায় রচিত পুঁথি
• পুথি সাহিত্য:
- পুথি সাহিত্য আরবি, উর্দু, ফারসি ও হিন্দি ভাষার মিশ্রণে রচিত এক বিশেষ শ্রেণীর বাংলা সাহিত্য। আঠারো থেকে উনিশ শতক পর্যন্ত এর ব্যাপ্তিকাল। এ সাহিত্যের রচয়িতা এবং পাঠক উভয়ই ছিল মুসলমান সম্প্রদায়।
- পুথি (বা পুঁথি) শব্দের উৎপত্তি ‘পুস্তিকা’ শব্দ থেকে। এ অর্থে পুথি শব্দদ্বারা যেকোনো গ্রন্থকে বোঝালেও পুথি সাহিত্যের ক্ষেত্রে তা বিশেষ অর্থ বহন করে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে একটি বিশেষ সময়ে রচিত বিশেষ ধরণের সাহিত্যই পুথি সাহিত্য নামে পরিচিত।
- হুগলির বালিয়া-হাফেজপুরের কবি ফকির গরীবুল্লাহ (আনু. ১৬৮০-১৭৭০) আমীর হামজা রচনা করে এ কাব্যধারার সূত্রপাত করেন। আরবদেশের ইতিহাস-পুরাণ মিশ্রিত কাহিনি অবলম্বনে রচিত আমীর হামজা জঙ্গনামা বা যুদ্ধ বিষয়ক কাব্য।
- মধ্যযুগে প্রায় পাঁচশ বছর ধরে বাংলা ভাষার যে ঐতিহ্য তৈরি হয়েছিল, তার সঙ্গে এ কাব্যের ভাষার মিল নেই। বাংলা শব্দের সঙ্গে আরবি, ফারসি প্রভৃতি শব্দের মিশ্রণজাত একটি ভিন্ন ভাষায় কাব্যটি রচিত। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় এ কাব্যে ৩২% বিদেশি শব্দের পরিসংখ্যান দিয়েছেন। হুগলি, হাওড়া, কলকাতা, ২৪ পরগনা প্রভৃতি অঞ্চলের মুসলমানদের কথ্যভাষা এর উৎস ছিল বলে মনে করা হয়।
- গরীবুল্লাহ নিজে এবং তাঁর শিষ্য সৈয়দ হামজা এ ভাষায় আরও কয়েকখানি কাব্য রচনা করেন। তাঁদের অনুসরণে পরবর্তীকালে বহু সংখ্যক মুসলমান কবি এ জাতীয় কাব্য রচনা করেন।
- এগুলির পাঠক ছিল সর্বস্তরের মুসলমান; তবে নিম্নবিত্তের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষের কাছে এর জনপ্রিয়তা ছিল সর্বাধিক।
- পুথি সাহিত্যের শব্দসম্ভার ও ভাষারীতি লক্ষ করে বিভিন্ন জন এর বিভিন্ন নামকরণ করেছেন। রেভারেন্ড জেমস লং এ ভাষাকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা’, আর এ ভাষায় রচিত সাহিত্যকে বলেছেন ‘মুসলমানী বাংলা সাহিত্য’।
- কলকাতার বটতলার ছাপাখানার বদৌলতে প্রচার লাভ করে বলে এগুলি ‘বটতলার পুথি’ নামেও পরিচিত হয়।
- গবেষকগণ ভাষা-বৈশিষ্ট্য ও বাক্যরীতির দিক থেকে বিচার করে প্রথমে এগুলিকে দোভাষী পুথি এবং পরবর্তীকালে ‘মিশ্র ভাষারীতির কাব্য’ বলে অভিহিত করেন।
উৎস: বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
পূর্ববঙ্গ-গীতিকার অন্তর্ভুক্ত পালা কোনটি?
Created: 2 months ago
A
মলুয়া
B
দেওয়ান ভাবনা
C
কমলা
D
ভেলুয়া
“ভেলুয়া” পালা
-
“ভেলুয়া” পূর্ববঙ্গ-গীতিকার অন্তর্ভুক্ত একটি জনপ্রিয় পালা, যা পাঁচ খণ্ডে সমাপ্ত।
“ভেলুয়া” পূর্ববঙ্গ-গীতিকার অন্তর্ভুক্ত একটি জনপ্রিয় পালা, যা পাঁচ খণ্ডে সমাপ্ত।
প্রথম খণ্ড
-
শঙ্খপুরের মদন সাধুর কাঞ্চননগরযাত্রা।
-
ভেলুয়ার প্রতি অনুরাগ জন্ম এবং উভয়ের মিলন।
-
মদনের গৃহে প্রত্যাবর্তন ও বন্ধুদের কাছে হৃদয়ের কথা প্রকাশ।
-
মদনের পিতার ঘটক প্রেরণ এবং কৌলীন্যগর্বে ভেলুয়ার পিতার বিবাহপ্রস্তাব প্রত্যাখ্যান।
দ্বিতীয় খণ্ড
-
মদনের পুনরায় কাঞ্চননগরযাত্রা।
-
ভেলুয়াকে গোপনে শঙ্খপুরে নিয়ে আসা।
-
অপহরণের কারণে মদনের পিতা মুরাই সাধুর গৃহবহিষ্কার।
-
মদনের ভেলুয়াসহ রাংচাপুরে যাত্রা ও আবুরাজার দৌরাত্ম্য।
তৃতীয় ও চতুর্থ খণ্ড
-
আবুরাজার দৌরাত্ম্যের বিস্তৃত বিবরণ।
-
আবুরাজার দ্বারা ভেলুয়াকে অন্তঃপুরে আনা।
-
নির্বাসিত স্বামীর উপদেশে ভেলুয়ার হিরণ সাধুর দেশে যাত্রা।
-
হিরণের ভেলুয়ার প্রতি কুদৃষ্টি।
-
হিরণের ভগিনী মেনকার সঙ্গে ভেলুয়ার পলায়ন।
-
নদীতে জাহাজ দেখে আতঙ্কে ভেলুয়া ও মেনকার পতন, পরে এক সাধুবণিক কর্তৃক উদ্ধার।
-
হিরণের ষড়যন্ত্রে মদন বন্দী, মেনকার পরামর্শে মদনের উদ্ধার।
-
বৃদ্ধ সাধুর আশ্রয় থেকে আবুরাজার পুনরায় ভেলুয়া অপহরণ ও অন্তঃপুরে আবদ্ধকরণ।
পঞ্চম খণ্ড
-
চৌগঙ্গায় মদনের আত্মীয়স্বজনের সহায়তায় ভেলুয়ার উদ্ধার।
-
ভেলুয়া ও মদনের বিবাহ।
-
আবুরাজার উপযুক্ত শাস্তি প্রদান।
পূর্ববঙ্গ-গীতিকার অন্যান্য পালা
-
নিজাম ডাকাতের পালা
-
কাফন চোরা
-
চৌধুরীর লড়াই
-
আয়না বিবি
-
ভেলুয়া ইত্যাদি
নিজাম ডাকাতের পালা
কাফন চোরা
চৌধুরীর লড়াই
আয়না বিবি
ভেলুয়া ইত্যাদি
মৈমনসিংহ-গীতিকার অন্তর্ভুক্ত পালা
-
মলুয়া
-
দেওয়ান ভাবনা
-
কমলা
মলুয়া
দেওয়ান ভাবনা
কমলা
উৎস: “ভেলুয়া” পালা, বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা এবং বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 2 months ago
ব্যঙ্গপ্রধান গল্পসংগ্রহ কোনটি?
Created: 2 months ago
A
লিপিমালা
B
রাজাবলি
C
তোতা ইতিহাস
D
ইতিহাসমালা
‘ইতিহাসমালা’
-
প্রকাশ: ১৮১২, উইলিয়াম কেরি
-
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম গল্পসংগ্রহ হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ।
-
গ্রন্থে প্রায় দেড় শতাধিক ইতিহাসাশ্রিত গল্প অন্তর্ভুক্ত।
-
অধিকাংশ গল্প ব্যঙ্গপ্রধান, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় উৎস থেকে সংগৃহীত।
-
গল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
হিতোপদেশ, পঞ্চতন্ত্র প্রভৃতি প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থের কাহিনী
-
অপেক্ষাকৃত আধুনিক গল্প যেমন ধনপতি-খুল্লনা-লহনা, রূপ সনাতন গোস্বামির কাহিনী
-
-
ভাষা ও রচনাশৈলী: ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রাথমিক যুগের ভাষার তুলনায় উন্নত, সুষম ও প্রাঞ্জল গদ্য।
-
কলেজ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে সেরা রচনা হিসেবে স্বীকৃত।
অন্যান্য প্রাসঙ্গিক গ্রন্থ
‘লিপিমালা’
-
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ছাত্রদের চলিত ভাষা ও দেশীয় লোকের ব্যবহার পরিচয় করানোর জন্য পত্রাকারে লিখিত প্রবন্ধ।
‘রাজাবলি’
-
কিংবদন্তি ও লোকপ্রসিদ্ধির ওপর নির্ভর করে রচিত।
-
গদ্যরীতি আরও সুষ্ঠু হয়েছে।
-
আরবি-ফারসি শব্দবহুল হলেও প্রাঞ্জল ভাষা ও রচনাশৈলীর জন্য মৃত্যুঞ্জয়ের শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ।
চণ্ডীচরণ মুনশীর ‘তোতা ইতিহাস’ (১৮০৫)
-
ফারসি থেকে অনুবাদ।
-
পাঠ্যপুস্তক ও গল্পগ্রন্থ হিসেবে যথেষ্ট সমাদর লাভ।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago