‘বাড়ি থেকে’ শব্দগুচ্ছ অপাদান কারকে পঞ্চমী বিভক্তি।
এখানে এটি বোঝাচ্ছে কাজটি কোথা থেকে সম্পন্ন হচ্ছে—অর্থাৎ উৎস বা প্রস্থানস্থান নির্দেশ করছে।

• অপাদান কারক কোনো কর্মের উৎস বা প্রস্থান নির্দেশ করে।

• ‘বাড়ি থেকে’ দ্বারা ক্রিয়ার প্রস্থানস্থান বোঝানো হয়েছে।

• বাক্যে ‘থেকে’ ব্যবহার পঞ্চমী বিভক্তি নির্দেশ করে।

• অন্যান্য বিকল্প যেমন অধিকরণ কারকে সপ্তমী বা তৃতীয়া—এখানে প্রযোজ্য নয়।

• তাই ‘বাড়ি থেকে’ হলো অপাদান কারকে পঞ্চমী বিভক্তি।

অপাদান কারক

অপাদান কারক হলো সেই কারক যা নির্দেশ করে কোনো কিছু কোথা থেকে, কি থেকে বা কিসের থেকে উৎপত্তি, বিচ্যুতি, গ্রহণ, আরম্ভ বা রক্ষা পায়। সহজভাবে বললে, বাক্যের ক্রিয়াকে যদি আমরা “কোথা থেকে?”, “কি থেকে?” বা “কিসের থেকে?” প্রশ্ন করি এবং উত্তর পাই, সেটিই অপাদান কারক।

উদাহরণ:

1. ট্রেন স্টেশন ছেড়েছে।

   • এখানে ট্রেন ‘স্টেশন’ থেকে চলা শুরু করেছে বা বিচ্যুত হয়েছে।

   • ‘স্টেশন’ শব্দের সাথে কোনো বিভক্তি নেই, তাই এটি শূন্য বিভক্তির অপাদান কারক।

2. ‘জিজ্ঞাসিব জনে জনে’ – এখানে ‘জনে জনে’ হলো সপ্তমী বিভক্তির অপাদান কারক।

3. ‘গৃহহীনে গৃহ দাও’ – ‘গৃহহীনে’ শব্দটি সম্প্রদানের সপ্তমী বিভক্তি হিসেবে ব্যবহৃত।

4. ‘বনে বাঘ আছে।’

   • ক্রিয়াকে যদি ‘কোথায় আছে?’ দিয়ে প্রশ্ন করা হয়, উত্তর হবে ‘বনে’।

   • তাই ‘বন’ শব্দটি অধিকরণ কারক হিসেবে সপ্তম বিভক্তিতে ব্যবহৃত।

উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর

“সব ঝিনুকে মুক্তা মিলে না” বাক্যে ‘ঝিনুকে’ শব্দের কারক হলো অপাদান, সপ্তমী বিভক্তি।

ব্যাখ্যা:

• এখানে ‘ঝিনুক’ শব্দের সঙ্গে ‘এ’ যুক্ত হয়েছে, যা অপাদান কারক নির্দেশ করে, অর্থাৎ কোন কিছু থেকে কিছু প্রাপ্তি বা লাভ বোঝায়।

• অপাদান কারক সাধারণত কোনো বিষয় বা বস্তু থেকে কিছু পাওয়া বা প্রাপ্তি নির্দেশ করে।

• সপ্তমী বিভক্তি মানে হলো কারক ও ক্রিয়ার মধ্যে সম্পর্ক নির্দেশ করা, যেমন কোথা থেকে বা কিসের মাধ্যমে কিছু হচ্ছে তা বোঝানো।

• উদাহরণ: ঝিনুক থেকে মুক্তা মিলে → অর্থাৎ ঝিনুকের মধ্য থেকে মুক্তা প্রাপ্তি হয়েছে।

• অন্য কারক যেমন কর্তা, অধিকরণ বা কর্ম এখানে প্রযোজ্য নয়।

• তাই প্রমিত ও অর্থগত সঠিক উত্তর হলো (খ) অপাদানে, সপ্তমী বিভক্তি, যা বাক্যর অর্থ ও ব্যাকরণ উভয়ই সঠিকভাবে নির্দেশ করে।