জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসটির পটভূমিকা হলো-
A
৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ
B
বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন
C
একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন
D
এর কোনোটিই নয়
উত্তরের বিবরণ
জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের পটভূমিকা হলো একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলন।
-
উপন্যাসটি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে রচিত, যেখানে বাংলা ভাষার জন্য সংগ্রামরত সাধারণ মানুষের চিত্র ফুটে উঠেছে।
-
চরিত্রদের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে কীভাবে মাতৃভাষার প্রতি ভালোবাসা ও সংগ্রাম তাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত।
-
প্রধান চরিত্ররা সরাসরি আন্দোলনে অংশ নেয়, যা তাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে।
-
জহির রায়হান উপন্যাসে ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক ও সামাজিক প্রভাবকে জীবন্তভাবে তুলে ধরেছেন।
-
উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে ভাষা আন্দোলনকে সাহিত্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে মূল্যায়ন করার গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
-
এটি পাঠকের মধ্যে জাতীয় চেতনা, ঐক্য এবং ভাষার মর্যাদা সংরক্ষণের গুরুত্ব বোঝাতে সহায়ক।
-
সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে এই পটভূমিকা উপন্যাসের মূল কাঠামো ও ভাবধারাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে।
0
Updated: 5 hours ago
'হাজার বছর ধরে' উপন্যাসখানা কার রচনা?
Created: 2 weeks ago
A
আবদুল্লাহ আল মুতী
B
জহির রায়হান
C
আমজাদ হোসেন
D
মুনীর চৌধুরী
উ. খ) জহির রায়হা্ন
বাংলা উপন্যাসের ইতিহাসে ‘হাজার বছর ধরে’ একটি কালজয়ী সৃষ্টি হিসেবে পরিচিত। এই উপন্যাসের রচয়িতা জহির রায়হান, যিনি একাধারে ছিলেন সাহিত্যিক, চলচ্চিত্রকার ও মুক্তিযুদ্ধকালীন শহিদ বুদ্ধিজীবী। তাঁর এই উপন্যাসে বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবনের বাস্তব চিত্র এবং সমাজের ভেতরকার অসাম্যকে অত্যন্ত সংবেদনশীলভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
উপন্যাসটি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়। এতে গ্রামের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা, তাদের প্রেম, বঞ্চনা, ধর্মীয় ভেদাভেদ ও সামাজিক কুসংস্কারের চিত্র অত্যন্ত জীবন্তভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক মানবিক অনুভূতির সঙ্গে রাজনৈতিক সচেতনতার এক দুর্দান্ত মিশ্রণ ঘটিয়েছেন, যা উপন্যাসটিকে সময়ের সীমা ছাড়িয়ে এক সার্বজনীন শিল্পকর্মে পরিণত করেছে।
এই উপন্যাসের মূল বিষয় হলো মানবপ্রেম ও সামাজিক বাস্তবতা। জহির রায়হান সমাজে বিদ্যমান শ্রেণি-বৈষম্য, নারী নির্যাতন এবং ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর হিসেবে উপন্যাসটি রচনা করেন। চরিত্রগুলোর জীবনসংগ্রাম, দুঃখ-কষ্ট ও প্রেমের গল্পের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের মাটির গন্ধ ও মানুষের মনের গভীরতা তুলে ধরেছেন।
বিশেষ দিকগুলো হলো:
-
বাস্তবধর্মী বর্ণনা: গ্রামীণ মানুষের জীবন ও সংগ্রাম অত্যন্ত বাস্তব ও সহানুভূতিপূর্ণভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
-
চরিত্রচিত্রণ: উপন্যাসের প্রতিটি চরিত্র যেমন তহুরা, আয়নাল, মালঞ্চী ইত্যাদি জীবন্ত ও মানবিক রূপে ফুটে উঠেছে।
-
ভাষার ব্যবহার: সরল, সাবলীল ও আঞ্চলিক টানযুক্ত ভাষা উপন্যাসটিকে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
-
সামাজিক বার্তা: ধর্মীয় ও সামাজিক ভেদাভেদকে অতিক্রম করে মানবিক মূল্যবোধে ঐক্য স্থাপনের আহ্বানই এই উপন্যাসের মূল বার্তা।
‘হাজার বছর ধরে’ শুধু একটি সাহিত্যকর্ম নয়; এটি বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক চেতনার প্রতীক। জহির রায়হানের এই উপন্যাস পরবর্তীকালে চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয় এবং ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তাঁর এই সৃষ্টি বাংলা সাহিত্যের আধুনিক ধারায় বাস্তববাদ ও মানবিকতার সংমিশ্রণের এক অনন্য নিদর্শন হিসেবে আজও পাঠকের হৃদয়ে অম্লান।
0
Updated: 2 weeks ago
‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসের লেখক কে?
Created: 1 month ago
A
শহীদুল্লা কায়সার
B
হুমায়ূন আহমেদ
C
জহির রায়হান
D
মাইকেল মধুসূদন দত্ত
‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি বাংলাদেশের কথাসাহিত্যের এক অনন্য নিদর্শন, যার রচয়িতা জহির রায়হান। এই উপন্যাসে বাঙালির গ্রামীণ সমাজ, সংস্কৃতি ও চিরন্তন জীবনের ছাপ গভীরভাবে ফুটে উঠেছে। লেখক তাঁর অসাধারণ বর্ণনাশৈলীতে আবহমান বাংলার চিত্র এক অনন্য বাস্তবতায় উপস্থাপন করেছেন।
-
‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়।
-
এতে আবহমান বাংলার জীবন, প্রকৃতি, সমাজ ও জনপদকে কেন্দ্র করে কাহিনি গড়ে উঠেছে।
-
উপন্যাসে টুনি চরিত্রটি সবচেয়ে জীবন্ত, যেখানে অন্যান্য চরিত্রগুলো মৃত বা বিবর্ণ রূপে প্রতিফলিত।
-
প্রধান চরিত্রগুলো হলো: মন্ত, টুনি ও বুড়ো মকবুল।
-
এই উপন্যাসের জন্য জহির রায়হান আদমজী সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
-
উপন্যাসে লেখক সমাজের অবক্ষয়, কুসংস্কার, শ্রেণিবৈষম্য ও মানবিক বেদনার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।
-
টুনি চরিত্রের মাধ্যমে নারীর অবদমন ও তার প্রতিরোধের শক্তি তুলে ধরা হয়েছে।
-
উপন্যাসে প্রতীকীভাবে বাংলা মাটির স্থায়িত্ব ও বাঙালির জীবনসংগ্রামের ধারাবাহিকতা প্রকাশ পেয়েছে।
জহির রায়হান সম্পর্কিত তথ্য:
-
তিনি ছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত কথাশিল্পী, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও স্বাধীনচেতা বুদ্ধিজীবী।
-
জন্ম: ১৯৩৫ সালে ফেনী জেলার মজিপুর গ্রামে।
-
প্রকৃত নাম: মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ।
-
তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের প্রথম রঙিন সিনেমা ‘সঙ্গম’-এর পরিচালক।
-
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
-
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গণহত্যা নিয়ে তিনি ‘স্টপ জেনোসাইড’ নামে বিখ্যাত প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করেন।
-
ভাষা আন্দোলনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রচিত তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাস ‘আরেক ফাল্গুন’।
-
১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনি মিরপুর থেকে নিখোঁজ হন এবং আর ফিরে আসেননি।
জহির রায়হানের অন্যান্য উপন্যাস:
১. হাজার বছর ধরে
২. আর কতদিন
৩. শেষ বিকেলের মেয়ে
৪. তৃষ্ণা
৫. আরেক ফাল্গুন
৬. বরফ গলা নদী
৭. কয়েকটি মৃত্যু
জহির রায়হানের সাহিত্য ও চলচ্চিত্রকর্ম বাঙালি জাতিসত্তার মুক্তি, সংগ্রাম ও মানবিক চেতনার প্রতীক হিসেবে আজও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।
0
Updated: 1 month ago
কোনটি জহির রায়হান রচিত উপন্যাস?
Created: 1 month ago
A
সোনার কাজল
B
শেষ বিকেলের মেয়ে
C
জীবন থেকে নেয়া
D
সূর্যগ্রহণ
‘শেষ বিকেলের মেয়ে’ (১৯৬০) জহির রায়হানের প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস, যা ধারাবাহিকভাবে ‘সাপ্তাহিক বিজলী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল।
-
‘জীবন থেকে নেয়া’ (১৯৭০): ভাষা আন্দোলনভিত্তিক চলচ্চিত্র, যেখানে প্রথমবার জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
-
‘সোনার কাজল’ (১৯৬২): জহির রায়হানের চলচ্চিত্র।
-
‘সূর্যগ্রহণ’ (১৯৫৫): জহির রায়হানের গল্পগ্রন্থ।
জহির রায়হানের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসসমূহ:
-
‘হাজার বছর ধরে’ (১৯৬৪): আবহমান বাংলার জীবন ও জনপদ প্রতিপাদ্য। ১৯৬৪ সালে ‘আদমজী সাহিত্য পুরস্কার’ লাভ করেন। উপন্যাস অবলম্বনে স্ত্রী কোহিনুর আক্তার সুচন্দা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন, যা ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’ জিতে। চরিত্র: টুনি, মন্তু, মকবুল।
-
‘আরেক ফাল্গুন’ (১৯৬৮): ১৯৪৮–৫২ সালের আন্দোলন, ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহণ, জনতার সম্মিলন ও প্রেম-প্রণয় ভিত্তিক ভাষা আন্দোলনভিত্তিক প্রথম উপন্যাস।
-
‘আর কত দিন’ (১৯৭০): মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব সময়ের সামাজিক-রাজনৈতিক অস্থিরতা, যুদ্ধের সম্ভাবনা, লাঞ্ছিত মানবতার আর্তি, শান্তি ও ভালোবাসার জন্য মানুষের অন্বেষা। চরিত্র ইভা ও তপু শান্তি ও ভালোবাসার প্রতীক।
-
‘তৃষ্ণা’ (১৯৬২)
-
‘বরফ গলা নদী’ (১৯৬৯)
-
‘কয়েকটি মৃত্যু’ (১৯৬৫)
0
Updated: 1 month ago