কোনটি জলজ আবহাওয়াজনিত (hydro-meteorology) দুর্যোগ নয়?
A
ভুমিকম্প
B
ভুমিধস
C
নদিভাঙ্গন
D
ঘূর্ণিঝড়
উত্তরের বিবরণ
জলজ আবহাওয়াজনিত বা Hydro-meteorological দুর্যোগ এমন এক ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যা মূলত জলবায়ু, পানি ও আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে সৃষ্টি হয়। এই দুর্যোগগুলো মানবজীবন, কৃষি ও পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এ ধরনের দুর্যোগের উদাহরণ হলো— ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, নদীভাঙন, ভারী বর্ষণ, ভূমিধস ইত্যাদি। এসবের মূল কারণ বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদান যেমন— আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাত, বায়ুচাপ, তাপমাত্রা ও বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন।
অন্যদিকে, ভূমিকম্প (Earthquake) হলো একটি ভূতাত্ত্বিক বা Geophysical দুর্যোগ, যার উৎপত্তি সম্পূর্ণভাবে পৃথিবীর অভ্যন্তরস্থ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত। এটি ঘটে টেকটোনিক ফল্ট বা ভূত্বকের নড়াচড়ার কারণে, যেখানে ভূস্তরের চাপ সঞ্চিত হয়ে হঠাৎ মুক্তি পায় এবং ভূমিকম্পের সৃষ্টি করে। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জলবায়ু, তাপমাত্রা বা বৃষ্টিপাতের কোনো প্রত্যক্ষ সম্পর্ক নেই।
অতএব, ভূমিকম্পকে জলজ আবহাওয়াজনিত দুর্যোগ বলা যায় না; এটি একেবারেই পৃথক প্রকৃতির দুর্যোগ, যা পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ শক্তি ও ভূতাত্ত্বিক গতিবিধির ফল।
0
Updated: 14 hours ago
নিম্নের কোন দুর্যোগটি বাংলাদেশের জনগণের জীবিকা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলতে পারে?
Created: 12 hours ago
A
ভূমিকম্প
B
সমুদ্রের জলস্তরের বৃদ্ধি
C
ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছাস
D
খরা বা বন্যা
বাংলাদেশ একটি নিম্নভূমি বিশিষ্ট উপকূলীয় দেশ, যার ভূগোলগত অবস্থান একে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সমুদ্রের জলস্তর ধীরে ধীরে বাড়ছে, যা বাংলাদেশের উপকূলীয় জনপদ, কৃষি ব্যবস্থা এবং সামুদ্রিক অর্থনীতির ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। এই প্রক্রিয়া শুধু ভৌগোলিক নয়, বরং সামাজিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও দীর্ঘমেয়াদী সংকট তৈরি করতে পারে।
-
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি উপকূলীয় অঞ্চলের বৃহৎ অংশকে ডুবিয়ে দিতে পারে। এর ফলে চাষযোগ্য জমি লবণাক্ত হয়ে পড়বে, উর্বরতা কমে যাবে এবং কৃষিজ উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
-
মৎস্য সম্পদ হ্রাস পাবে, কারণ লবণাক্ততা বৃদ্ধির ফলে নদী ও উপকূলীয় পানির প্রতিবেশ ব্যবস্থা পরিবর্তিত হবে, যা মাছের প্রজনন ও টিকে থাকার পরিবেশ নষ্ট করবে।
-
মানুষের জীবিকা ও স্থানান্তর বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। বহু পরিবার বন্যা ও ভূমি হারানোর কারণে জলবায়ু শরণার্থীতে পরিণত হতে পারে, ফলে শহরমুখী অভিবাসন বাড়বে।
-
অবকাঠামো ও অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে—রাস্তা, ঘরবাড়ি, স্কুল, এবং বন্দর এলাকাগুলো প্লাবিত হয়ে উপকূলীয় অর্থনীতির স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।
-
এই পরিবর্তনের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব অপরিবর্তনীয়, কারণ একবার উপকূলীয় পরিবেশে লবণাক্ততা ও ক্ষয় শুরু হলে তা পুনরুদ্ধার করতে দশকের পর দশক লেগে যায়।
সুতরাং, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য একটি ধারাবাহিক জলবায়ু সংকট, যা মোকাবেলায় উপকূলীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার, টেকসই কৃষি উদ্ভাবন এবং অভিযোজনমূলক পরিকল্পনা গ্রহণ অপরিহার্য।
0
Updated: 12 hours ago
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় নীতিমালা ২০১৫ কবে জারি হয়েছে?
Created: 7 hours ago
A
১ জানুয়ারী
B
১১ জানুয়ারী
C
১৯ জানুয়ারী
D
২১ মার্চ
বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য একটি শক্তিশালী আইনগত কাঠামো গঠনের অংশ হিসেবে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১২ প্রণয়ন করে, যার উদ্দেশ্য ছিল প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে কার্যকর প্রস্তুতি, প্রতিরোধ ও পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করা। এই আইনের ধারাবাহিকতায় সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০১৫ প্রণয়ন করে, যা ২০১৫ সালের ১৯ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
বিধিমালাটিতে দুর্যোগকালীন কার্যক্রম পরিচালনা, সতর্কতা জারি, ত্রাণ বিতরণ এবং উদ্ধার কার্যক্রমের পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। বিশেষ করে, এটি ঘূর্ণিঝড় সতর্কীকরণ ব্যবস্থাকে আধুনিক ও কাঠামোবদ্ধ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন স্তরের সংকেত সংখ্যা নির্ধারণ করে।
১. সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১টি সতর্কতা ও হুশিয়ারি সংকেত নির্ধারণ করা হয়েছে, যা ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ, তীব্রতা ও সম্ভাব্য ক্ষতির মাত্রার ওপর ভিত্তি করে জারি করা হয়।
২. নদীবন্দরের জন্য ৪টি সতর্কতা সংকেত রাখা হয়েছে, যাতে অভ্যন্তরীণ নৌযান ও নদীপথের যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
এই বিধিমালা কার্যকর হওয়ার ফলে দুর্যোগের আগে, চলাকালীন এবং পরবর্তী সময়ে সরকারের সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ সহজ হয়। পাশাপাশি এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি, প্রশাসনিক সংস্থা ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টনের নির্দেশনা প্রদান করে। বিধিমালার বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা আরও কার্যকর ও বিজ্ঞানভিত্তিক হয়েছে, যা জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
0
Updated: 7 hours ago
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন কাজকে পর্যায়ক্রম অনুযায়ী সাজাতে হলে কোন কাজটি সরবপ্রথম হবে?
Created: 7 hours ago
A
পুনর্বাসন
B
ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ
C
দুর্যোগ প্রস্তুতি
D
দুর্যোগ প্রশমণ কর্মকাণ্ড
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা হলো একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি হ্রাস করে দ্রুত পুনরুদ্ধার নিশ্চিত করা যায়। কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য প্রতিটি ধাপ সুনির্দিষ্টভাবে অনুসরণ করা জরুরি। সাধারণভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার মূল ধাপগুলো হলো: ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ → দুর্যোগ প্রশমণ → দুর্যোগ প্রস্তুতি → প্রতিক্রিয়া → পুনর্বাসন।
১. ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ (Risk Identification): এটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রাথমিক ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এই পর্যায়ে নির্দিষ্ট এলাকার প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট বিপদের ধরন, সম্ভাব্য ক্ষতি এবং জনগোষ্ঠীর দুর্বলতা বিশ্লেষণ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ, উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় বা জলোচ্ছ্বাসের ঝুঁকি চিহ্নিত করলে পরবর্তী প্রশমণ পরিকল্পনা গ্রহণ সহজ হয়।
২. দুর্যোগ প্রশমণ (Mitigation): ঝুঁকি হ্রাসের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ যেমন বাঁধ নির্মাণ, বনায়ন, বা দুর্বল অবকাঠামো শক্তিশালীকরণ করা হয়। এর লক্ষ্য হলো ক্ষয়ক্ষতি ন্যূনতম করা।
৩. দুর্যোগ প্রস্তুতি (Preparedness): জনগণ ও প্রশাসনকে সচেতন করা, আগাম সতর্কবার্তা প্রদান, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা এবং উদ্ধার প্রশিক্ষণ প্রদান এই ধাপের অন্তর্ভুক্ত।
৪. প্রতিক্রিয়া (Response): দুর্যোগ সংঘটিত হলে তাৎক্ষণিক উদ্ধার, ত্রাণ ও চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এটি মানবিক সহায়তার সবচেয়ে সক্রিয় ধাপ।
৫. পুনর্বাসন (Rehabilitation): ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ ও অবকাঠামো পুনর্গঠনের কাজ সম্পন্ন হয়, যাতে সমাজ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার কার্যকারিতা নির্ভর করে ঝুঁকি চিহ্নিতকরণের যথার্থতার ওপর। কারণ ঝুঁকি সঠিকভাবে নিরূপণ না করা হলে পরবর্তী প্রশমণ ও প্রতিক্রিয়া কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।
0
Updated: 7 hours ago