“পলল পাখা” জাতীয় ভূমিরূপ গড়ে ওঠে-
A
পাহাড়ের পাদদেশে
B
নদীর নিম্ন অববাহিকায়
C
নদীর উৎপত্তিস্থলে
D
নদী মোহনায়
উত্তরের বিবরণ
“পলল পাখা” (Alluvial Fan) হলো একটি স্বতন্ত্র ভূমিরূপ, যা গঠিত হয় যখন পাহাড়ি এলাকা থেকে নেমে আসা নদী বা ঝর্ণার পানি সমভূমিতে প্রবেশের সময় গতি হারায়। পানির এই গতিহ্রাসের ফলে নদীর বয়ে আনা বালি, কাদা, নুড়ি ও অন্যান্য পলল পদার্থ নিচের দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং পাখার মতো আকৃতি ধারণ করে। এই কারণেই একে “পলল পাখা” বলা হয়।
মূল বৈশিষ্ট্য ও গঠন প্রক্রিয়া:
-
গঠনের স্থান: সাধারণত পর্বত ও সমভূমির সংযোগস্থলে, যেখানে নদীর ঢাল হঠাৎ কমে যায়।
-
গঠনের কারণ: নদীর প্রবাহের গতি হ্রাস, ফলে পানিতে থাকা পলল পদার্থ জমে পাখার মতো বিস্তৃত স্তর তৈরি করে।
-
উপাদান: মূলত বালি, কাদা, নুড়ি, পাথরের খণ্ড ও মাটি, যা ধীরে ধীরে একত্র হয়ে উঁচু থেকে নিচের দিকে ঢালু আকার নেয়।
-
উদাহরণ: হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত তেরাই অঞ্চল, যেখানে পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীগুলোর পলল জমে বৃহৎ আকারের পলল পাখা গঠন করেছে।
অন্য ভূমিরূপের সঙ্গে পার্থক্য:
-
নদীর নিম্ন অববাহিকায়: এখানে পলল জমে বন্যা সমভূমি (Flood Plain) তৈরি হয়, পলল পাখা নয়।
-
নদীর উৎপত্তিস্থলে: এ অঞ্চলে ভূমিরূপ সাধারণত পর্বতীয় ও ক্ষয়জাত, যেমন উপত্যকা বা গিরিখাত, তাই পলল পাখা গঠিত হয় না।
-
নদীর মোহনায়: পলল জমে গঠন করে ডেল্টা, যেমন—গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র মোহনায় সুন্দরবন ডেল্টা।
সারসংক্ষেপে, পাহাড় থেকে নেমে আসা পানির গতি যখন হঠাৎ কমে যায়, তখন সেই স্থানে জমা হওয়া পলল দিয়ে গঠিত হয় পাখার মতো বিস্তৃত ভূমিরূপ “পলল পাখা”, যা ভূ-গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শন।
0
Updated: 14 hours ago