উত্তর: গ) কাজী নজরুল ইসলাম
‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসটি রচনা করেন কাজী নজরুল ইসলাম, যিনি বাংলা সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত কবি, লেখক ও বিদ্রোহী চেতনাসম্পন্ন সাহিত্যিক। নজরুল ইসলাম শুধু কাব্য রচনায়ই নয়, গদ্য, নাটক ও সংগীতেও অসাধারণ অবদান রেখেছেন। ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসটি তাঁর মানবপ্রেম ও সামাজিক বোধের প্রতিফলন।
উপন্যাসটি মূলত সামাজিক অসাম্য, দারিদ্র্য ও মানুষের সংগ্রামের গল্প তুলে ধরে। নজরুল এখানে দারিদ্র্য ও শোষণের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিরোধ ও জীবনযাত্রার বাস্তবতা চিত্রিত করেছেন। তাঁর লেখনীর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো জীবন্ত চরিত্র, মানবিক সংবেদনশীলতা এবং সমাজবিচারের প্রতি গভীর দৃষ্টি।
কাজী নজরুল ইসলামের সাহিত্যকর্মের মূল বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
-
বিপ্লবী মনোভাব: নজরুল ইসলাম দারিদ্র্য, শোষণ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি প্রতিফলন ঘটান। ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসেও তিনি সামাজিক বৈষম্যের চিত্র অঙ্কিত করেছেন।
-
মানবিকতা: উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম এবং দারিদ্র্যের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধের প্রতিফলন।
-
ভাষা ও শিল্প: নজরুলের ভাষা সরল, প্রাণবন্ত এবং চরিত্রের মানসিক অবস্থা যথাযথভাবে ফুটিয়ে তোলা। তিনি পাঠককে গল্পের সঙ্গে আবদ্ধ করে রাখেন।
-
সামাজিক সচেতনতা: তাঁর রচনাগুলো শুধু বিনোদন নয়, বরং সামাজিক ও রাজনৈতিক বিষয়েও পাঠককে সচেতন করে। ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসের মাধ্যমে সমাজের দারিদ্র্য, অবিচার ও অসাম্য তুলে ধরা হয়েছে।
-
সংগ্রামী চরিত্র: উপন্যাসের চরিত্রগুলো সাধারণ মানুষ হলেও তাঁদের সংকল্প, ধৈর্য ও প্রতিরোধের গল্প নজরুলের মানবপ্রেমকে প্রতিফলিত করে।
‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসটি কেবল সাহিত্যকর্ম হিসেবে নয়, বরং সমাজচেতনার দৃষ্টিকোণ থেকে গুরুত্বপূর্ণ। এটি আমাদের দেখায়, কীভাবে মানুষের জীবনের কষ্ট, দারিদ্র্য ও শোষণের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়। নজরুল ইসলামের এই সাহিত্যকর্ম বাংলার সাহিত্য জগতে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে, কারণ এটি শুধু গল্প বলার মাধ্যম নয়, এটি সমাজের আভ্যন্তরীণ সমস্যা ও মানবিক দৃষ্টিকোণ উন্মোচন করে।
সারসংক্ষেপে, ‘মৃত্যুক্ষুধা’ উপন্যাসের রচয়িতা কাজী নজরুল ইসলাম, এবং তাঁর সমাজবোধ, বিপ্লবী মনোভাব ও মানবিক সংবেদনশীলতা উপন্যাসের প্রতিটি পাতায় প্রতিফলিত হয়েছে। তাই এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো গ) কাজী নজরুল ইসলাম।