এই বাক্যে ‘বুলবুলিতে’ শব্দটি বিষয়বাচক এবং কর্তার ভূমিকা পালন করছে। বাক্যের মূল ভাব হচ্ছে— ‘বুলবুলি ধান খেয়েছে’, অর্থাৎ ধান খাওয়ার কাজটি করেছে বুলবুলি। এখানে কর্তা হিসেবে বুলবুলি শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে এবং তার সঙ্গে সপ্তমী বিভক্তি ‘-ই’ যুক্ত হয়ে ‘বুলবুলিতে’ রূপ ধারণ করেছে।

এই বিশ্লেষণকে পরিষ্কারভাবে বোঝানো যায় নিচেরভাবে—

• ‘বুলবুলিতে’ কর্তা কারক: বাক্যে ক্রিয়া সম্পাদনকারী বা কাজের করণকারী পদটিই কর্তা কারক। এখানে ‘ধান খেয়েছে’ ক্রিয়ার কর্তা হচ্ছে বুলবুলি। তাই এটি কর্তা কারকে ব্যবহৃত হয়েছে।

• ‘-ই’ সপ্তমী বিভক্তি: বুলবুলি শব্দে যে ‘-ই’ যুক্ত হয়েছে, সেটিই সপ্তমী বিভক্তির চিহ্ন। সপ্তমী বিভক্তি সাধারণত কর্তা কারকে সংযোজনের মাধ্যমে কর্ম বা ক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক প্রকাশ করে।

• বাক্যরূপ বিশ্লেষণ:

  • মূল বাক্য: বুলবুলি ধান খেয়েছে।

  • বিভক্তিযুক্ত রূপ: বুলবুলিতে ধান খেয়েছে।

  • এখানে ‘বুলবুলি’ → ‘বুলবুলিতে’ = সপ্তমী বিভক্তি প্রয়োগ।

• বিভক্তির কার্য: সপ্তমী বিভক্তি কর্তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্তার প্রতি জোর বা স্পষ্টতা আনে। যেমন, ‘ছেলেটিই কাজ করেছে’— এখানে ‘-ই’ কর্তার ওপর জোর নির্দেশ করে। তেমনি, ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে’ বাক্যে ‘বুলবুলিতে’ শব্দে বুলবুলির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

• বাক্যের গঠনগত দিক: এই বাক্যে কোনো কর্মকারক বা অধিকরণ নেই; একমাত্র কর্তা ‘বুলবুলি’ এবং ক্রিয়া ‘খেয়েছে’। বিভক্তি ‘-ই’ কর্তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কর্তা কারককেই প্রকাশ করছে।

• অর্থের দিক থেকে: এটি এমন একটি বাক্য যেখানে কর্তা স্পষ্ট এবং ক্রিয়া সম্পূর্ণ। ‘ধান খাওয়ার’ ক্রিয়া সম্পাদন করেছে ‘বুলবুলি’, তাই এটি কর্তা কারকে সপ্তমী বিভক্তি যুক্ত শব্দ।

সুতরাং ‘বুলবুলিতে ধান খেয়েছে’ বাক্যে ‘বুলবুলিতে’ শব্দটি কর্তায় সপ্তমী বিভক্তি, কারণ এখানে কর্তা (বুলবুলি) সপ্তমী বিভক্তি নিয়ে ক্রিয়ার করণকারক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

বাক্যটি “শুক্রবার বিদ্যালয় বন্ধ থাকে”–এ ‘বিদ্যালয়’ শব্দটি বাক্যের মূল বিষয় বা কর্তা হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। কর্তা সাধারণত কোনো কাজ সম্পাদন করে বা অবস্থান নির্দেশ করে এবং বাংলায় কর্তার সঙ্গে শূন্য বিভক্তি যুক্ত থাকে।

‘বিদ্যালয়’ এখানে কর্তা হওয়ায় তা কর্তাকারকে ব্যবহৃত হয়েছে।
বাংলা বাক্যে কর্তার বিভক্তি সচরাচর প্রকাশ পায় না, তাই একে শূন্য বিভক্তি বলা হয়।
‘বন্ধ থাকে’ হলো ক্রিয়া, যা কর্তার অবস্থান বোঝায়।
এই বাক্যে কোনো কারকচিহ্ন যেমন “কে”, “র”, “তে” ইত্যাদি যুক্ত হয়নি, যা শূন্য বিভক্তির প্রমাণ।
অতএব, ‘বিদ্যালয়’ কর্তাকারক ও শূন্য বিভক্তি।