‘রাবণের চিতা’ - বাগধারাটির অর্থ কী?
A
চির অশান্তি
B
উভয় সংকট
C
শেষ বিদায়
D
চূড়ান্ত অশান্তি
উত্তরের বিবরণ
‘রাবণের চিতা’ বাগধারার অর্থ হলো চির অশান্তি।
এই বাগধারা সেই পরিস্থিতি বা অবস্থা বোঝায় যা দীর্ঘস্থায়ী অশান্তি বা কলহ সৃষ্টি করে।
-
এটি সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী সংঘাত বা বিরোধের প্রতীক।
-
ব্যবহারিক অর্থে কোনো স্থায়ী সমস্যার বা দুশ্চিন্তার ইঙ্গিত দেয়।
-
বাক্যে প্রায়শই চিরস্থায়ী অশান্তি বা বিপর্যয় বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।
-
অন্যান্য বিকল্প যেমন উভয় সংকট, শেষ বিদায় বা চূড়ান্ত অশান্তি—এ বাগধারার প্রকৃত অর্থ বহন করে না।
-
তাই ‘রাবণের চিতা’ মূলত দীর্ঘস্থায়ী অশান্তি বা চির অশান্তি বোঝায়।
0
Updated: 15 hours ago
'লেজে খেলানো' বাগধারাটির অর্থ কী?
Created: 1 week ago
A
ভয়ংকর কিছু করা
B
সতর্কতার সাথে কাজ করা
C
গুরুত্বহীন কর্ম
D
বশীভূত করে রাখা
‘লেজে খেলানো’ বাংলা ভাষার একটি জনপ্রিয় বাগধারা, যা কথ্য ও সাহিত্যিক উভয় ভাষায় ব্যবহৃত হয়। এই বাগধারাটি দ্বারা বোঝানো হয় কাউকে নিজের ইচ্ছামতো পরিচালনা করা বা নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে রাখা। অর্থাৎ যার প্রতি এই বাগধারা প্রয়োগ করা হয়, সে আর নিজের স্বাধীনভাবে কিছু করতে পারে না—কারও বশে চলে। তাই সঠিক উত্তর হলো বশীভূত করে রাখা।
এই বাগধারার মূল ভাবার্থ আসে পশুর আচরণ থেকে। যেমন, কোনো প্রাণীকে বশ মানিয়ে নিলে সেটি মালিকের ইঙ্গিতেই কাজ করে, এমনকি লেজ নাড়িয়ে বা লেজে খেলা দেখিয়ে আনুগত্য প্রকাশ করে। এখান থেকেই মানবসম্পর্কে এই বাগধারার রূপক প্রয়োগ শুরু হয়। যখন বলা হয়, কেউ কাউকে ‘লেজে খেলাচ্ছে’, তখন বোঝানো হয় যে সে তাকে সম্পূর্ণ নিজের অধীনে নিয়ে নিয়েছে এবং ইচ্ছামতো ব্যবহার করছে।
বাংলা ভাষার বাগধারাগুলো সাধারণত জীবনের নানা অভিজ্ঞতা, রূপক চিত্র ও সমাজবাস্তবতা থেকে গড়ে উঠেছে। ‘লেজে খেলানো’ তারই একটি উদাহরণ। এটি প্রাধান্য বা আধিপত্যের প্রতীক। যেখানে একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি অপর একজনকে নিজের সুবিধামতো কাজে লাগায়, সেখানে এই বাগধারা যথাযথভাবে ব্যবহৃত হয়।
এই বাগধারাটি ব্যবহারের প্রেক্ষাপট সাধারণত তিন ধরনের হতে পারে। প্রথমত, মানবসম্পর্কে প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে, যেমন—“রহিম এখন করিমকে লেজে খেলাচ্ছে” অর্থাৎ করিম এখন রহিমের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। দ্বিতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে বা রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের বর্ণনায়, যেখানে একজন ক্ষমতাবান ব্যক্তি তার অধীনদের নিজের স্বার্থে ব্যবহার করছে। তৃতীয়ত, রূপকভাবে কোনো পরিস্থিতিকে নিজের আয়ত্তে আনার বর্ণনায়, যেমন—“সে পুরো বিষয়টিকে লেজে খেলিয়েছে” মানে ঘটনাটি তার নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।
এই বাগধারার প্রতিশব্দ বা অনুরূপ অর্থবোধক অন্যান্য বাংলা বাগধারার মধ্যে রয়েছে—“বশে আনা”, “আঙুলের ডগায় নাচানো”, “নিয়ন্ত্রণে রাখা”, “ইচ্ছামতো চালানো” ইত্যাদি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মূল ভাব এক—অন্যের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়া।
সাহিত্যিক উদাহরণে দেখা যায়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ লেখকরাও এমন বাগধারা ব্যবহার করেছেন মানবসম্পর্কের জটিলতা বোঝাতে। তাদের লেখায় ‘লেজে খেলানো’ শুধু প্রভুত্বের অর্থেই নয়, কখনো কখনো প্রলোভন, কৌশল বা আবেগের প্রভাবেও ব্যবহৃত হয়েছে।
সবশেষে বলা যায়, ‘লেজে খেলানো’ বাগধারাটি এমন একটি প্রকাশভঙ্গি যা আধিপত্য, প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের ধারণাকে একসঙ্গে বহন করে। এটি ব্যবহারে বক্তার উদ্দেশ্য হয় অন্যের উপর নিজের ক্ষমতার ইঙ্গিত দেওয়া। সেই হিসেবে, এই বাগধারার যথাযথ অর্থ ‘বশীভূত করে রাখা’—যেখানে নিয়ন্ত্রক শক্তি নিজের কর্তৃত্ব কৌশলে প্রতিষ্ঠা করে।
0
Updated: 1 week ago
’শরতের শিশির’ বাগ্ধারাটির অর্থ কী?
Created: 2 months ago
A
দুঃসময় বন্ধু
B
নিষ্ক্রিয় দর্শক
C
ভণ্ড
D
ক্ষণস্থায়ী
বাগ্ধারার অর্থ
-
শরতের শিশির → ক্ষণস্থায়ী
-
সাক্ষী গোপাল → নিষ্ক্রিয় দর্শক
-
বর্ণচোরা → ভণ্ড
-
সুখের পায়রা → সুদিনের বন্ধু
উৎস: ভাষা-শিক্ষা, ড. হায়াৎ মামুদ
0
Updated: 2 months ago
'যার কোন মূল্য নেই' তাকে বাগধারা দিয়ে প্রকাশ করলে কোনটি হয়?
Created: 1 week ago
A
ডাকাবুকা
B
তামার বিষ
C
তুলশী বনের বাঘ
D
ঢাকের বায়া
‘যার কোন মূল্য নেই’ তাকে বাগধারায় প্রকাশ করা হয় “ঢাকের বায়া” দ্বারা। এই বাগধারাটি বাংলা ভাষার একটি চিত্রকল্পপূর্ণ ও অর্থবহ অভিব্যক্তি, যা কোনো ব্যক্তি, বস্তু বা বিষয়কে মূল্যহীন, অকার্যকর বা গুরুত্বহীন হিসেবে প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়। এর উৎপত্তি, ভাষাগত তাৎপর্য ও ব্যবহার সবদিক থেকেই এটি এক সমৃদ্ধ বাগধারা।
বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র ঢাক বাজানোর সময় এক পাশে মূল অংশে ছোঁয়া দিয়ে তাল তৈরি করা হয়, অন্য পাশটি কেবল সহায়ক বা প্রতিধ্বনি তৈরি করে—যাকে বলা হয় বায়া। ঢাকের মূল তাল নির্ভর করে এক পাশের ঘন চামড়ার টানটান অংশের উপর, কিন্তু অন্য পাশের বায়া অংশের কোনো উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে না। তাই এটি তুলনামূলকভাবে অকার্যকর বা গৌণ হিসেবে বিবেচিত হয়। এই প্রেক্ষিত থেকেই জন্ম নিয়েছে ‘ঢাকের বায়া’ বাগধারাটি, যার অর্থ—যার কোনো গুরুত্ব বা মূল্য নেই।
অর্থগতভাবে ‘ঢাকের বায়া’ ব্যবহার করা হয় এমন মানুষ বা জিনিস বোঝাতে, যাকে উপেক্ষা করা হয় বা যার উপস্থিতি থাকা না থাকা সমান। উদাহরণস্বরূপ, “অফিসে তাকে সবাই ঢাকের বায়া ভাবে”—এখানে বোঝানো হচ্ছে, সে অফিসে থাকলেও তার কোনো ভূমিকা বা প্রভাব নেই। আবার বলা যায়, “তার মতামত এখানে ঢাকের বায়ার মতো”—অর্থাৎ, তার মতামতকে কেউ গুরুত্ব দেয় না।
এই বাগধারাটি কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্কেই নয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রসঙ্গেও ব্যবহৃত হয়। কোনো সংগঠন বা দলে এমন সদস্য থাকেন, যিনি নামমাত্র পদে আছেন কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণে অপ্রাসঙ্গিক—তাকে ‘ঢাকের বায়া’ বলা যায়। এটি অনেক সময় ব্যঙ্গাত্মক বা বিদ্রূপমূলকভাবে ব্যবহৃত হয়, যার মাধ্যমে গুরুত্বহীনতা ও উপেক্ষিত অবস্থার ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
বাংলা সাহিত্যে এবং কথ্যভাষায় এ বাগধারার ব্যবহার প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত। এর মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ জীবনের ছোঁয়া এবং লোকসংস্কৃতির ধ্বনিময় চিত্র। যেমন—ঢাক বাজানোর মতো জনপ্রিয় বাদ্যযন্ত্রের এক পার্শ্বকে কেন্দ্র করে এমন বাগধারা গঠিত হওয়া প্রমাণ করে, বাংলা বাগধারা কেবল ভাষাগত নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরও প্রতিফলন ঘটায়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘ঢাকের বায়া’ এমন একটি বাগধারা, যা দিয়ে বোঝানো হয় কোনো ব্যক্তি বা বস্তু যার অস্তিত্ব থাকলেও বাস্তবে তার কোনো প্রভাব, মর্যাদা বা মূল্য নেই। এটি দৈনন্দিন ভাষায় ব্যবহৃত একটি জীবন্ত রূপক, যা অকার্যকারিতা বা মূল্যহীনতার ধারণাকে সহজে ও সাবলীলভাবে প্রকাশ করে।
0
Updated: 1 week ago