বঙ্গাব্দ সন কোন সনে প্রবর্তিত হয়?
A
১৪৯২
B
১৫৯৮
C
১৫৮৪
D
১৪৮৫
উত্তরের বিবরণ
বঙ্গাব্দ বা বাংলা সাল আমাদের সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি মূলত কৃষি নির্ভর সমাজের জন্য সময়ের হিসাব রাখতে এবং বার্ষিক উৎসব, কর আদায় ও অন্যান্য সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঠিক সময় নির্ধারণ করতে প্রবর্তিত হয়েছিল। বাংলার প্রাচীন সমাজে খ্রিস্টীয় বা ইসলামিক সনের সাথে মিলিয়ে স্থানীয় কৃষি চক্র অনুযায়ী সময় হিসাব করার প্রয়োজন অনুভূত হয়। সেই প্রেক্ষাপটে বঙ্গাব্দ সন ১৫৮৪ সালে প্রবর্তিত হয়। এই সালটি ইতিহাসবিদরা ঠিকভাবে চিহ্নিত করেছেন এবং এটি সম্রাট আকবরের সময়কালের সাথে সম্পর্কিত, কারণ তিনি সময়ের হিসাব সহজ করার জন্য নানা সংস্কার করেছিলেন।
বঙ্গাব্দ সন প্রবর্তনের প্রেক্ষাপট এবং গুরুত্বকে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক থেকে বুঝতে পারি:
-
সমাজ ও কৃষি চক্রের সমন্বয়: বাংলার প্রায়শই জনগণ কৃষিপ্রধান ছিল। ফসলের সময়, বৃষ্টি এবং ঋতুর পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে সময় নির্ধারণের প্রয়োজন ছিল। বঙ্গাব্দ সন এই উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়।
-
আধিকারিক হিসাব ও কর আদায়: সম্রাট আকবরের প্রশাসন কৃষি নির্ভর কর আদায় ও হিসাব রাখার জন্য নতুন সময় নির্ধারণের প্রয়োজন অনুভব করেছিল। বঙ্গাব্দ সন স্থানীয় প্রথা ও কৃষি চক্রের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর সংগ্রহে সহায়ক হয়।
-
ঐতিহাসিক প্রমাণ: ইতিহাসের সূত্র অনুযায়ী, ১৫৮৪ সালে বাংলার সময়কে নতুনভাবে গণনা করার জন্য বঙ্গাব্দ প্রবর্তিত হয়, যা পূর্বে ব্যবহৃত হিজরি বা অন্যান্য সনের সাথে স্থানীয় হিসাবের সমন্বয় ঘটায়। এই সালটি বাংলার প্রশাসনিক এবং সাংস্কৃতিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক।
-
সাম্প্রতিক প্রভাব: আজও বাংলা সন বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য ব্যবহৃত হয়। কৃষক সমাজ থেকে শুরু করে শহুরে সমাজ পর্যন্ত, এই সন বছর গণনার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে রয়ে গেছে। বিভিন্ন উৎসব, অনুষ্ঠানের তারিখ নির্ধারণে বঙ্গাব্দ সন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
বৈশিষ্ট্য: বঙ্গাব্দ সন চন্দ্র এবং সৌর উভয় উপাদানের সমন্বয় ঘটায়। এটি মূলত সৌর সন হলেও চন্দ্রের প্রভাবও এতে প্রতিফলিত। ফলে এটি কৃষি নির্ভর সমাজের জন্য যথাযথ এবং ব্যবহারিক সময় গণনার ব্যবস্থা।
-
সাংস্কৃতিক প্রভাব: বঙ্গাব্দ সনের প্রবর্তন কেবল সময় নির্ধারণের জন্যই নয়, এটি বাংলার সংস্কৃতি, সাহিত্য, উৎসব এবং সামাজিক রীতিনীতির সাথে গভীরভাবে যুক্ত। বাংলা নববর্ষ, পয়লা বৈশাখ উদযাপন এবং অন্যান্য স্থানীয় উৎসব এই সনের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়।
-
আধুনিক ব্যবহার: আধুনিক বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গেও বঙ্গাব্দ সন ব্যবহৃত হয় সরকারি ছুটি, উৎসব এবং স্থানীয় অনুষ্ঠানগুলো নির্ধারণে। এটি আমাদের ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত।
সংক্ষেপে বলা যায়, ১৫৮৪ সালে বঙ্গাব্দ সন প্রবর্তনের মাধ্যমে বাংলার কৃষিপ্রধান সমাজের সময় ব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসনিক কাজকে সহজ করা হয়েছিল। এটি শুধু একটি সময় নির্ধারণের ব্যবস্থা নয়, বরং বাংলার সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই সন আমাদের ইতিহাসের সাথে বর্তমানের সংযোগ স্থাপন করে এবং আজও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাবশালী।
0
Updated: 1 day ago
হুমায়ুন আজাদ রচিত কাব্যগ্রন্থ কোনটি?
Created: 2 months ago
A
কাফনে মোড়া অশ্রুবিন্দু
B
বাতাসে লাশের গন্ধ
C
বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে
D
বন্দী শিবির থেকে
‘কফিনে মোড়া অশ্রুবিন্দু’
-
রচয়িতা: হুমায়ূন আজাদ
-
এটি একটি কাব্যগ্রন্থ, প্রকাশিত ১৯৯৮ সালে।
হুমায়ূন আজাদ
-
জন্ম: ২৮ এপ্রিল ১৯৪৭, রাড়িখাল, বিক্রমপুর
-
পেশা: কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী
-
প্রকাশিত প্রথম কাব্য: অলৌকিক ইস্টিমার (১৯৭৩)
-
দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ: জ্বলো চিতাবাঘ (১৯৮৩)
হুমায়ূন আজাদ রচিত অন্যান্য কাব্যগ্রন্থ
-
অলৌকিক ইস্টিমার
-
জ্বলো চিতাবাঘ
-
যতোই গভীরে যাই মধু
-
যতোই উপরে যাই নীল
-
সবকিছু নষ্টদের অধিকারে যাবে
-
কফিনে মোড়া অশ্রুবিন্দু ইত্যাদি
অন্যান্য সমসাময়িক কাব্যগ্রন্থ
-
রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ: বাতাসে লাশের গন্ধ
-
শামসুর রাহমান: বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে, বন্দী শিবির থেকে
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা
0
Updated: 2 months ago
ব্যঙ্গপ্রধান গল্পসংগ্রহ কোনটি?
Created: 2 months ago
A
লিপিমালা
B
রাজাবলি
C
তোতা ইতিহাস
D
ইতিহাসমালা
‘ইতিহাসমালা’
-
প্রকাশ: ১৮১২, উইলিয়াম কেরি
-
এটি বাংলা সাহিত্যের প্রথম গল্পসংগ্রহ হিসেবে মর্যাদাপূর্ণ।
-
গ্রন্থে প্রায় দেড় শতাধিক ইতিহাসাশ্রিত গল্প অন্তর্ভুক্ত।
-
অধিকাংশ গল্প ব্যঙ্গপ্রধান, প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য উভয় উৎস থেকে সংগৃহীত।
-
গল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে:
-
হিতোপদেশ, পঞ্চতন্ত্র প্রভৃতি প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থের কাহিনী
-
অপেক্ষাকৃত আধুনিক গল্প যেমন ধনপতি-খুল্লনা-লহনা, রূপ সনাতন গোস্বামির কাহিনী
-
-
ভাষা ও রচনাশৈলী: ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের প্রাথমিক যুগের ভাষার তুলনায় উন্নত, সুষম ও প্রাঞ্জল গদ্য।
-
কলেজ থেকে প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে সেরা রচনা হিসেবে স্বীকৃত।
অন্যান্য প্রাসঙ্গিক গ্রন্থ
‘লিপিমালা’
-
ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের ছাত্রদের চলিত ভাষা ও দেশীয় লোকের ব্যবহার পরিচয় করানোর জন্য পত্রাকারে লিখিত প্রবন্ধ।
‘রাজাবলি’
-
কিংবদন্তি ও লোকপ্রসিদ্ধির ওপর নির্ভর করে রচিত।
-
গদ্যরীতি আরও সুষ্ঠু হয়েছে।
-
আরবি-ফারসি শব্দবহুল হলেও প্রাঞ্জল ভাষা ও রচনাশৈলীর জন্য মৃত্যুঞ্জয়ের শ্রেষ্ঠ রচনা হিসেবে স্বীকৃতি লাভ।
চণ্ডীচরণ মুনশীর ‘তোতা ইতিহাস’ (১৮০৫)
-
ফারসি থেকে অনুবাদ।
-
পাঠ্যপুস্তক ও গল্পগ্রন্থ হিসেবে যথেষ্ট সমাদর লাভ।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম
0
Updated: 2 months ago