‘নেকড়ে অরণ্য’ উপন্যাসের রচয়িতা-
A
আনোয়ার পাশা
B
শওকত ওসমান
C
রশীদ হায়দার
D
আবু জাফর শামসুদ্দিন
উত্তরের বিবরণ
‘নেকড়ে অরণ্য’ একটি উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। লেখক শওকত ওসমান তাঁর লেখনশৈলীতে যুদ্ধের ভয়াবহতা ও মানবিক মূল্যবোধের দ্বন্দ্বকে তুলে ধরেছেন।
উপন্যাসটি ১৯৭২ সালে প্রকাশিত হয় এবং এতে দেখা যায় কীভাবে স্বাধীনতার সময়কালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে।
এই উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু মানুষের পশুত্ব ও মানবতার সংঘর্ষ।
লেখক শওকত ওসমান (জন্ম ২ জানুয়ারি ১৯১৭ – মৃত্যু ১৪ মে ১৯৯৮) বাংলা সাহিত্যের একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক ও কথাশিল্পী।
তাঁর অন্যান্য বিখ্যাত রচনা হলো ‘জননী’, ‘চিপস’, ও ‘রাজা উপন্যাস’।
‘নেকড়ে অরণ্য’ বাংলাদেশের সাহিত্যে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি রচনায় একটি অনন্য সংযোজন।
0
Updated: 1 day ago
প্রখ্যাত সাহিত্যিক শওকত ওসমানের প্রকৃত নাম কোনটি?
Created: 1 week ago
A
আবুল ফজল
B
আব্দুল হাই
C
কাজেম আল কোরেশী
D
শেখ আজিজুর রহমান
বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক শওকত ওসমান ছিলেন এক অনন্য সাহিত্যপ্রতিভা, যিনি সমাজবাস্তবতা, মানবতা ও রাজনৈতিক চেতনার গভীর বিশ্লেষণ তার রচনায় তুলে ধরেছেন। তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান, যা অধিকাংশ পাঠকের কাছে কম পরিচিত হলেও সাহিত্যজগতে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন ছদ্মনাম শওকত ওসমান নামে।
• জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন: শওকত ওসমানের জন্ম ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলপুর গ্রামে। শৈশবকাল থেকেই তিনি সাহিত্য, সংস্কৃতি ও রাজনীতির প্রতি গভীর আগ্রহী ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে স্নাতক হন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
• ছদ্মনাম গ্রহণ: তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান হলেও তিনি সাহিত্যচর্চার জন্য ‘শওকত ওসমান’ নামটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। এই ছদ্মনামের মাধ্যমে তিনি সমাজ-রাজনীতি, মানুষের দুঃখ-বেদনা এবং স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করেন।
• সাহিত্যজীবন: শওকত ওসমান মূলত উপন্যাস, ছোটগল্প ও প্রবন্ধের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান দখল করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘জননী’, ‘ক্রীতদাসের হাসি’, ‘চকোরমণ্ডল’, ‘অজলস্নান’ এবং ‘পৃথিবী আমার ঘর’—সবগুলোতেই সমাজের নানা অসঙ্গতি, শ্রেণিবৈষম্য ও মানবিক মূল্যবোধের চিত্র ফুটে উঠেছে।
• রাজনৈতিক ও সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি: তিনি ছিলেন মানবতাবাদী এবং মুক্তচিন্তার পক্ষের মানুষ। পাকিস্তান আমলে তাঁর লেখায় রাজনৈতিক সত্য প্রকাশের কারণে তাঁকে অনেকবার নিপীড়নের মুখে পড়তে হয়েছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনের পক্ষে তাঁর লেখাগুলো তীব্রভাবে অনুপ্রাণিত করেছে পাঠক সমাজকে।
• পুরস্কার ও সম্মাননা: সাহিত্যক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬২), আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৭), একুশে পদক (১৯৮৩) এবং স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৭) লাভ করেন। এসব পুরস্কার তাঁর সাহিত্যিক কৃতিত্ব ও সমাজসচেতনতার স্বীকৃতি বহন করে।
• মৃত্যু: তিনি ১৯৯৮ সালের ১৪ মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা সাহিত্য হারিয়েছে এক বলিষ্ঠ সমাজ-সচেতন কথাসাহিত্যিককে।
সব মিলিয়ে, শওকত ওসমান (Sheikh Azizur Rahman) শুধু একজন লেখকই নন, তিনি ছিলেন এক জনমানুষের কণ্ঠস্বর। তাঁর সাহিত্য আজও আমাদের সামাজিক ও মানবিক চেতনাকে জাগ্রত করে রাখে।
0
Updated: 1 week ago
শওকত ওসমান কোন উপন্যাস রচনার জন্য 'আদমজি পুরস্কার' লাভ করেন?
Created: 1 month ago
A
জলাঙ্গী
B
ক্রীতদাসের হাসি
C
বনি আদম
D
রাজা উপাখ্যান
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর মধ্যে শওকত ওসমান রচিত ক্রীতদাসের হাসি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। এটি কেবল একটি সাহিত্যকর্ম নয়, বরং প্রতীকী আঙ্গিকে তৎকালীন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের এক শক্তিশালী দলিল।
-
ক্রীতদাসের হাসি উপন্যাসটি শওকত ওসমান রচনা করেন এবং এটি ১৯৬২ সালে প্রকাশিত হয়।
-
এটি একটি প্রতিকাশ্রয়ী উপন্যাস, যেখানে তৎকালীন সামরিক শাসক আয়ুব খানের সমালোচনা করা হয়েছে রূপক ও প্রতীকের মাধ্যমে।
-
কাহিনির পটভূমিতে বাগদাদের বাদশা হারুন অর রশিদকে দেখানো হয়েছে এক অত্যাচারী শাসক হিসেবে।
-
তিনি ক্রীতদাস তাতারি ও বাঁদি মেহেরজানের প্রেমে বাধা দেন, তাতারিকে বন্দি করে নির্যাতন চালান।
-
তাতারি আজীবন বাদশার অত্যাচারের প্রতিবাদ করে যায়। এখানে তাতারি প্রতীকীভাবে বাঙালি জনতাকে এবং বাদশা হারুন আইয়ুব খানকে নির্দেশ করে।
-
তাতারির হাসি বাঙালির স্বাধীনতার প্রতীক হয়ে উপন্যাসে প্রকাশ পায়।
-
এটি শওকত ওসমানের সর্বশ্রেষ্ঠ উপন্যাস হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে।
-
এই গ্রন্থ রচনার জন্য তিনি ১৯৬৬ সালে আদমজি পুরস্কার লাভ করেন।
শওকত ওসমানের জীবনী সম্পর্কিত কিছু তথ্য:
-
তিনি ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান, আর ‘শওকত ওসমান’ তাঁর সাহিত্যিক নাম।
-
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস জাহান্নাম হইতে বিদায় তাঁর অন্যতম উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি।
শওকত ওসমান রচিত কিছু উল্লেখযোগ্য উপন্যাস হলো:
-
ক্রীতদাসের হাসি
-
সমাগম
-
রাজা উপাখ্যান
-
দুই সৈনিক
-
নেকড়ে অরণ্য
-
পতঙ্গ পিঞ্জর
-
রাজসাক্ষী
-
জলাঙ্গী
-
পুরাতন খঞ্জর
-
বনি আদম
-
জননী
0
Updated: 1 month ago
কোনটি শওকত ওসমানের রচনা নয়?
Created: 2 months ago
A
চৌরসন্ধি
B
ক্রীতদাসের হাসি
C
ভেজাল
D
বনি আদম
[মূল প্রশ্নের অপশনে টাইপিং মিস্টেক ছিল। শওকত ওসমান রচিত উপন্যাস- বণী আদম।। তবে সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য উত্তর হিসেবে অপশন ‘গ’ গ্রহণ করা হয়েছে।]
• শওকত ওসমানের রচনা নয়- ভেজাল।
• সুকান্ত ভট্টাচার্য রচিত ‘ভেজাল’ একটি কবিতা।
----------------------------
• শওকত ওসমান:
- ১৯১৭ সালের ২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সবলসিংহপুর গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
- তিনি ছিলেন কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক।
- তাঁর প্রকৃত নাম শেখ আজিজুর রহমান।
- উপন্যাস ও গল্প রচয়িতা হিসেবেই শওকত ওসমানের মুখ্য পরিচয়; তবে প্রবন্ধ, নাটক, রম্যরচনা, স্মৃতিকথা ও শিশুতোষ গ্রন্থও তিনি রচনা করেছেন।
- তাঁর 'জননী' ও 'ক্রীতদাসের হাসি' উপন্যাস দুটি প্রশংসিত হয়েছে। জননীতে সামাজিক জীবন ও ক্রীতদাসের হাসিতে রাজনৈতিক জীবনের কিছু অন্ধকার দিক উন্মোচিত হয়েছে।
- তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৬২), আদমজি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), একুশে পদক (১৯৮৩), ফিলিপস পুরস্কার (১৯৯১), স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার (১৯৯৭) লাভ করেন।
- তিনি ১৯৯৮ সালের ১৪ই মে মৃত্যুবরণ করেন।
• তাঁর রচিত উপন্যাস:
- ক্রীতদাসের হাসি,
- সমাগম,
- চৌরসন্ধি,
- রাজা উপাখ্যান,
- পতঙ্গ পিঞ্জর,
- রাজসাক্ষী,
- বণী আদম,
- পুরাতন খঞ্জর।
• তাঁর রচিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক উপন্যাস:
- জাহান্নম হইতে বিদায়,
- দুই সৈনিক,
- নেকড়ে অরণ্য,
- জলাংগী।
• তাঁর রচিত গল্পগ্রন্থ:
- পিঁজরাপোল,
- জুনু আপা ও অন্যান্য গল্প,
- প্রস্তর ফলক,
- উভশৃঙ্গ,
- শ্রেষ্ঠ গল্প,
- জন্ম যদি তব বঙ্গে,
- ঈশ্বরের প্রতিদ্বন্দ্বী ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 2 months ago