‘আসাদের শার্ট’ কবিতার লেখক কে?
A
আল মাহমুদ
B
শামসুর রাহমান
C
আব্দুল মান্নান সৈয়দ
D
অমীয় চক্রবর্তী
উত্তরের বিবরণ
‘আসাদের শার্ট’ কবিতাটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক অনন্য প্রতীক হয়ে আছে। এই কবিতার মাধ্যমে কবি শহিদ ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামানের বীরত্ব ও আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে তুলেছেন।
-
লেখক শামসুর রাহমান (১৯২৯–২০০৬) বাংলাদেশের আধুনিক কবিতার অন্যতম প্রধান কবি।
-
কবিতাটি ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থান উপলক্ষে রচিত হয়, যেখানে কবি স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও শহিদের আত্মত্যাগের চেতনা ফুটিয়ে তোলেন।
-
‘আসাদের শার্ট’ কবিতায় শার্টটি স্বাধীনতার প্রতীক, যা আসাদের রক্তে রঞ্জিত হয়ে বিক্ষুব্ধ জাতির জাগরণের প্রতীক হয়ে ওঠে।
-
এই কবিতা শামসুর রাহমানকে প্রতিরোধ ও দেশপ্রেমের কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।
0
Updated: 1 day ago
'বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা' বিখ্যাত কবিতাটি কার রচনা?
Created: 1 month ago
A
শামসুর রাহমান
B
আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
C
সৈয়দ শামসুল হক
D
হাসান হাফিজুর রহমান
শামসুর রাহমান ছিলেন বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান আধুনিক কবি ও সাংবাদিক। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার ৪৬ নম্বর মাহুতটুলীতে। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি ছিল ঢাকা জেলার রায়পুর থানার পাড়াতলী গ্রামে। আঠারো বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।
তাঁর জীবনী ও সাহিত্যকর্ম সম্পর্কে উল্লেখযোগ্য তথ্যগুলো হলো:
-
প্রথম কবিতা: ১৯৪৩ সালে রচিত ‘উনিশ শ’ উনপঞ্চাশ’, যা নলিনীকিশোর গুহ সম্পাদিত সোনার বাংলা পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
-
প্রথম কাব্যগ্রন্থ: প্রথম গান দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে (১৯৬০), যা কবিতায় তাঁর দৃঢ় অবস্থান নিশ্চিত করে।
-
সাহিত্যিক আত্মপ্রকাশ: কলকাতায় বুদ্ধদেব বসু সম্পাদিত কবিতা পত্রিকায় তাঁর ‘রূপালি স্নান’ প্রকাশিত হলে তিনি বৃহত্তর বাংলায় পরিচিতি লাভ করেন। এই কবিতাকে শামসুর রাহমানের আগমনী কবিতা বলা হয়।
-
সাংবাদিকতা জীবন: ১৯৫৭ সালে ইংরেজি দৈনিক মর্নিং নিউজ-এর সহসম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন।
-
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কবিতা: ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানে অভিন্ন রোমান হরফে সব ভাষার বর্ণমালা চালুর প্রস্তাবের প্রতিবাদে তিনি লেখেন “বর্ণমালা, আমার দুঃখিনী বর্ণমালা”।
তাঁর রচিত কিছু বিখ্যাত কবিতা:
-
“হাতির শুড়” — স্বৈরশাসক আয়ুব খানকে বিদ্রূপ করে লেখা।
-
“টেলেমেকাস” — ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু কারারুদ্ধ হলে তাকে উদ্দেশ্য করে লেখা।
-
“আসাদের শার্ট” — ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আসাদের রক্তমাখা শার্ট দেখে লেখা।
-
“স্বাধীনতা তুমি” এবং “তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা” — মুক্তির জন্য সংগ্রামী বাঙালির কণ্ঠস্বর।
তাঁর কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থ হলো:
-
রৌদ্র করোটিতে
-
বিধ্বস্ত নীলিমা
-
বন্দী শিবির থেকে
-
অন্ধকার থেকে আলোয়
-
হরিণের হাড়
-
না বাস্তব না দুঃস্বপ্ন
0
Updated: 1 month ago
'স্মৃতিঝলমল সুনীল মাটির কাছে আমার অনেক ঋণ আছে'- গানটি কার রচনা?
Created: 1 week ago
A
শামসুর রাহমান
B
গাজী মাজহারুল আনোয়ার
C
মোহাম্ম মনিরুজ্জামান
D
আজিজুর রহমান
এই গানের রচয়িতা হলেন শামসুর রাহমান।
ব্যাখ্যা:
বাংলা সাহিত্য ও সংগীত জগতে শামসুর রাহমান ছিলেন এক অনন্য কণ্ঠস্বর। তাঁর কবিতায় দেশপ্রেম, মানবতা, স্বাধীনতার স্পৃহা ও জীবনের গভীর অনুভূতি স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। “স্মৃতিঝলমল সুনীল মাটির কাছে আমার অনেক ঋণ আছে” লাইনটি তাঁরই লেখা, যা কবির মাটির প্রতি গভীর টান ও দেশপ্রেম প্রকাশ করে। এই পংক্তির মাধ্যমে তিনি জন্মভূমির প্রতি কৃতজ্ঞতা, শিকড়ের প্রতি ভালোবাসা ও মানবতার বন্ধনের কথা তুলে ধরেছেন।
কবির লেখায় দেখা যায়,
-
দেশ ও মাটির প্রতি ভালোবাসা ছিল তাঁর কবিতার মূল সুর। এই গানে সেই ভালোবাসার স্বীকারোক্তি রয়েছে।
-
‘স্মৃতিঝলমল’ শব্দবন্ধটি অতীতের স্মৃতি ও আবেগকে জীবন্ত করে তুলেছে।
-
‘সুনীল মাটি’ বলতে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন বাংলাদেশের প্রকৃতি, সবুজ-নীলাভ সৌন্দর্য ও তার প্রাণশক্তি।
-
কবি নিজের জন্মভূমির কাছ থেকে পাওয়া অনুপ্রেরণা, অভিজ্ঞতা ও অনুভূতিকে একধরনের ঋণ হিসেবে দেখেছেন, যা তাঁর সৃষ্টিশীল জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
-
এটি কেবল একটি গান নয়, বরং একটি কবিতার মতো দেশপ্রেমিক স্বীকারোক্তি, যেখানে মানুষ, প্রকৃতি ও দেশের মাটি একাকার হয়ে যায়।
-
শামসুর রাহমান তাঁর গীতিকবিতায় দেশপ্রেম ও ব্যক্তিগত অনুভূতির সংমিশ্রণ ঘটাতে পেরেছিলেন, যা তাঁকে অন্যান্য কবিদের থেকে আলাদা করে তোলে।
তাঁর এই ধরনের কবিতা বা গানে দেশকে শুধু একটি ভৌগোলিক সীমা নয়, বরং একটি আবেগ ও অস্তিত্বের অংশ হিসেবে দেখা হয়। সেই কারণেই “স্মৃতিঝলমল সুনীল মাটির কাছে আমার অনেক ঋণ আছে” পংক্তিটি শুধু একটি কাব্যিক উচ্চারণ নয়, বরং কবির নিজের অস্তিত্বের স্বীকারোক্তি।
উত্তর: ক) শামসুর রাহমান
0
Updated: 1 week ago
'নিরালোকে দিব্যরথ' কাব্যগ্রন্থটি কার লেখা ?
Created: 1 week ago
A
সিকান্দার আবু জাফর
B
আল মাহমুদ
C
শামসুর রহমান
D
সৈয়দ শামসুল হক
‘নিরালোকে দিব্যরথ’ বাংলা আধুনিক কবিতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাব্যগ্রন্থ। এটি বিখ্যাত কবি শামসুর রহমানের লেখা। তাঁর কবিতায় মানবতাবাদ, স্বাধীনতা, প্রেম, সমাজচেতনা ও জাতীয় চেতনার এক অসাধারণ প্রকাশ দেখা যায়। ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ কাব্যগ্রন্থেও সেই গভীর চিন্তা ও জীবনবোধ প্রতিফলিত হয়েছে।
এই কাব্যগ্রন্থে কবি মানুষের আত্মার জাগরণ, জীবনের আলোক-অন্ধকারের দ্বন্দ্ব ও সত্য-সৌন্দর্যের অনুসন্ধানকে তুলে ধরেছেন। নিচে কাব্যগ্রন্থটির মূল বৈশিষ্ট্যগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
-
লেখক পরিচিতি: শামসুর রহমান বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আধুনিক কবি। তিনি বাংলা কবিতায় নতুন ধারা এনেছিলেন। স্বাধীনতা যুদ্ধ, শহুরে জীবন, মানবপ্রেম এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয় তাঁর কবিতায় বারবার উঠে এসেছে।
-
প্রকাশকাল ও প্রেক্ষাপট: ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ প্রকাশিত হয় বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে, যখন সমাজে নানা রাজনৈতিক ও মানসিক টানাপোড়েন চলছিল। কবি সেই সময়ের বাস্তবতা ও মানবজীবনের অন্তর্লোককে তাঁর কবিতায় প্রকাশ করেছেন।
-
কবিতার ধারা ও ভাব: এই কাব্যগ্রন্থে কবির অস্তিত্বচেতনা ও আত্মজিজ্ঞাসা গভীরভাবে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি জীবনের আলো-অন্ধকার, দুঃখ-আনন্দ ও বিশ্বাস-সন্দেহের সংঘাতকে কাব্যের ভাষায় রূপ দিয়েছেন।
-
ভাষা ও শৈলী: শামসুর রহমানের ভাষা সহজ, প্রাঞ্জল ও আধুনিক। তিনি কাব্যে এমন ছন্দ ও চিত্রকল্প ব্যবহার করেছেন যা পাঠককে গভীর চিন্তার ভেতর নিয়ে যায়।
-
বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য: ‘নিরালোকে দিব্যরথ’-এ প্রেম, মানবতা, স্বাধীনতা, মৃত্যুচেতনা ও জীবনদর্শন মিলেমিশে এক অনন্য কাব্যিক রূপ পেয়েছে।
-
প্রভাব ও গুরুত্ব: এই গ্রন্থ বাংলা সাহিত্যে এক নতুন কাব্যভাষা প্রতিষ্ঠা করে। শামসুর রহমানের কবিতার মাধ্যমে আধুনিক নগরজীবন ও মানুষের মানসিক দ্বন্দ্ব প্রথমবারের মতো গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়।
সর্বোপরি, ‘নিরালোকে দিব্যরথ’ শামসুর রহমানের এক সৃষ্টিশীল ও চিন্তাশীল কাব্যগ্রন্থ, যা বাংলা আধুনিক কবিতাকে নতুন দিশা দিয়েছে এবং কবির সাহিত্যিক ব্যক্তিত্বকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
0
Updated: 1 week ago