১৯৭১ সালের কোন তারিখে বাংলাদেশে বেতারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়?
A
১০ জানুয়ারী
B
২২ ডিসেম্বর
C
২৬ আগস্ট
D
১৬ মে
উত্তরের বিবরণ
১৯৭১ সালের সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে বেতারের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার ঘোষণার পর তথ্য পৌঁছে দেওয়া, মুক্তিকামী জনসাধারণকে উদ্দীপনা জোগানো এবং স্বাধীনতার পক্ষের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বেতার সেবা গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছিল। বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে মুক্তিকামী মানুষদের মধ্যে দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার আবেগ উজ্জীবিত করা হতো।
-
অতীতে বেতারের কাজ: ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বিভিন্ন অংশে অসংখ্য বেতার কেন্দ্র গড়ে ওঠে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে বেতারের কার্যক্রম শুরু হয় ২২ ডিসেম্বর ১৯৭১। এই তারিখটি স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার কর্তৃক বেতারের নিয়মিত ও সংবিধিবদ্ধ কার্যক্রম শুরু হওয়ার প্রতীক।
-
গুরুত্ব: এই বেতার কেন্দ্র স্বাধীনতার পর জনগণকে সংবাদ, তথ্য এবং শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে। দেশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার সাথে সঙ্গেই, জাতীয় বেতার কেন্দ্র জনগণের কাছে একটি সংহতি ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে কাজ করতে থাকে।
-
মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে: মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতে অনেক বাঙালি শরণার্থী ছিলেন। তাদের জন্য সংবাদ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার খবর পৌঁছে দেওয়ার অন্যতম মাধ্যম ছিল ‘স্বরাজ’ বা ‘মুক্ত বেতার’। ২২ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বেতারের কার্যক্রম শুরু হওয়া বাংলাদেশের জনগণকে নতুন স্বাধীন দেশের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল।
-
সাংবাদিকতা ও তথ্যপ্রচার: বেতারের মাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পাশাপাশি শিক্ষামূলক অনুষ্ঠান, দেশের সংস্কৃতি, গান ও কবিতা সম্প্রচার করা হতো। এটি মানুষের মনোবল বাড়ানো এবং দেশের সার্বভৌমত্বের অনুভূতি জাগিয়ে তোলার একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ছিল।
-
উল্লেখযোগ্য দিক: বেতার কেন্দ্র কেবল সংবাদ মাধ্যম ছিল না, বরং এটি জনগণকে একত্রিত করার, স্বাধীনতার নীতি ও আদর্শ প্রচারের এবং দেশের নতুন সাংস্কৃতিক পরিচয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
সারসংক্ষেপে, ১৯৭১ সালের ২২ ডিসেম্বর হলো বাংলাদেশের বেতারের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রমের সূচনা। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ তারিখ, যা স্বাধীনতার পর দেশের গণমাধ্যমের বিকাশ এবং জনগণের মধ্যে জাতীয় চেতনা ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে স্মরণীয়। বেতারের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সময়ে প্রচারিত সংবাদ ও বার্তা জনগণকে স্বাধীনতার সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি, নতুন দেশ গঠনের প্রক্রিয়ায় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে সাহায্য করেছিল।
0
Updated: 10 hours ago
প্রথম 'অল ইন্ডিয়া রেডিও-ঢাকা' সম্প্রচার হয় কত সনে?
Created: 10 hours ago
A
১৯৩৯
B
১৯২৬
C
১৯৪৫
D
১৯৩৫
‘অল ইন্ডিয়া রেডিও-ঢাকা’ সম্প্রচারের ইতিহাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি বাংলাদেশের এবং উপমহাদেশের সাংবাদিকতা ও সম্প্রচার ক্ষেত্রের একটি মাইলফলক। এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর ১৯৩৯। এই সময়টিকে আমরা উল্লেখযোগ্য হিসেবে বিবেচনা করি কারণ এটি ঢাকায় বাণিজ্যিক ও শিক্ষামূলক ধরণের রেডিও সম্প্রচারের সূচনা চিহ্নিত করে।
রেডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে তথ্য, সংস্কৃতি ও বিনোদন জনসাধারণের কাছে পৌঁছানো সহজ হয়ে ওঠে। ‘অল ইন্ডিয়া রেডিও’ মূলত ব্রিটিশ ভারতের সময়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ঢাকায় এর সম্প্রচার ১৯৩৯ সালে শুরু হওয়ায় স্থানীয় জনগণের মধ্যে সংবাদ, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং সঙ্গীতের সম্প্রচার সম্ভব হয়। এই ধারা ঢাকার মানুষদের দৈনন্দিন জীবন ও সামাজিক সচেতনতার সঙ্গে গভীরভাবে সংযুক্ত হয়।
মূল কারণগুলো ব্যাখ্যা করলে দেখা যায়:
-
প্রথম সম্প্রচার সালের হিসাব: অল ইন্ডিয়া রেডিও কলকাতা, মুম্বই প্রভৃতির মতো কেন্দ্রগুলোতে আগে থেকেই সম্প্রচার চালু ছিল। ঢাকায় এটি ১৯৩৯ সালে চালু হওয়ায় স্থানীয় সম্প্রচারের ইতিহাসের সূচনা ঘটে।
-
উদ্দেশ্য ও প্রভাব: প্রথম সম্প্রচারের মূল লক্ষ্য ছিল জনগণকে শিক্ষামূলক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান পৌঁছে দেওয়া। এটি জনসাধারণকে সময়মতো খবর, আবহসংগীত ও নাটক শোনার সুযোগ দেয়।
-
প্রযুক্তিগত প্রেক্ষাপট: ১৯৩০-এর দশকে রেডিও প্রযুক্তি দ্রুত বিকাশ লাভ করছিল। ঢাকায় সম্প্রচার শুরু হওয়ায় পূর্ববঙ্গের মানুষ ব্রিটিশ ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে তথ্য প্রবাহে যুক্ত হতে পারে।
-
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব: এই সম্প্রচার ঢাকার নাগরিকদের মধ্যে সাংস্কৃতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে। স্থানীয় গান, নাটক ও অনুষ্ঠান রেডিওর মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ায় স্থানীয় শিল্পীদের কাজের সুযোগ বৃদ্ধি পায়।
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক:
-
রেডিও সম্প্রচারের মাধ্যমে মানুষ শুধুমাত্র খবরই নয়, বরং সাংস্কৃতিক ও শিক্ষামূলক প্রোগ্রামও শুনতে পারে। এটি একটি জনগণকে শিক্ষিত ও বিনোদিত করার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
-
‘অল ইন্ডিয়া রেডিও-ঢাকা’ এর প্রথম সম্প্রচার ব্রিটিশ সরকারের উদ্যোগে হলেও, স্থানীয় জনগণের মধ্যে এটি খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
-
এই সম্প্রচারের ফলে স্থানীয় সংবাদ ও অনুষ্ঠানগুলো কেন্দ্রীয়ভাবে সম্প্রচার করার সুযোগ তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের রেডিও সম্প্রচারের জন্য ভিত্তি স্থাপন করে।
সংক্ষেপে বলা যায়, ১৯৩৯ সালে ঢাকায় অল ইন্ডিয়া রেডিও সম্প্রচারের সূচনা শুধুমাত্র একটি প্রযুক্তিগত অর্জন নয়, বরং এটি স্থানীয় জনগণের সাংস্কৃতিক ও সামাজিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের শুরু। এটি জনগণকে শিক্ষিত, বিনোদিত এবং তথ্যসমৃদ্ধ করে, যা আজও রেডিও মাধ্যমের গুরুত্বকে প্রমাণ করে।
0
Updated: 10 hours ago