টেকসই উন্নয়ন সংক্রান্ত ২০৩০ এজেন্ডাতে কয়টি লক্ষ্য রয়েছে?
A
১৫
B
১৭
C
২১
D
কোনটিই নয়
উত্তরের বিবরণ
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDGs) হলো একটি বৈশ্বিক উন্নয়ন পরিকল্পনা, যেখানে ১৭টি লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে মানবজাতির টেকসই ও সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে। জাতিসংঘ ২০১৫ সালে এই লক্ষ্যগুলো ঘোষণা করে, যা ২০৩০ সালের মধ্যে অর্জন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্ববাসী। এই লক্ষ্যগুলোকে বলা হয় মানব উন্নয়নের একটি নীলনকশা (blueprint), যা দারিদ্র্য দূরীকরণ, বৈষম্য হ্রাস, পরিবেশ রক্ষা এবং শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের দিকে দিকনির্দেশনা দেয়।
এসডিজির প্রতিটি লক্ষ্যই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং মানবজীবনের বিভিন্ন দিককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে জাতিসংঘ চায় একটি এমন পৃথিবী গড়ে তুলতে যেখানে কেউ পিছিয়ে থাকবে না এবং প্রত্যেকে উন্নয়ন ও সুযোগের সমান অধিকার ভোগ করবে।
দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত পৃথিবী—এসডিজির প্রথম দুটি লক্ষ্য দারিদ্র্য ও ক্ষুধার অবসান ঘটানো। বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এখনও দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে এবং পর্যাপ্ত খাদ্য পায় না। এসব সমস্যার সমাধানে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করা জরুরি।
সুস্বাস্থ্য ও মানসম্পন্ন শিক্ষা—এসডিজির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সকলের জন্য মানসম্মত শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা। এটি মানবসম্পদ উন্নয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন ছাড়া কোনো দেশ টেকসই অগ্রগতি অর্জন করতে পারে না।
লিঙ্গসমতা ও বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা—নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও সুযোগ নিশ্চিত করা টেকসই উন্নয়নের অন্যতম শর্ত। পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানি ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নত করা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য।
সাশ্রয়ী জ্বালানি ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি—সবাই যাতে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি ব্যবহার করতে পারে, সেটিও এসডিজির একটি বড় লক্ষ্য। এর সঙ্গে টেকসই শিল্পায়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধিও যুক্ত।
জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ সংরক্ষণ—এসডিজির অন্যতম লক্ষ্য হলো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব কমানো এবং সমুদ্র ও স্থলজ বাস্তুসংস্থান রক্ষা করা। এই লক্ষ্য পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শান্তি, ন্যায়বিচার ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান—এসডিজির শেষ দিকের লক্ষ্যগুলো সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি হ্রাস এবং দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়।
সবশেষে, বলা যায় যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা হলো পৃথিবীর মানুষ, পরিবেশ ও অর্থনীতির মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার একটি সমন্বিত উদ্যোগ। এটি মানবতার এমন এক প্রতিশ্রুতি যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি উন্নত, নিরাপদ ও ন্যায়ভিত্তিক পৃথিবী গড়ে তোলার স্বপ্ন বহন করে।
0
Updated: 10 hours ago