মুক্তিযুদ্ধের সময় 'মুজিবনগর' কোন সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল?
A
২ নং
B
৮ নং
C
১০ নং
D
১১ নং
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল এক সুসংগঠিত ও পরিকল্পিত সশস্ত্র সংগ্রাম, যার মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জিত হয়। এই যুদ্ধকে সফলভাবে পরিচালনা করার জন্য পুরো দেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিল। প্রতিটি সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন একজন করে দক্ষ সেক্টর কমান্ডার, যিনি তাঁর অধীনস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে বিভিন্ন কৌশলগত এলাকায় যুদ্ধ পরিচালনা করতেন। এই বিভাজন মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ কার্যক্রমকে সুশৃঙ্খল ও কার্যকর করে তোলে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের বিজয় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সেক্টরভিত্তিক এই সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধের এলাকা নির্ধারণ, সামরিক কৌশল প্রণয়ন, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন, এবং মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা। প্রতিটি সেক্টরে মুক্তিবাহিনীর ঘাঁটি, কমান্ড সেন্টার ও অপারেশনাল জোন নির্দিষ্ট করা ছিল। এই ব্যবস্থা তৈরি করা হয় ১১ জুলাই, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর মুজিবনগর থেকে।
মুজিবনগর ছিল বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী এবং এটি ছিল ৮ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। এই সেক্টরটি মূলত কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা এবং যশোর জেলার কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ছিল। এর সদর দপ্তর ছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের লাহেরিপাড়া ও কৃষ্ণনগর এলাকায়। ৮ নম্বর সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন মেজর আবু ওসমান চৌধুরী, পরে মেজর মজিবুর রহমান জামানও দায়িত্ব পালন করেন। এই সেক্টরে যুদ্ধ কার্যক্রম ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ মুজিবনগর থেকেই মুক্তিযুদ্ধের প্রশাসনিক ও সামরিক নির্দেশনা দেওয়া হতো।
৮ নম্বর সেক্টরে মুজিবনগর সরকারের ঘাঁটি স্থাপনের ফলে এটি মুক্তিযুদ্ধের কৌশলগত ও রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিণত হয়। এখান থেকেই দেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার সার্বিক নীতি, সেনা নিয়োগ, প্রশিক্ষণ ও সরবরাহ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল হওয়ায় এ সেক্টরটি ছিল যোগাযোগ ও সমর্থনের দিক থেকেও অত্যন্ত সুবিধাজনক।
প্রতিটি সেক্টরের নিজস্ব দায়িত্ব ছিল। যেমন, ১ নম্বর সেক্টর পরিচালনা করতেন মেজর জিয়াউর রহমান, ২ নম্বর সেক্টর মেজর খালেদ মোশাররফ, ৩ নম্বর সেক্টর মেজর কে. এম. শফিউল্লাহ, ৪ নম্বর সেক্টর মেজর চিত্ত রঞ্জন দত্ত, ৫ নম্বর সেক্টর মেজর মীর শওকত আলী, ৬ নম্বর সেক্টর মেজর সালাহউদ্দিন মুহম্মদ, ৭ নম্বর সেক্টর মেজর কাদের সিদ্দিকী, ৯ নম্বর সেক্টর মেজর জিয়াউদ্দিন, ১০ নম্বর সেক্টর নৌবাহিনী ও মেরিন কমান্ডো দ্বারা পরিচালিত, এবং ১১ নম্বর সেক্টর নেতৃত্ব দেন মেজর আবুল মান্নান ও পরে কর্নেল তাহের।
এই সেক্টরভিত্তিক সংগঠন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধকে কার্যকর করে তোলে। প্রতিটি সেক্টরে মুক্তিযোদ্ধারা স্থানীয় জনগণের সহায়তায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনা করে। এর ফলে পুরো দেশে প্রতিরোধের জাল ছড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত বিজয় অর্জন সম্ভব হয়।
সব মিলিয়ে, মুজিবনগর ছিল মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হৃদয়, যা ৮ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে স্বাধীনতার সংগ্রামে দিকনির্দেশক ভূমিকা পালন করে। এখান থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার নেতৃত্ব ও কৌশল নির্ধারিত হয়ে জাতির মুক্তির পথ সুগম হয়।
0
Updated: 10 hours ago
মুক্তিযুদ্ধকালে বাংলাদেশকে কয়টি সেক্টরে ভাগ করা হয়?
Created: 3 months ago
A
আট
B
দশ
C
এগার
D
পনের
মুক্তিযুদ্ধ: মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়েছিলো।
⇒ সেক্টরগুলো:
- ১নং সেক্টর: চট্টগ্রাম ও পাবর্ত্য চট্টগ্রাম,
- ২নং সেক্টর: ঢাকা, নোয়াখালী, ফরিদপুর ও কুমিল্লার অংশবিশেষ,
- ৩নং সেক্টর: কুমিল্লা, কিশোরগঞ্জ ও হবিগঞ্জ,
- ৪ নং সেক্টর: মৌলভীবাজার ও সিলেটের পূর্বাংশ,
- ৫নং সেক্টর: সিলেট ও সুনামগঞ্জ,
- ৬নং সেক্টর: রংপুর, দিনাজপুর,
- ৭নং সেক্টর: রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা,
- ৮নং সেক্টর: কুষ্টিয়া, যশোর, ফরিদপুর,
- ৯নং সেক্টর: খুলনা, বরিশাল,
- ১০নং সেক্টর: সকল নৌপথ ও সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল,
- ১১নং সেক্টর: টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ।
উৎস: জাতীয় তথ্য বাতায়ন
0
Updated: 3 months ago
মুক্তিযুদ্ধে কোন সেক্টরের কোনো সাব-সেক্টর ছিলো না?
Created: 1 month ago
A
১১ নং সেক্টর
B
১০ নং সেক্টর
C
৫ নং সেক্টর
D
১ নং সেক্টর
মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর
-
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের সমগ্র এলাকা ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়।
-
প্রতিটি সেক্টরের একজন সেক্টর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়।
-
যুদ্ধ পরিচালনার সুবিধার জন্য প্রতিটি সেক্টরকে সাব-সেক্টরে বিভক্ত করা হয়, যেখানে প্রতিটি সাব-সেক্টরে একজন কমান্ডার থাকতেন।
সেক্টরের বিভক্তি:
-
সেক্টর ১: ৫টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ২: ৬টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৩: ১০টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৪: ৬টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৫: ৬টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৬: ৫টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৭: ৮টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৮: ৭টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ৯: ৩টি সাব-সেক্টর
-
সেক্টর ১০: কোনো সাব-সেক্টর বা নিয়মিত কমান্ডার নেই; এটি প্রধান সেনাপতির নিয়ন্ত্রণাধীন বিশেষ বাহিনী ছিল
-
সেক্টর ১১: ৮টি সাব-সেক্টর
0
Updated: 1 month ago
মুক্তিযুদ্ধের সময় পটুয়াখালী ও বরিশাল কোন সেক্টরে ছিল?
Created: 1 month ago
A
৮ নং সেক্টর
B
৯ নং সেক্টর
C
২ নং সেক্টর
D
১ নং সেক্টর
মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের ১১টি সেক্টর:
-
১ নং সেক্টর: ফেনী নদী থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি ও ফেনী
-
২ নং সেক্টর: ঢাকা, কুমিল্লা, আখাউড়া–ভৈরব, নোয়াখালী ও ফরিদপুরের অংশ
-
৩ নং সেক্টর: হবিগঞ্জ, আখাউড়া–ভৈরব রেললাইন থেকে পূর্ব দিকের কুমিল্লা ও ঢাকার অংশ
-
৪ নং সেক্টর: সিলেট জেলার অংশবিশেষ
-
৫ নং সেক্টর: বৃহত্তর ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং সিলেটের অংশ
-
৬ নং সেক্টর: দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁও এবং রংপুর (ব্রহ্মপুত্র নদ ছাড়া)
-
৭ নং সেক্টর: রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া এবং দিনাজপুরের দক্ষিণ অঞ্চল
-
৮ নং সেক্টর: কুষ্টিয়া, যশোর এবং খুলনার কিছু অংশ
-
৯ নং সেক্টর: পটুয়াখালী, বরিশাল ও খুলনার অংশ
-
১০ নং সেক্টর: সমুদ্র উপকূল, নৌ কমান্ডো ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন
-
১১ নং সেক্টর: ময়মনসিংহ ও টাঙ্গাইল
0
Updated: 1 month ago