কীসের আকর্ষণে জোয়ার ভাটা হয়?

A

সূর্য

B

চন্দ্র

C

নক্ষত্র

D

উপগ্রহ

উত্তরের বিবরণ

img

পৃথিবীতে জোয়ার-ভাঁটা সৃষ্টির মূল কারণ হলো মহাকর্ষীয় আকর্ষণ। এই আকর্ষণ শক্তি এমন এক সার্বজনীন বল যা দ্বারা সকল পদার্থ একে অপরকে আকর্ষণ করে। পৃথিবী, চন্দ্র ও সূর্যের মধ্যে এই আকর্ষণ বলের প্রভাবই সমুদ্রের পানির ওঠানামার কারণ। যদিও সূর্য পৃথিবীর তুলনায় অনেক বৃহৎ, তবু চন্দ্রের আকর্ষণ পৃথিবীর জলে বেশি প্রভাব ফেলে, এবং এর ফলেই জোয়ার-ভাঁটার ক্ষেত্রে চন্দ্রের ভূমিকা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ।

পৃথিবীর প্রতিটি বস্তুর উপর অন্য বস্তুর আকর্ষণ বল কাজ করে, যা নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তবে আকর্ষণ বলের পরিমাণ নির্ভর করে দুটি মূল বিষয়ের উপর — বস্তুগুলোর ভর এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের উপর। যেহেতু সূর্য পৃথিবীর থেকে অনেক দূরে অবস্থিত, তাই তার আকর্ষণ বল পৃথিবীর জলের ওপর তুলনামূলকভাবে কম প্রভাব ফেলে। অপরদিকে, চন্দ্র পৃথিবীর খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে, তাই তার আকর্ষণ বল বেশি কার্যকর হয়।

চন্দ্রের প্রভাব:
চন্দ্র পৃথিবীর জলরাশির ওপর আকর্ষণ বল প্রয়োগ করে, যার ফলে পৃথিবীর যে পাশটি চন্দ্রের দিকে থাকে, সেখানে পানি টেনে উপরের দিকে ফুলে ওঠে — এটিই জোয়ার। পৃথিবীর বিপরীত পাশে একই আকর্ষণ প্রভাবে আরেকটি জোয়ার সৃষ্টি হয়। দুই জোয়ারের মধ্যবর্তী স্থানে পানি নিচের দিকে নেমে যায়, সেটিকে বলা হয় ভাঁটা। এভাবে প্রতিদিন পৃথিবীর উপকূলীয় অঞ্চলে দুটি করে জোয়ার ও দুটি করে ভাঁটা ঘটে।

সূর্যের ভূমিকা:
যদিও সূর্য পৃথিবী থেকে অনেক দূরে, তার বিশাল ভরের কারণে কিছুটা আকর্ষণ বল সৃষ্টি করে, যা জোয়ার-ভাঁটায় সহায়ক ভূমিকা রাখে। যখন সূর্য, চন্দ্র ও পৃথিবী একই সরলরেখায় অবস্থান করে (অমাবস্যা ও পূর্ণিমার সময়), তখন চন্দ্র ও সূর্যের আকর্ষণ বল একত্রে কাজ করে। ফলে জোয়ারের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়, যাকে spring tide (বৃহৎ জোয়ার) বলা হয়। আবার, যখন সূর্য ও চন্দ্র পৃথিবীর সাথে সমকোণ তৈরি করে (অষ্টমী ও চতুর্দশীর সময়), তখন তাদের আকর্ষণ বল একে অপরকে কিছুটা প্রতিহত করে, যার ফলে জোয়ারের উচ্চতা কমে যায়, এটিই neap tide (ক্ষুদ্র জোয়ার)

চন্দ্রের অধিক প্রভাবের কারণ:
চন্দ্র পৃথিবীর থেকে মাত্র ৩৮.৪ লক্ষ কিলোমিটার দূরে, যেখানে সূর্য প্রায় ১৫ কোটি কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। যদিও সূর্য পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ১৩ লক্ষ গুণ বড়, তবুও এত বিশাল দূরত্বের কারণে তার মহাকর্ষীয় প্রভাব অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে। অপরদিকে, চন্দ্রের নিকটবর্তী অবস্থান পৃথিবীর জলরাশির ওপর সরাসরি ও শক্তিশালী প্রভাব ফেলে। ফলে জোয়ার-ভাঁটায় চন্দ্রের আকর্ষণ বল সূর্যের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি কার্যকর।

সব মিলিয়ে দেখা যায়, পৃথিবীর সমস্ত পদার্থ একে অপরকে আকর্ষণ করলেও জোয়ার-ভাঁটার ক্ষেত্রে চন্দ্রের প্রভাবই প্রধান। সূর্যের প্রভাব সহায়ক হলেও চন্দ্রের নিকটবর্তী অবস্থান ও মহাকর্ষীয় প্রভাবের তীব্রতাই জোয়ার-ভাঁটার প্রকৃত কারণ হিসেবে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

Unfavorite

0

Updated: 10 hours ago

Related MCQ

মরা কটাল কখন হয়?

Created: 1 month ago

A

পঞ্চমীতে

B

অষ্টমীতে

C

নবমীতে

D

একাদশীতে

Unfavorite

0

Updated: 1 month ago

প্রত্যেক জোয়ারের কত সময় পর ভাটার সৃষ্টি হয়?


Created: 1 month ago

A

৬ ঘন্টা ১৩ মি


B

৬ ঘন্টা ৫২ মি


C

৮ ঘন্টা ৫২ মি


D

৮ ঘন্টা ১৩ মি



Unfavorite

0

Updated: 1 month ago

জোয়ার এবং ভাটার মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত?

Created: 3 weeks ago

A

৬ ঘন্টা ১৩ মিনিট

B

৬ ঘন্টা ৪৮ মিনিট

C

৬ ঘন্টা ৪৭ মিনিট

D

৬ ঘন্টা ১৮ মিনিট

Unfavorite

0

Updated: 3 weeks ago

© LXMCQ, Inc. - All Rights Reserved

Developed by WiztecBD