রোমান্টিক কাব্যের কবি নন কে?
A
কোরেশী মাগন ঠাকুর
B
দোনা গাজী চৌধুরী
C
শেখ ফয়জুল্লাহ
D
শাহ বারিদ খান
উত্তরের বিবরণ
নাথ সাহিত্যের প্রধান কবি ছিলেন শেখ ফয়জুল্লাহ। তিনি মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের এক বিশিষ্ট কবি, যিনি নাথপন্থী ধর্মীয় চিন্তা ও আধ্যাত্মিক সাধনাকে তার রচনায় গভীরভাবে প্রকাশ করেছেন। তার কবিতায় আত্মজ্ঞান, ভক্তি, ও ত্যাগের ভাব প্রধান। নাথ দর্শনের রহস্যময়তা ও আত্মোপলব্ধির সাধনাকে তিনি সহজ ভাষায় উপস্থাপন করেছেন, যা সাধারণ মানুষের কাছে বোধগম্য হয়েছে। তার রচনাগুলো মধ্যযুগের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে।
শেখ ফয়জুল্লাহর বৈশিষ্ট্য:
• তিনি নাথপন্থী সাধনা ও তত্ত্বভিত্তিক ভাবধারার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।
• তার কবিতায় মানবজীবনের অনিত্যতা ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ পেয়েছে।
• সহজ, সরল ও উপমামূলক ভাষা ব্যবহার তার লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
• তিনি মধ্যযুগের ধর্মীয় চেতনা ও সাধনাকে সাহিত্যরূপ দিয়েছেন।
রোমান্টিক কাব্যের কবি হিসেবে পরিচিত কবিরা হলেন আলাওল, দৌলত কাজি, ফকির গরীবুল্লাহ, কোরেশী মাগন ঠাকুর, দোনা গাজী চৌধুরী ও শাহ বারিদ খান। এঁদের কবিতায় প্রেম, প্রকৃতি, কল্পনা ও মানবমনের সূক্ষ্ম অনুভূতির প্রকাশ ঘটেছে। তারা বাংলা সাহিত্যে রোমান্টিক ভাবধারার ভিত্তি স্থাপন করেন এবং মানবিক আবেগ, প্রেম ও সৌন্দর্যের মহিমাকে কাব্যে রূপ দেন।
রোমান্টিক কাব্যধারার বৈশিষ্ট্য:
• প্রেম, কল্পনা ও অনুভূতির প্রকাশ ছিল মুখ্য বিষয়।
• মানবজীবনের সৌন্দর্য ও বেদনাকে কাব্যিকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
• প্রকৃতি, নারী ও আবেগের সংমিশ্রণ ঘটেছে তাদের রচনায়।
• ভাষা ও ছন্দে কোমলতা, সুরেলা ভাব ও হৃদয়গ্রাহী প্রকাশ লক্ষ্য করা যায়।
• এই কবিরা বাংলা কাব্যে আবেগময়তা ও মানবিক সৌন্দর্যের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেন।
0
Updated: 21 hours ago
তাম্বুলখানা গ্রামে জন্মেছিলেন কোন কবি?
Created: 3 months ago
A
জসীমউদ্দীন
B
ফররুখ আহমদ
C
আবুল হাসান
D
শহীদ কাদরী
জসীমউদ্দীন
-
জসীমউদ্দীন জন্মগ্রহণ করেন ১৯০৩ সালের ১ জানুয়ারি, ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে তাঁর মামার বাড়িতে।
-
তিনি একজন খ্যাতিমান কবি ও শিক্ষাবিদ ছিলেন। সবাই তাঁকে পল্লিকবি নামে চেনে।
-
তাঁর একমাত্র উপন্যাসের নাম ‘বোবা কাহিনী’।
-
তিনি রচনা করেন বিখ্যাত গাথাকাব্য ‘নকশী কাঁথার মাঠ’, যা প্রকাশিত হয় ১৯২৯ সালে।
-
এই গ্রন্থটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেন E.M. Millford; নাম দেন ‘The Field of the Embroidered Quilt’।
-
তিনি পেয়েছেন:
-
১৯৫৮ সালে প্রেসিডেন্টের Pride of Performance পুরস্কার,
-
১৯৭৬ সালে একুশে পদক,
-
এবং ১৯৭৮ সালে (মরণোত্তর) স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার।
-
-
তিনি মৃত্যুবরণ করেন ১৯৭৬ সালের ১৩ মার্চ, ঢাকায়।
• তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ
-
বালুচর
-
রূপবতী
-
নকশী কাঁথার মাঠ
-
ধানখেত
-
সোজন বাদিয়ার ঘাট
-
মাটির কান্না
-
মা যে জননী কান্দে
• আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ
-
জীবনকথা
-
স্মৃতিপট
-
যাদের দেখেছি
-
ঠাকুর বাড়ির আঙ্গিনায়
• শিশুদের জন্য লেখা
-
ডালিমকুমার
-
এক পয়সার বাঁশি
-
হাসু
• নাটকসমূহ
-
পদ্মাপার
-
বেদের মেয়ে
-
মধুমালা
-
পল্লীবধূ
-
গ্রামের মায়া
• অন্যান্য কবিদের জন্মস্থান ও জন্মতারিখ
-
ফররুখ আহমদ: জন্ম ১০ জুন ১৯১৮, মাগুরা জেলার শ্রীপুর থানার মাঝাইল গ্রামে।
-
আবুল হাসান: জন্ম ৪ আগস্ট ১৯৪৭, গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গীপাড়ার বর্নি গ্রামে (মামার বাড়ি)।
-
শহীদ কাদরী: জন্ম ১৪ আগস্ট ১৯৪২, কলকাতায়।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা (ড. সৌমিত্র শেখর) এবং বাংলাপিডিয়া।
0
Updated: 3 months ago
মধ্যযুগের কবি নন কে?
Created: 3 months ago
A
জয়নন্দী
B
বড়ু চণ্ডীদাস
C
গোবিন্দ দাস
D
জ্ঞান দাস
জয়নন্দী ও চর্যাপদ
জয়নন্দী প্রাচীন যুগের একজন বাংলা কবি। তিনি চর্যাপদের একজন কবি ছিলেন।
চর্যাপদ
-
চর্যাপদ হলো বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে পুরনো গ্রন্থ।
-
এটি বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।
-
এই গ্রন্থটি ১৯০৭ সালে (১৩১৪ বঙ্গাব্দে) আবিষ্কৃত হয়।
-
পরে ১৯১৬ সালে (১৩২৩ বঙ্গাব্দে) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ থেকে এটি ছাপা হয়।
-
চর্যাপদের সম্পাদনা করেন হরপ্রসাদ শাস্ত্রী।
চর্যাপদের কবিরা
চর্যাপদের কতজন কবি ছিলেন তা নিয়ে মতভেদ আছে—
-
সুকুমার সেন তাঁর 'বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস' বইয়ে ২৪ জন কবির কথা বলেছেন।
-
আর ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ তাঁর 'Buddhist Mystic Songs' বইয়ে ২৩ জন কবির নাম উল্লেখ করেছেন।
কবিদের মধ্যে যাঁরা ছিলেন
কাহ্নপা, কুক্কুরীপা, ধর্মপা, ঢেণ্ডণপা, বিরুপা, বীণাপা, ভাদেপা, ভুসুকুপা, মহীধরপা, লুইপা, শবরপা, শান্তিপা, সরহপা, ডোম্বীপা, কম্বলাম্বরপা, গুণ্ডরীপা, চাটিল্লপা, আর্যদেবপা, দারিকপা, তাড়কপা, কঙ্কণপা, জয়নন্দীপা ও তন্ত্রীপা।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর
0
Updated: 3 months ago
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রাচীনতম মুসলমান কবি-
Created: 5 months ago
A
শাহ মুহম্মদ সগীর
B
সাবিরিদ খান
C
শেখ ফয়জুল্লাহ
D
মুহাম্মদ কবীর
শাহ মুহম্মদ সগীর
-
বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগের প্রথম মুসলিম কবি হিসেবে শাহ মুহম্মদ সগীর সুপরিচিত।
-
তিনি পঞ্চদশ শতকের কবি ছিলেন।
-
গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের শাসনামলে তিনি সাহিত্যচর্চা করেন।
-
বাংলা সাহিত্যে অনুবাদ কাব্য এবং রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যান ধারার পথিকৃৎ ছিলেন তিনি।
-
তাঁর শ্রেষ্ঠ অনুবাদ রচনা “ইউসুফ-জোলেখা”।
🔹 ইউসুফ-জোলেখা কাব্য:
-
“ইউসুফ-জোলেখা” একটি রোমান্টিক কাহিনিনির্ভর কাব্য, যা শাহ মুহম্মদ সগীর রচনা করেন।
-
এই কাব্য রচনার সময়কাল হিসেবে গিয়াসউদ্দিন আজম শাহের রাজত্বকালকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
-
ইউসুফ ও জোলেখার প্রেমকাহিনী বাইবেল ও কোরআনে বর্ণিত। ইরানী কবি ফেরদৌসিও এ বিষয়ে কাব্য রচনা করেছেন।
-
তবে শাহ মুহম্মদ সগীর মূলত কোরআন ও ফেরদৌসির কাব্য থেকেই কাহিনির উপাদান সংগ্রহ করেন; বাইবেলের প্রভাব এখানে অনুপস্থিত।
-
তাঁর রচনাটি বাংলা সাহিত্যে এই বিষয়কে প্রথমবার উপস্থাপন করে এবং পরবর্তী অনেক কবির অনুপ্রেরণার উৎস হয়। যেমন— আব্দুল হাকিম ও শাহ মুহম্মদ গরীবুল্লাহ পরবর্তীতে একই নামে কাব্য রচনা করেন, কিন্তু পথিকৃৎ ছিলেন শাহ মুহম্মদ সগীরই।
তথ্যসূত্র: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর/বাংলাপিডিয়া
0
Updated: 5 months ago