'পিশাচ- পিচাশ' এরুপ পরিবর্তনকে বলা হয়-
A
স্বরভক্তি
B
স্বরসংগতি
C
ধ্বনি বিপর্যয়
D
ধ্বনিবিকার
উত্তরের বিবরণ
বাংলা ভাষার ধ্বনিবিজ্ঞান অংশে ধ্বনি বিপর্যয় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন প্রক্রিয়া, যেখানে শব্দের ধ্বনিগুলোর অবস্থান পরিবর্তনের ফলে শব্দের রূপে ভিন্নতা আসে। এটি ভাষার প্রাকৃতিক বিকাশের অংশ, যা উচ্চারণের সহজতা বা আঞ্চলিক প্রভাবের কারণে ঘটে থাকে। বাংলা ভাষার অনেক শব্দে এমন পরিবর্তন দেখা যায়, যা একসময় প্রচলিত রূপ থেকে নতুন রূপে রূপান্তরিত হয়েছে।
• ধ্বনি বিপর্যয় বলতে শব্দের মধ্যবর্তী বা নিকটবর্তী দুইটি ব্যঞ্জনধ্বনির স্থান পরিবর্তনকে বোঝায়। অর্থাৎ, মূল শব্দে ধ্বনিগুলোর ক্রম উল্টে গিয়ে নতুন রূপ তৈরি হয়, যা সাধারণত প্রচলিত ও সহজ উচ্চারণের কারণে ঘটে।
• এই পরিবর্তনটি সাধারণত ব্যঞ্জনধ্বনির ক্ষেত্রেই ঘটে, এবং এর ফলে শব্দের উচ্চারণে সামান্য পার্থক্য দেখা দিলেও অর্থের কোনো পরিবর্তন হয় না।
• উদাহরণ হিসেবে বলা যায়— ‘পিশাচ’ থেকে ‘পিচাশ’, ‘বাক্স’ থেকে ‘বাস্ক’, ‘রিক্সা’ থেকে ‘রিস্কা’, ‘লাফ’ থেকে ‘ফাল’। এখানে প্রতিটি ক্ষেত্রে শব্দের মধ্যে ব্যঞ্জনধ্বনির অদলবদল লক্ষ্য করা যায়, যা ধ্বনি বিপর্যয়ের নিদর্শন।
• এই ধরণের পরিবর্তনকে ধ্বনিগত রূপান্তর বলা যায়, যা কথ্য ভাষায় বেশি প্রচলিত এবং ধীরে ধীরে লিখিত ভাষায়ও স্বীকৃত রূপ ধারণ করতে পারে।
• ধ্বনি বিপর্যয় অনেক সময় ভাষার আঞ্চলিকতা বা উচ্চারণগত অভ্যাসের ফলেও ঘটে। যেমন, কোনো অঞ্চলে একটি শব্দ যেভাবে উচ্চারিত হয়, অন্য অঞ্চলে সেটি ভিন্নভাবে উচ্চারিত হয়ে নতুন রূপ তৈরি করে।
• এ ধরনের পরিবর্তনের মাধ্যমে ভাষা গতিশীলতা ও বৈচিত্র্য লাভ করে। এটি ভাষার বিবর্তনের প্রমাণ বহন করে এবং দেখায় যে ভাষা সবসময় পরিবর্তনশীল, স্থির নয়।
• ধ্বনি বিপর্যয় কেবল বাংলা নয়, অন্যান্য ভাষাতেও দেখা যায়। যেমন ইংরেজিতে ‘ask’ শব্দটি মধ্যযুগীয় ইংরেজিতে ‘aks’ রূপে উচ্চারিত হতো, যা একই ধরনের ধ্বনিগত বিপর্যয়।
• ভাষার ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এই পরিবর্তন প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময় ধরে ভাষার শৈলীতে ও উচ্চারণে প্রভাব ফেলেছে। এর মাধ্যমে ভাষা সময়ের সঙ্গে নিজেকে সহজ ও গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে।
• ‘পিশাচ-পিচাশ’ উদাহরণটি ধ্বনি বিপর্যয়ের একটি নিখুঁত দৃষ্টান্ত, কারণ এখানে ‘শ’ এবং ‘চ’ ব্যঞ্জনের স্থান অদলবদল হয়েছে, ফলে শব্দের গঠন পরিবর্তিত হলেও অর্থ অপরিবর্তিত রয়েছে।
এইভাবে বলা যায়, ধ্বনি বিপর্যয় বাংলা ভাষার এক স্বাভাবিক ধ্বনিগত পরিবর্তন, যা শব্দকে উচ্চারণে সহজ ও প্রাঞ্জল করে তোলে এবং ভাষার রূপগত বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
0
Updated: 22 hours ago
'রিক্সা > রিস্কা' কোন ধরনের ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ?
Created: 1 month ago
A
অসমীকরণ
B
ধ্বনি বিপর্যয়
C
ব্যঞ্জন বিকৃতি
D
অন্তর্হতি
ধ্বনি বিপর্যয় এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে শব্দের মধ্যে থাকা দুটি ব্যঞ্জনের পারস্পরিক স্থান পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ, শব্দের গঠন একই থাকলেও ব্যঞ্জনগুলির বিন্যাসে অদলবদল হয়।
যেমন:
-
পিশাচ → পিচাশ
-
লাফ → ফাল
-
বাক্স → বাস্ক
-
রিক্সা → রিস্কা
অন্যদিকে,
• অসমীকরণ: একই বর্ণের পুনরাবৃত্তি দূর করতে মাঝখানে একটি স্বরধ্বনি যুক্ত হলে তাকে অসমীকরণ বলা হয়।
যেমন: ধপ + ধপ = ধপাধপ, টপ + টপ = টপাটপ।
• ব্যঞ্জন বিকৃতি: কোনো শব্দের মধ্যে একটি ব্যঞ্জনধ্বনি পরিবর্তিত হয়ে অন্য একটি ব্যঞ্জনধ্বনিতে রূপ নিলে তাকে ব্যঞ্জন বিকৃতি বলা হয়।
যেমন: কবাট → কপাট, ধোবা → ধোপা, ধাইমা → দাইমা।
• অন্তর্হতি: কোনো পদের মধ্যে একটি ব্যঞ্জনধ্বনি লোপ পেলে তাকে অন্তর্হতি বলা হয়।
যেমন: ফাল্গুন → ফাগুন, আলাহিদা → আলাদা, ফলাহার → ফলার।
0
Updated: 1 month ago
কোনটি ধ্বনি বিপর্যয়ের উদাহরণ?
Created: 2 months ago
A
শরীর > শরীল
B
লাফ > ফাল
C
লাফ > ফাল
D
দূর্গা > দূগ্ গা
লাফ> ফাল - ধ্বনি বিপর্যয়ের উদাহরণ ।ধ্বনি বিপর্যয় হলো শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর পরিবর্তন। যেমন - বাকস> বাসক, রিকশা > রিশকা পিশাচ> পিচাশ।
0
Updated: 2 months ago
কোনটি ধ্বনি বিপর্যয়ের উদাহরণ?
Created: 2 months ago
A
কাঁদনা > কান্না
B
মারি > মাইর
C
বাক্স > বাস্ক
D
চারি > চাইর
ধ্বনি বিপর্যয়
-
সংজ্ঞা: শব্দের মধ্যে দুটি ব্যঞ্জনের পরস্পর স্থান পরিবর্তন ঘটলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।
-
উদাহরণ:
-
পিশাচ → পিচাশ
-
লাফ → ফাল
-
বাক্স → বাস্ক
-
রিকসা → রিস্কা
-
সমীভবন
-
শব্দের উচ্চারণে একক ব্যঞ্জনধ্বনি বা স্বরবর্ণের মিলন ঘটলে।
-
উদাহরণ: কাঁদনা → কান্না
অপিনিহিতি
-
শব্দের কিছু অক্ষর বা ধ্বনি পরিবর্তিত বা বিকৃত হয়ে ব্যবহৃত হলে।
-
উদাহরণ:
-
চারি → চাইর
-
মারি → মাইর
-
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম-দশম শ্রেণি (২০১৯ সংস্করণ)
0
Updated: 2 months ago