সুয়েজ খাল কোথায় অবস্থিত?
A
মিশর
B
কুয়েত
C
মরেক্কো
D
ইরাক
উত্তরের বিবরণ
সুয়েজ খাল হলো বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ, যা ইউরোপ ও এশিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের সংযোগ স্থাপন করে। এটি মিশরে অবস্থিত এবং ভূমধ্যসাগরকে লোহিত সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। খালটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অপরিসীম ভূমিকা রাখে, কারণ এটি জাহাজ চলাচলের দূরত্ব ও সময় উভয়ই কমিয়ে দিয়েছে।
-
অবস্থান: সুয়েজ খাল মিশরের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে, সিনাই উপদ্বীপের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। এটি পোর্ট সাঈদ থেকে শুরু হয়ে সুয়েজ শহর পর্যন্ত বিস্তৃত, মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৯৩ কিলোমিটার।
-
নির্মাণকাল: খালটি ১৮৫৯ থেকে ১৮৬৯ সাল পর্যন্ত নির্মাণ করা হয় এবং আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭ নভেম্বর ১৮৬৯ সালে উদ্বোধন করা হয়।
-
নির্মাতা: ফরাসি প্রকৌশলী ফার্দিনান্দ দ্য লেসেপস এই বিশাল প্রকল্পের নেতৃত্ব দেন।
-
উদ্দেশ্য: ভূমধ্যসাগর ও লোহিত সাগরের মধ্যে সরাসরি নৌপথ তৈরি করা ছিল এর মূল উদ্দেশ্য, যাতে ইউরোপ থেকে এশিয়ার পথে জাহাজগুলোকে আফ্রিকা প্রদক্ষিণ করতে না হয়।
-
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান রুট, বিশেষত তেল, গ্যাস ও অন্যান্য পণ্যের পরিবহনে এর অবদান অপরিসীম। মিশর এই খাল থেকে প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার রাজস্ব আয় করে।
-
ভূরাজনৈতিক গুরুত্ব: সুয়েজ খাল ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় এটি ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৫৬ সালে মিশরের প্রেসিডেন্ট গামাল আবদেল নাসের খালটি জাতীয়করণ করলে ‘সুয়েজ সংকট’ সৃষ্টি হয়।
-
আধুনিক সম্প্রসারণ: ২০১৫ সালে মিশর সরকার “নিউ সুয়েজ খাল” প্রকল্পের আওতায় খালের একটি অংশ সম্প্রসারিত করে, যাতে জাহাজ চলাচল আরও দ্রুত ও কার্যকর হয়।
-
বিশেষ বৈশিষ্ট্য: এটি একটি সমুদ্রপৃষ্ঠ সমান খাল, অর্থাৎ এখানে কোনো লক সিস্টেম নেই। ফলে জাহাজগুলো সরাসরি ভূমধ্যসাগর থেকে লোহিত সাগরে যেতে পারে।
-
বিশ্বব্যাপী প্রভাব: এই খাল বৈশ্বিক অর্থনীতি ও বাণিজ্যের একটি কেন্দ্রবিন্দু। ২০২১ সালে একটি কার্গো জাহাজ খালে আটকে গেলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা সাময়িকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল, যা এর গুরুত্ব আরও স্পষ্ট করে তোলে।
অতএব, সুয়েজ খাল মিশরে অবস্থিত এবং এটি শুধু মিশরের নয়, বরং সমগ্র বিশ্বের বাণিজ্যিক ও কৌশলগতভাবে একটি অপরিহার্য জলপথ।
0
Updated: 18 hours ago