'নিদাঘ ' শব্দের 'নি' উপসর্গটি কোন অর্থ দ্যোতনা বুঝিয়েছে?
A
আতিশয্য
B
অভাব
C
নিশ্চয়
D
নিষেধ
উত্তরের বিবরণ
‘নিদাঘ’ শব্দটি বাংলায় ব্যবহৃত একটি বিশেষণ যা কোনো জিনিস বা অবস্থা চরম মাত্রায়, তীব্র বা অতিরিক্ত অবস্থায় আছে তা প্রকাশ করে। এখানে মূল শব্দ হলো ‘দাঘ’, যা সাধারণ অর্থে গরম, তীব্রতা বা ক্ষয়ক্ষতির অনুভূতি বোঝায়। কিন্তু ‘নি’ উপসর্গটি মূল শব্দের আগে বসার ফলে এটি শব্দের অর্থকে শক্তিশালী, অতিরিক্ত বা অতিশয়ত্মক অর্থে প্রসারিত করেছে। অর্থাৎ, ‘নিদাঘ’ মানে চরম তীব্র, অত্যধিক প্রখর বা অতিশয় তাপযুক্ত।
‘নি’ উপসর্গটি সাধারণভাবে বাংলা ভাষায় ব্যবহার করা হয় কোনো কাজ বা গুণের পরিমাণকে বাড়িয়ে বা তীব্র করে দেখাতে। এটি মূল শব্দের অর্থকে এমনভাবে উদ্ভাসিত করে যে, শব্দটি সাধারণ বা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অনেক বেশি মাত্রা বা প্রভাব বোঝায়। উদাহরণস্বরূপ, ‘নির্জন’ শব্দে ‘নি’ উপসর্গ প্রকাশ করে সম্পূর্ণ শূন্যতা বা একাকীত্ব, ‘নিস্তব্ধ’ শব্দে এটি শান্ত বা নিস্তব্ধ অবস্থার তীব্রতা বোঝায়। ঠিক একইভাবে, ‘নিদাঘ’ শব্দে ‘নি’ উপসর্গ মূল শব্দ ‘দাঘ’-কে অতিশয় প্রখর বা চরম তাপের অর্থে রূপান্তরিত করেছে।
‘নিদাঘ’ শব্দটি সাহিত্যে বা দৈনন্দিন কথ্য ভাষায় সেই পরিস্থিতি বা অনুভূতিকে প্রকাশ করে যেখানে কোনো বস্তু, অনুভূতি বা কাজ অত্যন্ত তীব্র, প্রচণ্ড বা অতিশয় মাত্রায় উপস্থিত থাকে। উদাহরণস্বরূপ, “নিদাঘ গরম” মানে হলো অত্যন্ত প্রচণ্ড গরম, “নিদাঘ ক্রোধ” মানে হলো অতিশয় রাগ বা চরম তীব্র রাগ। এই ধরনের ব্যবহার ভাষায় আবেগ, অনুভূতি বা প্রকৃতির প্রভাবকে চিত্রায়িত করতে সাহায্য করে।
‘নি’ উপসর্গের বৈশিষ্ট্য হলো এটি কোনো শব্দকে সম্পূর্ণ বা চরম মাত্রায় উপস্থাপন করতে সক্ষম। এটি শব্দকে সাধারণ থেকে উচ্চতর বা অতিশয়ত্মক মাত্রায় উন্নীত করে। উদাহরণস্বরূপ, সাধারণ গরম → নিদাঘ গরম, সাধারণ ক্রোধ → নিদাঘ ক্রোধ, সাধারণ শীত → নিদাঘ শীত। প্রতিটি ক্ষেত্রে ‘নি’ উপসর্গ মূল অর্থকে প্রবল ও তীব্র আকারে প্রকাশ করেছে।
বাংলা ব্যাকরণ এবং শব্দ গঠনের দিক থেকে ‘নি’ উপসর্গের ব্যবহার উচ্চারণ এবং অনুভূতির ভারসাম্য বজায় রাখে। এটি মূল শব্দের সাথে সংযুক্ত হয়ে ভাষাকে আরও প্রাণবন্ত ও অর্থবহ করে তোলে। অতএব, ‘নিদাঘ’ শব্দের মাধ্যমে আমরা একটি ধারণা পাই যা সাধারণ শব্দের চেয়ে অনেক বেশি প্রভাবশালী, তীব্র এবং চরম অবস্থার প্রতিনিধিত্ব করে।
ব্যাখ্যা (পয়েন্ট আকারে):
-
‘নিদাঘ’ শব্দের মূল অর্থ হলো চরম তীব্র বা অতিশয় প্রখর।
-
‘নি’ উপসর্গটি মূল শব্দের অর্থকে বৃদ্ধি বা তীব্রতা দেয়।
-
এটি সাধারণ বা স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে অত্যধিক বা চরম অবস্থার ধারণা প্রকাশ করে।
-
উদাহরণ: “নিদাঘ গরম” → অত্যন্ত প্রচণ্ড গরম।
-
উদাহরণ: “নিদাঘ ক্রোধ” → অতিশয় রাগ বা চরম তীব্র রাগ।
-
‘নি’ উপসর্গ সাধারণভাবে কোনো কাজ বা গুণের মাত্রা বাড়াতে ব্যবহৃত হয়।
-
এটি শব্দের অর্থকে উচ্চতর বা অতিশয়ত্মক আকারে রূপান্তরিত করে।
-
সাহিত্যে এবং দৈনন্দিন ভাষায় এটি চরম অনুভূতি বা প্রভাব দেখাতে ব্যবহৃত হয়।
-
‘নিদাঘ’ শব্দের মাধ্যমে আমরা সেই পরিস্থিতি বোঝাতে পারি যা সাধারণ চরমের চেয়ে অনেক বেশি তীব্র বা প্রখর।
-
ব্যাকরণগত দিক থেকে ‘নি’ উপসর্গ মূল শব্দের সাথে সংযুক্ত হয়ে শব্দকে প্রাণবন্ত ও অর্থবহ করে তোলে।
0
Updated: 18 hours ago
'কাঞ্চন' শব্দের অর্থ কী?
Created: 1 month ago
A
নারী
B
স্ত্রী
C
স্বর্ণ
D
সূর্য
বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধান অনুসারে, ‘কাঞ্চন’ শব্দের অর্থ হলো স্বর্ণ।
• ‘কাঞ্চন’ শব্দের কিছু সমার্থক শব্দ:
-
স্বর্ণ
-
হিরণ
-
হেম
-
সোনা
-
সুবর্ণ
-
কনক
-
হিরণ্য
অন্যদিকে,
-
‘ললনা’ শব্দের অর্থ হলো নারী, কান্তা, পত্নী।
-
‘বনিতা’ শব্দের অর্থ হলো স্ত্রী, পত্নী, নারী, প্রেয়সী।
-
‘আফতাব’ শব্দের অর্থ হলো সূর্য।
0
Updated: 1 month ago
'শারি' ও 'সারি' শব্দের অর্থ যথাক্রমে -
Created: 1 month ago
A
স্ত্রী শালিক ও পঙ্ক্তি
B
পঙ্ক্তি ও আস্বাদ
C
গানবিশেষ ও পুরুষ শালিক
D
পুরুষ শালিক ও গানবিশেষ
‘শারি’ শব্দের অর্থ: স্ত্রী শালিক
‘সারি’ শব্দের অর্থ: পঙ্ক্তি
অন্যদিকে,
‘স্বাদ’ শব্দের অর্থ: আস্বাদ
কিছু শব্দজোড়ের উদাহরণ:
-
‘শব’ শব্দের অর্থ: লাশ
-
‘সব’ শব্দের অর্থ: সকল
-
‘সাদ’ শব্দের অর্থ: ইচ্ছা
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি, নবম–দশম শ্রেণি (২০২২ সংস্করণ)
0
Updated: 1 month ago
'কৃতঘ্ন' শব্দের অর্থ কি?
Created: 1 week ago
A
যে উপকারীর উপকার করে না
B
যে উপকারীর অপকার করে
C
যে উপকারীর উপকার স্বীকার করে না
D
ঘযে উপকারীর উপকার ভুলে যায়
‘কৃতঘ্ন’ শব্দটি সংস্কৃত ভাষা থেকে উদ্ভূত, যার মূল অর্থ এমন একজন ব্যক্তি, যে উপকারীর অপকার করে। এটি নৈতিকভাবে অত্যন্ত নেতিবাচক একটি গুণ, যা কৃতজ্ঞতার সম্পূর্ণ বিপরীত। মানুষ সামাজিক জীব হিসেবে অন্যের উপকারে উপকৃত হয়, আর সেই উপকারের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা মানবধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু কৃতঘ্ন ব্যক্তি উপকার পাওয়ার পরও সেই উপকারীর প্রতি অন্যায় আচরণ করে বা ক্ষতি করার চেষ্টা করে।
– ‘কৃত’ মানে করা বা সম্পন্ন, আর ‘ঘ্ন’ মানে হত্যা বা বিনাশ করা। অর্থাৎ, কৃতঘ্ন শব্দের আক্ষরিক অর্থ দাঁড়ায়—যে উপকারের বিনাশ করে বা উপকারীর ক্ষতি করে।
– সমাজে কৃতঘ্নতা একটি নিন্দনীয় স্বভাব হিসেবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি কৃতজ্ঞতার অভাব এবং নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের প্রতিফলন।
– কৃতঘ্ন ব্যক্তি সাধারণত আত্মকেন্দ্রিক, স্বার্থপর ও অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকে, যে নিজের লাভের জন্য অন্যের উপকার ভুলে যায় এবং সুযোগ পেলে সেই উপকারীর ক্ষতি করে।
– বাংলা সাহিত্যেও কৃতঘ্নতার নিন্দা করা হয়েছে; কবি ও সাহিত্যিকরা মানবিক সম্পর্কের মূল্যবোধ বজায় রাখতে কৃতজ্ঞতাকে মহৎ গুণ হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
– ইতিহাস ও ধর্মীয় কাহিনিতেও দেখা যায়, কৃতঘ্ন ব্যক্তি কখনোই শেষ পর্যন্ত সম্মান বা সুখ লাভ করে না, বরং সমাজে তার অবস্থান হয় ঘৃণিত।
– অন্যদিকে, কৃতজ্ঞ ব্যক্তি সমাজে সম্মান পায়, কারণ সে অন্যের অবদান স্বীকার করে এবং সম্পর্কের মর্যাদা রক্ষা করে।
– কৃতঘ্নতা কেবল ব্যক্তিগত চরিত্রের দুর্বলতা নয়, বরং সামাজিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের লক্ষণ, যা বন্ধুত্ব, আত্মীয়তা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তি নষ্ট করে দেয়।
– শব্দটি ব্যবহারিক জীবনে এমন ব্যক্তিকে বোঝাতেও প্রয়োগ করা হয়, যে কোনো কারণে নিজের উপকারীর বিরুদ্ধাচরণ করে বা কৃতজ্ঞতার বদলে কটুক্তি করে।
– প্রবাদে বলা হয়, “কৃতঘ্নের কোনো বন্ধু নেই,” অর্থাৎ যে উপকারীর ক্ষতি করে, সে শেষ পর্যন্ত সমাজে একঘরে হয়ে পড়ে।
– ভাষা ও সাহিত্যে ‘কৃতঘ্ন’ শব্দটি সতর্কবাণী হিসেবেও ব্যবহৃত হয়, যেন মানুষ কৃতজ্ঞ হতে শেখে এবং অন্যের মঙ্গলচিন্তায় সদা সচেতন থাকে।
অতএব, ‘কৃতঘ্ন’ শব্দের অর্থ — যে উপকারীর অপকার করে, এবং এটি এমন এক নিন্দনীয় মানবগুণ যা সমাজে অবিশ্বাস, অবজ্ঞা ও সম্পর্কের ভাঙন সৃষ্টি করে।
0
Updated: 1 week ago