সন্ধি ব্যাকরণের কোন অংশের আলোচ্য বিষয়?
A
রুপতত্ত্ব
B
ধ্বনিতত্ত্ব
C
পদক্রম
D
বাক্যপ্রকরণ
উত্তরের বিবরণ
সন্ধি হলো বাংলা ভাষার ব্যাকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা মূলত ধ্বনি পরিবর্তনের নিয়ম নিয়ে কাজ করে। যখন দুটি শব্দ বা ধ্বনি একে অপরের সংস্পর্শে আসে, তখন তাদের উচ্চারণ বা লিখন পদ্ধতিতে পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনকে আমরা সন্ধি বলি। সন্ধি শুধু শব্দের মিলন ঘটায় না, বরং ভাষার ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্যকে সুন্দরভাবে রক্ষা করে এবং বাক্যকে সহজ ও স্বচ্ছভাবে উচ্চারণযোগ্য করে তোলে। কারণ এটি মূলত ধ্বনিতত্ত্বের নিয়ম অনুসারে ধ্বনি রূপান্তর ঘটায়। ধ্বনিতত্ত্ব বা phonetics হলো সেই শাস্ত্র যা ভাষার ধ্বনি, উচ্চারণ এবং তাদের প্রকৃতির বিশদ অধ্যয়ন করে। তাই সন্ধি ধ্বনিতত্ত্বের আওতায় পড়ে, কারণ এটি শব্দের ধ্বনির ক্রম, মিলন ও রূপান্তরকে নিয়ন্ত্রণ করে।
সন্ধি প্রক্রিয়া ভাষার প্রাকৃতিক ধ্বনি রীতিকে অনুসরণ করে। উদাহরণস্বরূপ, দুটি স্বরধ্বনি (vowel) একত্রিত হলে ধ্বনির রূপ পরিবর্তন ঘটে। “পতি” + “অমিত” → “পতীমিত” বা “সু” + “ইন্দ্র” → “সুন্দ্র” এর মতো। এখানে প্রতিটি শব্দের ধ্বনি সংযোগে পরিবর্তন ঘটে, যা ধ্বনিতত্ত্বের নিয়ম অনুযায়ী। এছাড়া ব্যঞ্জনধ্বনি (consonant) এবং স্বরধ্বনি একত্রিত হলে ধ্বনি শুদ্ধ উচ্চারণে রূপান্তরিত হয়। এই নিয়মের মাধ্যমে বাংলা ভাষা আরও সুরময় ও ধারাবাহিক হয়ে উঠে।
সন্ধি কোনো শব্দের আকার বা অর্থ পরিবর্তন করে না, বরং ধ্বনি ও উচ্চারণকে মিলিত করে। এটি কেবল লেখা বা সাহিত্যিক রূপের জন্য নয়, দৈনন্দিন কথ্য বাংলায়ও প্রয়োগ হয়। যেমন, “সু” + “অশ্রু” → “সুশ্রু”। এই প্রক্রিয়ায় ধ্বনি পরিবর্তন ধ্বনিতত্ত্বের নিয়ম অনুযায়ী ঘটেছে।
ধ্বনিতত্ত্বের অংশ হিসেবে সন্ধি শেখার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলা ভাষার স্বর ও ব্যঞ্জনের মিলন, উচ্চারণের সহজতা এবং ভাষার শুদ্ধ রূপ বোঝতে পারে। এটি ব্যাকরণ, সাহিত্য এবং মৌখিক ভাষার দক্ষতার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। তাই পরীক্ষা বা পাঠ্যপুস্তকে সন্ধি আলোচনা মূলত ধ্বনিতত্ত্ব এর অধীনে করা হয়।
ব্যাখ্যা (পয়েন্ট আকারে):
-
সংজ্ঞা: সন্ধি হলো দুটি শব্দ বা ধ্বনি সংযোগে ধ্বনির পরিবর্তন।
-
মূল উদ্দেশ্য: শব্দ সংযোগের সময় উচ্চারণ সহজ ও সুষম করা।
-
ধ্বনিতত্ত্বের সম্পর্ক: এটি মূলত ধ্বনির রূপান্তর ও মিলনের নিয়ম, যা phonetics এর অন্তর্ভুক্ত।
-
ধরন:
-
স্বরসন্ধি (Vowel Sandhi) – দুটি স্বর ধ্বনি মিলিত হওয়া।
-
ব্যঞ্জনসন্ধি (Consonant Sandhi) – স্বর ও ব্যঞ্জন ধ্বনি মিলিত হওয়া।
-
বর্ণসন্ধি (Letter Sandhi) – দুটি অক্ষর সংযোগের সময় ধ্বনি পরিবর্তন।
-
-
উচ্চারণ প্রভাব: সন্ধি উচ্চারণকে প্রাকৃতিক ও ধারাবাহিক করে।
-
লিখন প্রভাব: লেখা ও বানানও সন্ধি দ্বারা প্রভাবিত হয়।
-
ব্যবহারিক উদাহরণ:
-
সু + ইন্দ্র → সুন্দ্র
-
পতি + অমিত → পতীমিত
-
-
গুরুত্ব:
-
ধ্বনি মিলনের নিয়ম বোঝা।
-
বাংলা ভাষার সৌন্দর্য এবং প্রাঞ্জলতা বজায় রাখা।
-
সাহিত্য ও কথ্য ভাষায় সঠিক উচ্চারণ নিশ্চিত করা।
-
-
সন্ধি শুধু ব্যাকরণের অংশ নয়, এটি ধ্বনিতত্ত্বের প্রয়োগ, যা শব্দের মিলন ও উচ্চারণ নিয়ন্ত্রণ করে।
0
Updated: 18 hours ago
'চাকর' কোন ভাষার শব্দ?
Created: 1 month ago
A
বাংলা
B
চীনা
C
ফারসি
D
আরবি
চাকর
-
শব্দের উৎস: ফারসি ভাষা
-
পদভেদ: বিশেষ্য
-
অর্থ:
-
পরিচারক
-
কর্মচারী
-
ফারসি থেকে বাংলা ভাষায় আগত কিছু শব্দ
-
গ্রেপ্তারি, গ্রেফতার, দারোগা, দারোয়ান, সাদা, খরগোশ, কাজি, খোয়াব, চেহারা, কাগজ, চশমা, চাকর ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা একাডেমি, আধুনিক বাংলা অভিধান
0
Updated: 1 month ago
কোনটি প্রাতিপদিকের উদাহরণ?
Created: 1 month ago
A
গাছে
B
ঘর
C
পদ্মর
D
ঘোড়ায়
প্রাতিপদিক
প্রাতিপদিক হলো এমন নাম শব্দ যা কোনো বিভক্তি ছাড়া ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ:
-
লাজ
-
বড়
-
ঘর
এই শব্দগুলোর সঙ্গে কোনো বিভক্তি যুক্ত নয়, তাই এগুলো প্রাতিপদিক।
বৈশিষ্ট্য:
-
প্রাতিপদিক তদ্ধিত প্রত্যয়ের প্রকৃতি ধারণ করে।
-
যেমন ধাতুতে কৃৎ-প্রত্যয় যুক্ত হলে ধাতু ক্রিয়া রূপে পরিণত হয়, ঠিক তেমনই প্রাতিপদিকে নাম-প্রকৃতি বলা হয়।
পার্থক্য উদাহরণ:
-
গাছে, ঘোড়ায় (সপ্তমী বিভক্তি)
-
পদ্মর (ষষ্ঠী বিভক্তি)
এগুলোতে বিভক্তি যুক্ত হওয়ায় এগুলো প্রাতিপদিক নয়।
উৎস: ভাষা-শিক্ষা, ড. হায়াৎ মামুদ
0
Updated: 1 month ago
পুনরাবৃত্ত দ্বিত্বের উদাহরণ কোনটি?
Created: 1 month ago
A
কবি কবি
B
এলোমেলো
C
খুটুর খুটুর
D
জ্বলজ্বল
বাংলা ভাষায় দ্বিত্ব শব্দগঠন বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত হয়, যা বাক্য ও ভাবকে আরও প্রাঞ্জল ও চিত্তাকর্ষক করে তোলে। দ্বিত্বের প্রধান তিনটি ধরন নিচে ব্যাখ্যা করা হলো।
-
পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব
-
কোনো শব্দ পুনরায় আবৃত্ত হলে তাকে পুনরাবৃত্ত দ্বিত্ব বলা হয়।
-
উদাহরণ: জ্বর জ্বর, পর পর, কবি কবি, কথায় কথায়, ঘুম ঘুম
-
-
অনুকার দ্বিত্ব
-
পরপর প্রয়োগ হওয়া কাছাকাছি চেহারার শব্দ, যেখানে প্রথম শব্দ অর্থপূর্ণ হলেও দ্বিতীয় শব্দটি সাধারণত অর্থহীন এবং প্রথম শব্দের অনুকরণে তৈরি হয়।
-
উদাহরণ: গুটিশুটি, মোটাসোটা, আম টাম, এলোমেলো
-
-
ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব
-
প্রাকৃতিক ধ্বনির অনুকরণে যেসব শব্দ তৈরি হয়, সেগুলোকে ধ্বন্যাত্মক শব্দ বলা হয়।
-
আর এই ধ্বন্যাত্মক শব্দের পুনরাবৃত্তি ধ্বন্যাত্মক দ্বিত্ব নামে পরিচিত।
-
উদাহরণ: কুটুস-কুটুস, কুট কুট, খক খক, খুটুর খুটুর, টুং টুং, জ্বলজ্বল, ঝমঝম, চকচক, টসটস
-
উৎস:
0
Updated: 1 month ago