কোন নদীটি বঙ্গ জনপদের উত্তরাঞ্চলের সীমানা ছিল?
A
পদ্মা
B
মেঘনা
C
যমুনা
D
সুরমা
উত্তরের বিবরণ
বঙ্গ জনপদের ইতিহাসে নদীসমূহ কেবল পরিবহন ও জীবিকার উৎসই নয়, বরং ভৌগোলিক সীমানার ভূমিকাও পালন করেছিল। এর মধ্যে পদ্মা নদী বঙ্গ জনপদের উত্তরাঞ্চলের সীমান্ত হিসেবে খ্যাত ছিল। পদ্মা নদী প্রাচীনকাল থেকে নদী পথে যোগাযোগ, কৃষি ও সামরিক কৌশলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
-
পদ্মার ভূগোলিক গুরুত্ব: পদ্মা নদী বঙ্গভূমির দক্ষিণ-পশ্চিম এবং মধ্যাঞ্চল ধরে প্রবাহিত হলেও, প্রাচীনকালে এর বহুধা শাখা উত্তরাঞ্চলের সীমানা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। নদীর এই অবস্থান জনপদকে প্রাকৃতিক সীমানা এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা প্রদান করেছিল।
-
অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব: নদী উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ, সেচ ব্যবস্থাপনা ও কৃষি উন্নয়নে সাহায্য করেছিল। পদ্মার তীরে বসতি গড়ে উঠার ফলে জনপদের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলোও বিকাশ পেয়েছে।
-
অন্যান্য নদীর তুলনা:
-
মেঘনা: মূলত দক্ষিণ-পূর্ব এবং নদী তীরবর্তী অঞ্চলকে আচ্ছাদিত করে।
-
যমুনা: বর্তমান বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অংশে প্রবাহিত হলেও বঙ্গ জনপদের উত্তরসীমা নির্ধারণে প্রধান নদী ছিল না।
-
সুরমা: চট্টগ্রাম এবং সিলেট অঞ্চলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত, উত্তরাঞ্চলের সীমানা হিসেবে নয়।
-
-
সামরিক ও প্রতিরক্ষা দিক: পদ্মা নদী প্রাচীন বাংলার জন্য প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষা রেখা হিসেবে কাজ করত। এটি আক্রমণকারী বাহিনীকে সীমিত করত এবং জনপদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করত।
-
সারসংক্ষেপে: বঙ্গ জনপদের উত্তরাঞ্চলের সীমানা প্রধানত পদ্মা নদী দ্বারা নির্ধারিত হয়েছিল। এটি প্রাকৃতিক সীমানা, প্রতিরক্ষা এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, যা ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক বিকাশের সঙ্গে সংযুক্ত।
0
Updated: 1 day ago
পদ্মা নদী যমুনার সাথে মিলিত হয়েছে-
Created: 1 week ago
A
মুন্সিগঞ্জের নিকট
B
ভৈরবের নিকট
C
চাঁদপুরের নিকট
D
গোয়ালন্দের নিকট
বাংলাদেশের নদ-নদীর মিলনস্থলগুলো ভূগোল ও পরিবেশের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পদ্মা নদী, যা গঙ্গার প্রধান শাখা হিসেবে পরিচিত, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে অবশেষে যমুনার সঙ্গে মিলিত হয়। এই মিলনস্থল বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থায় এক বিশেষ ভূ-প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে।
পদ্মা ও যমুনার মিলনস্থল সম্পর্কিত মূল তথ্যগুলো হলোঃ
-
পদ্মা নদী ভারতের গঙ্গা নদীর একটি শাখা, যা রাজশাহীর ঘাটে বাংলাদেশে প্রবেশ করে এবং দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়ে বিভিন্ন জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
-
যমুনা নদী হচ্ছে ভারতের ব্রহ্মপুত্র নদীর একটি শাখা, যা কুরিগ্রাম জেলার চিলমারী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়।
-
এই দুই বৃহৎ নদী গোয়ালন্দের নিকট, অর্থাৎ রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ ঘাটে, এসে মিলিত হয়েছে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ নদীমিলন এলাকা হিসেবে পরিচিত।
-
গোয়ালন্দ ঘাট ঐতিহাসিকভাবে নদীযোগে যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল, এখান থেকেই নদীপথে ঢাকা, খুলনা, বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নৌযান চলাচল করত।
-
পদ্মা-যমুনার মিলনের ফলে নদীর প্রবাহ আরও প্রশস্ত ও গভীর হয়, যার ফলে এই অঞ্চলের নদী তীরবর্তী ভূমি কৃষি ও পরিবেশের জন্য উর্বর ও উপযোগী হয়ে উঠেছে।
-
মিলনের পর নদীটির নাম হয় পদ্মা, যা পরবর্তীতে দক্ষিণে প্রবাহিত হয়ে মেঘনা নদীর সঙ্গে মিলিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে পতিত হয়।
-
গোয়ালন্দের এই মিলনস্থল নদীপথে বাণিজ্য, যোগাযোগ ও মৎস্যসম্পদের দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্ষাকালে এই মিলনস্থলে নদীর স্রোত বৃদ্ধি পায় এবং অনেক সময় বন্যার সৃষ্টি হয়, যা পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোর মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে।
সুতরাং, পদ্মা নদী যমুনার সঙ্গে গোয়ালন্দের নিকট মিলিত হয়েছে—এটি ভূগোল, নদীপ্রবাহ ও বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে এক ঐতিহাসিক ও বাস্তবসম্মত সত্য।
0
Updated: 1 week ago