সুন্দরবন কোন নদীটির তীরে অবস্থিত?
A
রুপসা
B
ডাকাতিয়া
C
চিতরা
D
শিবসা
উত্তরের বিবরণ
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। এটি মূলত শিবসা নদীর তীরে বিস্তৃত, যা সুন্দরবনের মূল জলপ্রবাহের অংশ এবং বনভূমির জলাবদ্ধতা ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো ঘ) শিবসা।
শিবসা নদী সুন্দরবনের ভেতরে প্রবাহিত হয় এবং বনের বিভিন্ন খাল, ছোট নদী ও খাঁড়ির সঙ্গে যুক্ত থাকে। নদীর পানির গতি ও জোয়ার-ভাটার প্রভাবে সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ গাছের বৃদ্ধি এবং মাটির উর্বরতা বজায় থাকে। এছাড়া নদীটি বনাঞ্চলের প্রাণিকুলের জলচলাচলের প্রধান মাধ্যম। রাজহাঁস, মাছরাঙা, বাঘ, কুমিরসহ অসংখ্য প্রাণী শিবসা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলকে তাদের আবাস হিসেবে ব্যবহার করে।
সুন্দরবনের অন্যান্য নদীগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রূপসা, পাইরী, গঙ্গা ও ভৈরব নদী, কিন্তু এই নদীগুলো সরাসরি সুন্দরবনের মূল বনভূমির কেন্দ্রস্থলে নয়, বরং এর আশপাশের নদী এবং খালগুলোর সাথে সংযুক্ত। শিবসা নদী বনভূমির এক কেন্দ্রীয় নদী হিসেবে পরিচিত এবং এটি সুন্দরবনের প্রাকৃতিক জলবায়ু ও বাস্তুতন্ত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শিবসা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলগুলোতে বন্যপ্রাণীর জীববৈচিত্র্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। বিশেষ করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যা বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণী, শিবসা নদীর জলের প্রবাহ ও আশেপাশের বনাঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় পায়। এছাড়া নদীর তীরে কুমির, হরিণ, বানর, বিভিন্ন মাছ ও পাখি বাস করে, যা সুন্দরবনের পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক দিক থেকেও শিবসা নদীর গুরুত্ব অপরিসীম। নদীর জলে নৌপরিবহন, মৎস্যচাষ এবং স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। নদীর তীরে প্রাকৃতিক অবকাঠামো এবং জোয়ার-ভাটার সিস্টেম সুন্দরবনের কৃষি ও মৎস্যজীবনের জন্য অত্যন্ত সহায়ক।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সুন্দরবনের বনাঞ্চল মূলত শিবসা নদীর তীরে অবস্থিত, যা বনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা, পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখা এবং স্থানীয় অর্থনীতি চালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিবসা নদীর উপস্থিতি সুন্দরবনকে কেবল বাংলাদেশের নয়, বরং বিশ্বজুড়ে পরিচিত একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
0
Updated: 1 day ago
সুন্দরবন বাংলাদেশের কতটি জেলায় রয়েছে?
Created: 1 week ago
A
৩টি
B
৪টি
C
৬টি
D
৫টি
সুন্দরবন বাংলাদেশের ৩টি জেলায় বিস্তৃত।
এটি বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন, যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। সুন্দরবন মূলত বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা—এই তিনটি জেলায় বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে আছে।
ভৌগোলিকভাবে বিশ্লেষণ করলে—
-
খুলনা জেলা: সুন্দরবনের সবচেয়ে বড় অংশ খুলনা জেলায় অবস্থিত, যেখানে কটকা, হারবাড়িয়া ও দুবলার চরসহ গুরুত্বপূর্ণ বনাঞ্চল রয়েছে।
-
বাগেরহাট জেলা: এই অংশে করমজল, হিরণ পয়েন্ট ও অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্র অবস্থিত।
-
সাতক্ষীরা জেলা: এখানে সুন্দরবনের পশ্চিম প্রান্তের বনভূমি রয়েছে, যা ভারতের সুন্দরবনের সঙ্গে সীমান্ত ভাগ করেছে।
সুন্দরবন শুধুমাত্র বনভূমি নয়, এটি দেশের প্রাকৃতিক সুরক্ষা প্রাচীর, যা ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় অঞ্চলকে রক্ষা করে। এটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবেও স্বীকৃত।
অতএব, সঠিক উত্তর হলো—
ক) ৩টি।
0
Updated: 1 week ago
সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে কোন সংস্থা?
Created: 1 day ago
A
UNICEF
B
UNIAID
C
UNESCO
D
UNCTAD
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং জীববৈচিত্র্যের এক অপূর্ব ভাণ্ডার। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত এবং গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর মোহনা অঞ্চলে গঠিত। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশগত গুরুত্ব এবং অনন্য জীববৈচিত্র্যের জন্য সুন্দরবনকে UNESCO বা জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান বা World Heritage Site হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো UNESCO।
১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর UNESCO সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই ঘোষণা মূলত বাংলাদেশের অংশে অবস্থিত সুন্দরবনকে কেন্দ্র করেই প্রদান করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত অংশকেও পৃথকভাবে একই মর্যাদা দেওয়া হয়। এই স্বীকৃতি শুধু বাংলাদেশের জন্য গর্বের নয়, বরং এটি গোটা বিশ্বের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রতীক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশের অন্তর্গত। এখানে প্রায় ৪৫০টিরও বেশি প্রাণী প্রজাতি ও ৩৩৪টির বেশি উদ্ভিদ প্রজাতি রয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যা সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণী। এছাড়াও হরিণ, বানর, কুমির, সাপ, বক, মাছরাঙা, ডলফিনসহ নানা প্রজাতির প্রাণী এই বনে বাস করে।
UNESCO সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা দেওয়ার পেছনে কয়েকটি মূল কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জোয়ার-ভাটাপ্রবণ ম্যানগ্রোভ বন, যা উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দ্বিতীয়ত, এই বন উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাবলয় হিসেবে কাজ করে—ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার সময় এটি উপকূল রক্ষা করে। তৃতীয়ত, সুন্দরবন অসংখ্য নদী, খাল ও ছোট দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত হওয়ায় এটি একটি অনন্য প্রতিবেশ ব্যবস্থা বা ইকোসিস্টেম, যা পরিবেশবিজ্ঞানে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
UNESCO’র এই স্বীকৃতির ফলে সুন্দরবন আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষণের আওতায় এসেছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচিতে সুন্দরবন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও এই ঘোষণার পর থেকে বনটির সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নীতি গ্রহণ করেছে।
বর্তমানে সুন্দরবনের সংরক্ষণে নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান—যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, নদীভাঙন, অবৈধ কাঠ সংগ্রহ ও বন্যপ্রাণী পাচার। তবে UNESCO’র স্বীকৃতি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সুন্দরবন কেবল বাংলাদেশের গর্ব নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ। UNESCO কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়ার মাধ্যমে এই বনটি পৃথিবীর পরিবেশ সংরক্ষণ ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে আছে।
0
Updated: 1 day ago
বাংলাদেশের প্রথম রামসার সাইট-
Created: 1 month ago
A
টাঙ্গুয়ার হাওর
B
চলনবিল
C
হাইল হাওর
D
সুন্দরবন
রামসার সাইট:
-
রামসার কনভেনশন বা রামসার চুক্তি হলো একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি, যা ১৯৭১ সালে ইরানের রামসার শহরে স্বাক্ষরিত হয়।
-
এর উদ্দেশ্য হলো জলাভূমি (wetlands) সংরক্ষণ এবং সারা বিশ্বে এসব এলাকার টেকসই ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করা।
-
বাংলাদেশ ১৯৯২ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রামসার সনদ কার্যকর করে।
-
বাংলাদেশের ২টি স্থান রামসার সাইট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত।
-
রামসার সাইট দুটো হলো: সুন্দরবন ও টাঙ্গুয়ার হাওর।
-
বাংলাদেশের প্রথম রামসার সাইট সুন্দরবন।
-
১৯৯২ সালের ২১ মে সুন্দরবনকে রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
-
বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট হলো টাঙ্গুয়ার হাওর, যা সুনামগঞ্জ জেলায় অবস্থিত।
-
২০০০ সালের ২৯ জানুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওরকে সুন্দরবনের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
0
Updated: 1 month ago