বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীকের ডিজাইনার কে?
A
এ এন সাহা
B
কামরুল হাসান
C
রফিকুন্নবী
D
জয়নুল আবেদিন
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীক জাতীয় পরিচয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা স্বাধীনতার আদর্শ, সংস্কৃতি ও প্রকৃতির সৌন্দর্যকে প্রতিফলিত করে। এই প্রতীকের নকশা যিনি তৈরি করেছিলেন তিনি হলেন বিশিষ্ট শিল্পী কামরুল হাসান। তাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো কামরুল হাসান।
কামরুল হাসান ছিলেন বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার অগ্রদূতদের একজন। তিনি শুধু একজন চিত্রশিল্পী নন, বরং একজন দেশপ্রেমিক সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, যিনি তাঁর শিল্পের মাধ্যমে বাঙালির স্বাধীনতা, জাতীয়তা ও সংস্কৃতির চেতনাকে তুলে ধরেছেন। স্বাধীনতার পর যখন একটি নতুন রাষ্ট্রীয় প্রতীক তৈরির প্রয়োজন দেখা দেয়, তখন শিল্পী কামরুল হাসান নিজের সৃজনশীলতা ও দেশপ্রেম দিয়ে তা নকশা করেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীকে কয়েকটি প্রতীকী উপাদান একত্রিত করা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাস, ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধকে ধারণ করে। প্রতীকের মাঝখানে রয়েছে একটি পদ্মফুল, যা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল এবং পবিত্রতা, সৌন্দর্য ও শান্তির প্রতীক। এই পদ্মফুলটি পানির ওপর ভাসছে, যা বাংলাদেশের নদীমাতৃক চরিত্রকে প্রকাশ করে।
পদ্মফুলের দুই পাশে রয়েছে ধানের শীষ, যা দেশের কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ও গ্রামীণ জীবনের প্রতীক। উপরের দিকে রয়েছে তিনটি সংযুক্ত পাতাসহ দুটি জুটপাতা (পাতার শাখা), যা স্বাধীনতা সংগ্রামের তিনটি মৌলিক নীতি—জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্রকে প্রতিনিধিত্ব করে। প্রতীকের উপরে তিনটি সংযুক্ত পাতার মাঝখানে রয়েছে চারটি তারকা, যা ১৯৭২ সালের সংবিধানে উল্লেখিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা-র প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
এই প্রতীকের নকশায় কামরুল হাসান এমনভাবে উপাদানগুলো সাজিয়েছেন, যাতে তা একদিকে বাঙালির ঐতিহ্য ও প্রকৃতির পরিচয় বহন করে, অন্যদিকে স্বাধীন রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি প্রকাশ করে। তাঁর নকশায় সরলতা, ভারসাম্য ও প্রতীকী ভাব প্রকাশের দক্ষতা একে আন্তর্জাতিক মানের শিল্পকর্মে পরিণত করেছে।
কামরুল হাসানের অন্যান্য অবদানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের রাজনৈতিক পোস্টার ও প্রচারচিত্র, বিশেষ করে তাঁর বিখ্যাত পোস্টার “এই জানোয়ারদের হত্যা করতে হবে” যা মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দীপ্ত করেছিল। তিনি শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম এবং বাঙালি চেতনা ভিত্তিক আধুনিক শিল্প আন্দোলনের পথিকৃৎ ছিলেন।
সব মিলিয়ে বলা যায়, বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতীক শুধু একটি নকশা নয়, এটি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতিফলন। আর এর পেছনে যে শিল্পীর সৃজনশীল মেধা ও দেশপ্রেম মিশে আছে, তিনি হলেন আমাদের গর্ব, শিল্পাচার্য কামরুল হাসান।
0
Updated: 1 day ago
কত সালে বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক অনুমোদন করা হয়?
Created: 1 month ago
A
১৯৭২ সালে
B
১৯৭৩ সালে
C
১৯৭৪ সালে
D
১৯৭৫ সালে
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক
-
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পরপরই বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীক গ্রহণ করা হয় এবং আনুষ্ঠানিক অনুমোদন হয় ১৯৭২ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।
-
প্রধান প্রতীক: পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা।
-
প্রতীকের অন্যান্য উপাদান:
-
উভয় পার্শ্বে একটি করে ধানের শীষ
-
চূড়ায় পাটগাছের পরস্পরযুক্ত তিনটি পাতা
-
পাতার উভয় পার্শ্বে দুটি করে মোট চারটি তারা
-
-
প্রতীকগুলোর অর্থ:
-
পানি, ধান ও পাট বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ও অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্যকে প্রতিফলিত করে
-
জলজ প্রস্ফুটিত শাপলা অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক
-
চারটি তারা জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার চারটি সংবিধানিক মূলনীতিকে চিহ্নিত করে
-
-
ডিজাইন ও নির্মাণ:
-
পটুয়া কামরুল হাসান প্রতীকটির মূল ডিজাইন করেছেন
-
মোহাম্মদ ইদ্রিস ভাসমান শাপলা আঁকেন
-
শিল্পী শামসুল আলম শাপলার পাশে ধানের শীষবেষ্টিত পাটপাতা ও চারটি তারা যুক্ত করেন
-
-
সংবিধানিক উল্লেখ: সংবিধানের প্রথম ভাগ (প্রজাতন্ত্র) অনুচ্ছেদ ৪ (৩)-এ জাতীয় প্রতীকের বিবরণ সংযোজিত আছে।
0
Updated: 1 month ago
বাংলাদেশের জাতীয় প্রতীকে কয়টি তারকা আছে?
Created: 1 month ago
A
২টি
B
৩টি
C
৪টি
D
৫টি
বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় প্রতীক নির্ধারিত হয়েছে, যা দেশের প্রকৃতি, অর্থনীতি ও জাতির উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রতিফলিত করে।
-
জাতীয় প্রতীক হলো পানিতে ভাসমান জাতীয় ফুল শাপলা।
-
শাপলার উভয় পাশে একটি করে ধানের শীষ স্থাপন করা হয়েছে।
-
ফুলের চূড়ায় রয়েছে পাটগাছের পরস্পরযুক্ত তিনটি পাতা।
-
পাতার উভয় পার্শ্বে রয়েছে দুটি করে তারকা, মোট চারটি তারকা।
-
পানি, ধান ও পাট বাংলাদেশের প্রকৃতি ও অর্থনীতিকে চিহ্নিত করে।
-
জলজ প্রস্ফুটিত শাপলা অঙ্গীকার, সৌন্দর্য ও সুরুচির প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
-
তারকাগুলো জাতির লক্ষ্য ও উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে প্রকাশ করে।
0
Updated: 1 month ago