সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে কোন সংস্থা?
A
UNICEF
B
UNIAID
C
UNESCO
D
UNCTAD
উত্তরের বিবরণ
সুন্দরবন বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং জীববৈচিত্র্যের এক অপূর্ব ভাণ্ডার। এটি বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত এবং গঙ্গা, মেঘনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর মোহনা অঞ্চলে গঠিত। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, পরিবেশগত গুরুত্ব এবং অনন্য জীববৈচিত্র্যের জন্য সুন্দরবনকে UNESCO বা জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থান বা World Heritage Site হিসেবে ঘোষণা করেছে। তাই প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো UNESCO।
১৯৯৭ সালের ৬ ডিসেম্বর UNESCO সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই ঘোষণা মূলত বাংলাদেশের অংশে অবস্থিত সুন্দরবনকে কেন্দ্র করেই প্রদান করা হয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত অংশকেও পৃথকভাবে একই মর্যাদা দেওয়া হয়। এই স্বীকৃতি শুধু বাংলাদেশের জন্য গর্বের নয়, বরং এটি গোটা বিশ্বের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণের প্রতীক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।
সুন্দরবনের আয়তন প্রায় ১০,০০০ বর্গকিলোমিটার, যার মধ্যে প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশের অন্তর্গত। এখানে প্রায় ৪৫০টিরও বেশি প্রাণী প্রজাতি ও ৩৩৪টির বেশি উদ্ভিদ প্রজাতি রয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যা সুন্দরবনের প্রধান আকর্ষণ এবং বাংলাদেশের জাতীয় প্রাণী। এছাড়াও হরিণ, বানর, কুমির, সাপ, বক, মাছরাঙা, ডলফিনসহ নানা প্রজাতির প্রাণী এই বনে বাস করে।
UNESCO সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা দেওয়ার পেছনে কয়েকটি মূল কারণ রয়েছে। প্রথমত, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জোয়ার-ভাটাপ্রবণ ম্যানগ্রোভ বন, যা উপকূলীয় জীববৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দ্বিতীয়ত, এই বন উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক প্রতিরক্ষাবলয় হিসেবে কাজ করে—ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বন্যার সময় এটি উপকূল রক্ষা করে। তৃতীয়ত, সুন্দরবন অসংখ্য নদী, খাল ও ছোট দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত হওয়ায় এটি একটি অনন্য প্রতিবেশ ব্যবস্থা বা ইকোসিস্টেম, যা পরিবেশবিজ্ঞানে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
UNESCO’র এই স্বীকৃতির ফলে সুন্দরবন আন্তর্জাতিকভাবে সংরক্ষণের আওতায় এসেছে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচিতে সুন্দরবন বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশ সরকারও এই ঘোষণার পর থেকে বনটির সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনায় বিশেষ নীতি গ্রহণ করেছে।
বর্তমানে সুন্দরবনের সংরক্ষণে নানা চ্যালেঞ্জ বিদ্যমান—যেমন জলবায়ু পরিবর্তন, নদীভাঙন, অবৈধ কাঠ সংগ্রহ ও বন্যপ্রাণী পাচার। তবে UNESCO’র স্বীকৃতি এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বৈশ্বিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করেছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, সুন্দরবন কেবল বাংলাদেশের গর্ব নয়, বরং সমগ্র মানবজাতির প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের অমূল্য সম্পদ। UNESCO কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের মর্যাদা পাওয়ার মাধ্যমে এই বনটি পৃথিবীর পরিবেশ সংরক্ষণ ইতিহাসে এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে আছে।
0
Updated: 1 day ago
কোন সংস্থা সুন্দরবনকেকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষনা দিয়েছে?
Created: 1 week ago
A
ইউনিসেফ
B
ইউএনডিপি
C
বিশ্বব্যাংক
D
ইউনেস্কো
সুন্দরবন পৃথিবীর অন্যতম বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং জীববৈচিত্র্যের এক অনন্য ভান্ডার। এই বন বাংলাদেশের গর্ব, কারণ এটি শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীকই নয়, বরং পরিবেশ, প্রাণবৈচিত্র্য ও জলবায়ু নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুন্দরবনের এই বিশ্বমানের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো (UNESCO), যেটি একে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে।
মূল তথ্যাবলি:
-
ইউনেস্কো বা United Nations Educational, Scientific and Cultural Organization হলো জাতিসংঘের একটি বিশেষ সংস্থা, যার প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৪৫ সালে, এবং এর সদর দপ্তর অবস্থিত প্যারিসে (ফ্রান্স)।
-
এই সংস্থার মূল লক্ষ্য হলো শিক্ষা, বিজ্ঞান, সংস্কৃতি ও যোগাযোগের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
-
ইউনেস্কো বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক, প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে বিশ্ব ঐতিহ্য (World Heritage Site) হিসেবে ঘোষণা করে।
-
সুন্দরবনকে ইউনেস্কো ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
-
এই ঘোষণা বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেয় এবং সুন্দরবনের সংরক্ষণে বৈশ্বিক গুরুত্ব বৃদ্ধি করে।
সুন্দরবনের গুরুত্ব:
-
সুন্দরবন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন, যা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে প্রায় ৬,০১৭ বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।
-
এখানে বসবাস করে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যা বাংলাদেশে বন্যপ্রাণীর প্রতীক হিসেবে পরিচিত।
-
এছাড়াও এখানে রয়েছে চিত্রা হরিণ, কুমির, বানর, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি ও মাছ।
-
সুন্দরবন বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে প্রাকৃতিক বন্যা প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে, কারণ এটি ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ক্ষতি অনেকটা কমিয়ে দেয়।
অন্য বিকল্পগুলোর বিশ্লেষণ:
-
ইউনিসেফ (UNICEF) শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কল্যাণে কাজ করে, তবে বিশ্ব ঐতিহ্যের ঘোষণা দেওয়ার ক্ষমতা তাদের নেই।
-
ইউএনডিপি (UNDP) জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি, যা মূলত দারিদ্র্য দূরীকরণ ও মানব উন্নয়ন নিয়ে কাজ করে।
-
বিশ্বব্যাংক (World Bank) অর্থনৈতিক সহায়তা প্রদান করে, কিন্তু ঐতিহ্য ঘোষণার দায়িত্ব তাদের নয়।
সুতরাং, সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ইউনেস্কো, যা বাংলাদেশের জন্য একটি আন্তর্জাতিক গর্বের স্বীকৃতি।
0
Updated: 1 week ago
সুন্দরবনের বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হয় -
Created: 1 week ago
A
পাগ-মার্ক
B
ফুটমার্ক
C
GIS
D
কোয়ার্ডবেট
সুন্দরবনের বাঘ গণনায় ব্যবহৃত হয় “পাগ-মার্ক” পদ্ধতি, যা বাংলায় বলা হয় “পদচিহ্ন বা পায়ের ছাপের মাধ্যমে গণনা”। এই পদ্ধতিতে বাঘের চলাফেরার পথে তাদের পদচিহ্ন সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করে বাঘের আনুমানিক সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। এটি বহু বছর ধরে সুন্দরবনের বাঘ গণনায় একটি ঐতিহ্যবাহী ও বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হিসেবে পরিচিত।
ব্যাখ্যা হিসেবে বলা যায়—
• “পাগ-মার্ক পদ্ধতি” মূলত বাঘের পায়ের ছাপ বিশ্লেষণের মাধ্যমে বন্যপ্রাণীর সংখ্যা নির্ধারণের একটি প্রাচীন ও কার্যকর কৌশল। বাঘের প্রতিটি পদচিহ্নের আকার, গভীরতা ও নকশা আলাদা হয়ে থাকে, যা দিয়ে এক বাঘকে অন্য বাঘ থেকে আলাদা করা সম্ভব হয়।
• সুন্দরবন অঞ্চলে বাঘের পদচিহ্ন মাটিতে, বালিতে বা কাদা জমিতে খুব স্পষ্টভাবে পাওয়া যায়। বন বিভাগের কর্মীরা এই ছাপগুলো প্লাস্টার কাস্ট বা মাপের মাধ্যমে সংরক্ষণ করেন।
• প্রতিটি পদচিহ্নের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও আঙুলের বিন্যাস বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা নির্ধারণ করেন, পদচিহ্নটি পুরুষ না স্ত্রী বাঘের, এবং একই বাঘের পুনরাবৃত্তি হয়েছে কি না।
• পাগ-মার্ক পদ্ধতি ব্যয়সাশ্রয়ী এবং সহজলভ্য হওয়ায় অতীতে সুন্দরবনে এটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হতো, বিশেষ করে যখন আধুনিক প্রযুক্তি যেমন ক্যামেরা ট্র্যাপ বা ডিএনএ বিশ্লেষণ প্রচলিত ছিল না।
• তবে বর্তমানে এই পদ্ধতির সঙ্গে ক্যামেরা ট্র্যাপ ও GIS প্রযুক্তিও ব্যবহৃত হচ্ছে, যাতে গণনা আরও নির্ভুল হয়। তবুও, প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে পাগ-মার্ক পদ্ধতি এখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
• এই পদ্ধতি শুধু সংখ্যা নয়, বরং বাঘের গমনপথ, কার্যক্ষেত্র (territory), ও আচরণগত তথ্য সম্পর্কেও ধারণা দেয়।
• যদিও এই পদ্ধতির সীমাবদ্ধতা আছে—যেমন একই বাঘের একাধিক ছাপ গণনায় আসতে পারে বা বৃষ্টিতে ছাপ নষ্ট হতে পারে—তবুও সুন্দরবনের কঠিন ভূপ্রকৃতির কারণে এটি এখনো বহুল ব্যবহৃত একটি কার্যকর উপায়।
সবশেষে বলা যায়, সুন্দরবনের বাঘ গণনায় “পাগ-মার্ক” পদ্ধতি সবচেয়ে প্রচলিত এবং দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি, যা বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তাই সঠিক উত্তর হলো (ক) পাগ-মার্ক।
0
Updated: 1 week ago
বাংলাদেশের অন্তর্গত সুন্দরবনের আয়তন কত?
Created: 4 months ago
A
২৪০০ বর্গমাইল ১
B
৯৫০ বর্গমাইল
C
৯২৫ বর্গমাইল
D
২০০ বর্গমাইল
সুন্দরবনের মোট আয়তন ৩৮৬০ বর্গমাইল বা ১০০০০ বর্গকি.মি প্রায়।
- এর মধ্যে ৩/৫ অংশ বা ২৩১৮ বর্গমাইল বা ৬০০০ বর্গকি.মি বাংলাদেশ অংশে পড়েছে।
- কাছাকাছি অপশন হিসাবে ক) ২৪০০ বর্গমাইল অপশনটি নেওয়া হলো।
উল্লেখ্য,
- ৬ ডিসেম্বর ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো সুন্দরবনকে ৭৯৮ তম ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
- এটি পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন এবং বাংলাদেশের জাতীয় বন।
উৎস: বাংলাদেশ বনবিভাগ ওয়েবসাইট ও ব্রিটানিকা।
0
Updated: 4 months ago