কোথায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করা হয়?
A
সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
B
মুজিবনগর
C
পল্টন ময়দান
D
প্রেস ক্লাব
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা দেশের ইতিহাসে এক অনন্য ও তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা, যা বাঙালি জাতির স্বাধীনতার পথচলাকে দৃঢ় ভিত্তি দেয়। এ ঘোষণা ছিল জাতির মুক্তির অঙ্গীকার ও স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। প্রশ্নের সঠিক উত্তর হলো পল্টন ময়দান।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি সেনারা নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়, যা ইতিহাসে “অপারেশন সার্চলাইট” নামে পরিচিত। এর পরপরই দেশজুড়ে স্বাধীনতার দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিরোধ শুরু হয়। ১৯৭১ সালের ৩১ মার্চ ঢাকার পল্টন ময়দানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ করা হয়, যেখানে মুক্তিকামী মানুষ স্বাধীনতার ঘোষণা শুনে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। ইশতেহারটি পাঠ করেন ছাত্রনেতা আমিরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রাথমিক পর্যায়ে এটি জনগণের মধ্যে স্বাধীনতার বার্তা পৌঁছে দেয়।
পল্টন ময়দান সেই সময় ছিল রাজনৈতিক সমাবেশ ও আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এখানে বহুবার রাজনৈতিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে। স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণার জন্য এই স্থানটি বেছে নেওয়া হয়েছিল কারণ এটি ছিল জনসমাবেশের জন্য সর্বাধিক উপযুক্ত এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন একটি জায়গা।
ইশতেহারে বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ আর পাকিস্তানের শাসন মেনে নেবে না এবং তারা মুক্ত, স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে লড়বে। এতে স্বাধীন বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক নীতি ও জনগণের অধিকার সুরক্ষার অঙ্গীকারও ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার মূল বার্তা ছিল—বাংলাদেশের স্বাধীনতা জনগণের, আর জনগণের জন্যই হবে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা।
এ ঘোষণার ফলে মুক্তিযুদ্ধের পথ আরও সুসংহত হয়। এটি ছিল রাজনৈতিক ও মানসিকভাবে মুক্তিকামী জনতাকে একত্রিত করার শক্তিশালী প্রেরণা। পরে ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ সালে কুষ্টিয়ার মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান মুজিবনগর) আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়, যেখানে স্বাধীনতার ঘোষণা পুনরায় পাঠ করা হয় এবং মুজিবনগর সরকার গঠিত হয়।
পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা বাংলাদেশের ইতিহাসে কেবল একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ নয়, এটি ছিল জাতির অস্তিত্ব রক্ষার দৃঢ় প্রতিজ্ঞার প্রতীক। এই ঘোষণার মাধ্যমেই স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনা স্পষ্ট হয় এবং বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয়ের পথে অগ্রসর হয়। তাই পল্টন ময়দান শুধু একটি স্থান নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের এক অমর সাক্ষী।
0
Updated: 1 day ago
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জারি করা হয় কত তারিখে?
Created: 1 month ago
A
১১ এপ্রিল, ১৯৭১
B
২৬ মার্চ, ১৯৭১
C
১৭ এপ্রিল, ১৯৭১
D
১০ এপ্রিল, ১৯৭১
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র হলো বাংলাদেশের প্রবাসী সরকারের মাধ্যমে স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা।
-
আদেশ জারি করেন: অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম
-
জারি তারিখ: ১০ এপ্রিল ১৯৭১, কার্যকরীভাবে বলবৎ ২৬ মার্চ ১৯৭১ থেকে
-
লিপিবদ্ধ করেন: ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম
-
পাঠ করেন: অধ্যাপক ইউসুফ আলী, মুজিবনগরে, ১৭ এপ্রিল ১৯৭১
-
সংবিধানে সংযুক্তি: বাংলাদেশের সংবিধানের ৬ষ্ঠ অধ্যায়ে ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংযুক্ত করা হয়েছে
0
Updated: 1 month ago
মুজিবনগরে কোন তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়েছিল?
Created: 1 week ago
A
২৬ মার্চ, ১৯৭১
B
১০ এপ্রিল, ১৯৭১
C
৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭১
D
১০ নভেম্বর, ১৯৭১
0
Updated: 1 week ago
বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা বার্তাটি কোন সংগঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সকল স্থানে প্রচারিত হয়েছিল?
Created: 1 day ago
A
পুলিশ বাহিনী
B
ইপিআর
C
সেনাবাহিনী
D
বিডিআর
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার সময়, জনগণকে খবর পৌঁছে দেওয়া এবং বিভিন্ন স্থানে স্বাধীনতার বার্তা প্রচারের জন্য মূলভাবে ইপিআর (East Pakistan Rifles / EPR) ব্যবহার করা হয়েছিল। স্বাধীনতার প্রথম দিনগুলোতে ইপিআর তাদের কার্যক্রমের মাধ্যমে স্বাধীনতার বার্তাটি প্রতিটি অঞ্চলে পৌঁছে দিয়েছিল।
-
ইপিআর-এর ভূমিকা: ইপিআর ছিল সীমান্ত রক্ষাকারী এবং নিরাপত্তা বাহিনী, যারা স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় জনগণকে সহায়তা এবং বার্তা প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। তারা দ্রুত ও বিশ্বস্তভাবে বার্তা বহন করার ক্ষমতা রাখে।
-
বার্তা প্রচারের গুরুত্ব: স্বাধীনতার ঘোষণা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছানো জরুরি ছিল। ইপিআর-এর মাধ্যমে এই বার্তা দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে ছড়িয়ে পড়ে, যা জনগণকে আন্দোলনে অংশগ্রহণে উদ্বুদ্ধ করেছিল।
-
অন্যান্য বিকল্পের তুলনা:
-
পুলিশ বাহিনী: স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করলেও স্বাধীনতার বার্তা দেশের সমস্ত স্থানে ছড়িয়ে দেওয়ার মূল ভূমিকা পালন করেনি।
-
সেনাবাহিনী: স্বাধীনতা যুদ্ধে মূল প্রতিরোধ গঠন করলেও প্রাথমিক বার্তা প্রচারের জন্য ইপিআর-এর তুলনায় কম ব্যবহার করা হয়।
-
বিডিআর (বর্তমান র্যাব ও বিডিআর): স্বাধীনতা যুদ্ধের শুরুতে এই বাহিনী স্বাধীনতার বার্তা প্রচারের মূল মাধ্যম ছিল না।
-
-
প্রভাব: ইপিআর-এর মাধ্যমে স্বাধীনতার বার্তা দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছালে আন্দোলন জোরদার হয় এবং দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিরোধ ও সংগ্রামের সূচনা হয়। এটি স্বাধীনতার অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।
সারসংক্ষেপে, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা বার্তাটি দেশের সকল স্থানে দ্রুত ও কার্যকরভাবে প্রচারের জন্য প্রধানত ইপিআর (EPR) ব্যবহার করা হয়েছিল। তাদের ভূমিকা ছিল দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে স্বাধীনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া এবং জনগণকে সচেতন ও উদ্দীপিত করা।
0
Updated: 1 day ago