জনপ্রতি দৈনিক কত কিলোক্যালোরির নীচে খাদ্য গ্রহণকে চরম দারিদ্র্য হিসাবে বিবেচনা করা হয়?
A
২,০১৫
B
১,৭০৫
C
১,৮০৫
D
২,১২২
উত্তরের বিবরণ
চরম দারিদ্র্য হিসেবে পরিচিত মানুষের খাদ্য গ্রহণের সীমা সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। এই সীমাটি নির্ধারণ করা হয়েছে মূলত মানুষের শারীরিক প্রয়োজনীয়তার ভিত্তিতে, যা খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে পূর্ণ করা হয়।
তাদের মধ্যে যারা চরম দারিদ্র্যের অধীনে বসবাস করেন, তারা প্রতিদিন কত কিলোক্যালোরি গ্রহণ করেন, তা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যাদের প্রতি দিন ১৮০৫ ক্যালরি বা তার কম খাদ্য গ্রহণ করতে হয়, তাদেরকে চরম দারিদ্র্যের সীমার মধ্যে ধরা হয়। এর মানে হলো, তাদের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ এত কম থাকে যে তারা স্বাভাবিকভাবে জীবিত থাকার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়ার সুযোগ পায় না। এটি সমাজের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকে, কারণ এটি মানুষের জীবনযাত্রার মানকে প্রভাবিত করে।
-
দারিদ্র্যরেখা: সাধারণত, মানুষের দৈনিক খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ অনুযায়ী তাদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়।
-
২,০১৫ ক্যালরি: এই ক্যালরির পরিমাণ সাধারনত একটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক খাবারের জন্য যথেষ্ট, তবে এটি চরম দারিদ্র্যের সাথে সম্পর্কিত নয়।
-
১,৭০৫ ক্যালরি: এই পরিমাণ ক্যালরি অল্প হলেও কিছু মানুষের দৈনন্দিন খাদ্যের জন্য যথেষ্ট হতে পারে, কিন্তু এটি চরম দারিদ্র্যের অন্তর্গত নয়।
-
১,৮০৫ ক্যালরি: এই পরিমাণ ক্যালরি দৈনিক খাদ্য গ্রহণের নিচে থাকলে, এটি চরম দারিদ্র্যের ইঙ্গিত দেয়। যারা এরকম খাদ্য গ্রহণ করেন, তারা সাধারণত একটি ভালো জীবনযাপন করতে পারেন না, কারণ তাদের পুষ্টি ও শক্তির প্রয়োজনীয়তা পূর্ণ হয় না।
-
২,১২২ ক্যালরি: এটি একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির জন্য পূর্ণাঙ্গ খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ, যা দারিদ্র্যরেখার উপরে আছেন এমন মানুষের জন্য আদর্শ।
এই তথ্যগুলো জানিয়ে দেওয়া হয়, যাতে আমরা বুঝতে পারি যে দারিদ্র্য শুধু অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি একটি পুষ্টি সমস্যা হিসেবে সমাজে প্রতিফলিত হয়।
0
Updated: 1 day ago
পৃথিবীর বৃহত্তম ব-দ্বীপ কোনটি?
Created: 1 week ago
A
সুন্দরবন
B
গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ
C
আমাজন ব-দ্বীপ
D
নীলনদ ব-দ্বীপ
বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ হলো গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বা বাংলাদেশ ব-দ্বীপ। এটি দক্ষিণ এশিয়ার বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের একটি বিশাল অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। নদী, পলি এবং জোয়ার-ভাটার প্রভাবে গঠিত এই ব-দ্বীপটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উর্বর মাটি ও জীববৈচিত্র্যের জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। নিচে এর গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরা হলো—
• অবস্থান ও বিস্তৃতি: গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদীর মিলিত পলিতে গঠিত এই ব-দ্বীপের আয়তন প্রায় ১,০০,০০০ বর্গকিলোমিটার। এর বড় অংশ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে এবং কিছু অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত।
• গঠনের কারণ: হিমালয় পর্বতমালা থেকে উৎপন্ন নদীগুলো যখন সমুদ্রের দিকে প্রবাহিত হয়, তখন তারা প্রচুর পলি বয়ে আনে। এই পলিগুলো বঙ্গোপসাগরের উপকূলে জমে গিয়ে ধীরে ধীরে একটি বিশাল ব-দ্বীপ তৈরি করে।
• প্রধান নদীসমূহ: গঙ্গা, পদ্মা, যমুনা, মেঘনা এবং ব্রহ্মপুত্র নদ এই ব-দ্বীপের মূল স্রোতধারা। এরা শত শত উপনদী ও শাখানদী তৈরি করে সারা অঞ্চলে বিস্তৃত জলপ্রবাহ সৃষ্টি করেছে।
• সুন্দরবন অঞ্চল: এই ব-দ্বীপের দক্ষিণাংশে অবস্থিত সুন্দরবন পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য। এটি ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, যেখানে রয়েল বেঙ্গল টাইগারসহ নানা বিরল প্রাণী বাস করে।
• উর্বরতা ও কৃষি: গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপের মাটি অত্যন্ত উর্বর কারণ এতে নিয়মিত নদীর পলি জমে। এজন্য এখানে ধান, পাট, গম, আখ ও বিভিন্ন সবজি চাষ ব্যাপকভাবে হয়। বাংলাদেশের কৃষি অর্থনীতির মূল ভিত্তি এই অঞ্চল।
• জলবায়ু ও প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য: এ অঞ্চলের জলবায়ু আর্দ্র উষ্ণমণ্ডলীয়। প্রচুর বৃষ্টি ও নদীর স্রোতের কারণে এখানে ঘন সবুজ বন, জলাভূমি ও নদনদীপূর্ণ পরিবেশ গড়ে উঠেছে।
• জনবসতি ও অর্থনৈতিক গুরুত্ব: বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম। এখানকার মানুষ নদীনির্ভর জীবনযাপন করে—মৎস্য আহরণ, কৃষিকাজ ও নদীপথে পরিবহন তাদের জীবিকার প্রধান উৎস।
• ভূতাত্ত্বিক দিক: এই ব-দ্বীপটি এখনো গঠনের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। প্রতি বছর নতুন পলি জমে ভূমি বৃদ্ধি পাচ্ছে, আবার বন্যা ও জোয়ারে কিছু অংশ ক্ষয়ও হচ্ছে। তাই এটি একটি জীবন্ত ব-দ্বীপ (active delta)।
• বিশ্বে স্বীকৃতি: গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা ব-দ্বীপকে পৃথিবীর বৃহত্তম ও সক্রিয় ব-দ্বীপ হিসেবে ভূগোলবিদরা স্বীকৃতি দিয়েছেন। এটি “বাংলাদেশ ব-দ্বীপ” নামেও পরিচিত কারণ এর বৃহত্তম অংশ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে অবস্থিত।
সব মিলিয়ে, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র ব-দ্বীপ শুধু বিশ্বের বৃহত্তম নয়, বরং এটি একটি অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদ, যা বাংলাদেশের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত পরিচয়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
0
Updated: 1 week ago
কোথায় ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক অবস্থিত?
Created: 4 weeks ago
A
লন্ডন
B
প্যারিস
C
ব্রাসেলস
D
ফ্রাঙ্কফুর্ট
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ECB) হল ইউরো মুদ্রার কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রক এবং এটি মূলত ইউরোজোনের আর্থিক নীতি পরিচালনা করে। এর উদ্ভব এবং কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা নিম্নরূপ:
-
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাথমিক ধারণা এসেছে ১৯৮৮ সালে, যখন Economic and Monetary Union (EMU) গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়।
-
১৯৯৪ সালে European Monetary Institute (EMI) প্রতিষ্ঠিত হয়, যা ECB-এর পূর্বসূরী হিসেবে কাজ করে।
-
১ জুন, ১৯৯৮ সালে আমস্টারডাম চুক্তির মাধ্যমে ECB আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, EMI-এর উত্তরসূরী হিসেবে।
-
১ জানুয়ারি ১৯৯৯ সালে EU অঞ্চলে একক মুদ্রা 'ইউরো' চালু করা হয়।
-
ECB-এর সদরদপ্তর জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্টে অবস্থিত।
ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল কার্যাবলী হলো:
-
EU অঞ্চলে একটি স্থিতিশীল ব্যাংকিং পরিবেশ নিশ্চিত করা।
-
মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা এবং অর্থনীতির স্থিতিশীলতা রক্ষা করা।
-
নিরাপদ ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
-
ইউরো নোট ইস্যু ও সরবরাহ করা।
-
ইউরো মুদ্রার বিনিময় হার নির্ধারণ করা।
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কিত তথ্য:
-
ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদরদপ্তর স্ট্রাসবার্গ, ব্রাসেলস এবং লুক্সেমবার্গে অবস্থিত।
-
EU-এর সদর দপ্তর বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে।
-
বর্তমানে EU-এর সদস্য দেশ সংখ্যা ২৭টি।
0
Updated: 4 weeks ago
বিখ্যাত চিত্রকর্ম 'তিন কন্যা' এর চিত্রকর কে?
Created: 3 days ago
A
জয়নুল আবেদীন
B
কামরুল হাসান
C
এস. এম. সুলতান
D
রফিকুন্নবী
বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘তিন কন্যা’ বাংলাদেশের আধুনিক শিল্পকলার ইতিহাসে এক অনন্য মাইলফলক। এই অসাধারণ চিত্রকর্মটির স্রষ্টা হলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী কামরুল হাসান। তিনি বাংলাদেশের শিল্পাঙ্গনে “জাতীয় চেতনার চিত্রকর” নামে খ্যাত, কারণ তাঁর তুলির আঁচড়ে ফুটে উঠেছে গ্রামীণ জীবনের সহজ সৌন্দর্য, মানুষের মুখের অভিব্যক্তি, এবং দেশপ্রেমের গভীর অনুভূতি।
‘তিন কন্যা’ চিত্রকর্মে কামরুল হাসান গ্রামীণ নারীর সৌন্দর্য ও জীবনযাত্রাকে গভীরভাবে তুলে ধরেছেন। ছবিতে তিনজন নারীকে পাশাপাশি বসা বা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখা যায়—তাদের পোশাক, মুখের ভাবভঙ্গি ও শরীরী ভাষা দিয়ে চিত্রকর তুলে ধরেছেন বাঙালি নারীর সাধারণ অথচ গৌরবময় উপস্থিতি। এখানে নেই কোনো জাঁকজমক, নেই কৃত্রিমতা; বরং ছবিটি জাগিয়ে তোলে মাটির গন্ধ, গ্রামবাংলার আবহ, ও নারীর স্বাভাবিক মর্যাদার প্রতিচ্ছবি।
চিত্রটির অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর রঙের ব্যবহার ও সরল গঠনশৈলী। কামরুল হাসান উজ্জ্বল কিন্তু নিয়ন্ত্রিত রঙের মাধ্যমে নারী চরিত্রগুলিকে জীবন্ত করে তুলেছেন। ছবিতে ব্যবহৃত বাদামি, সাদা, লাল ও হলুদ রঙের সংমিশ্রণ একদিকে উষ্ণতা সৃষ্টি করে, অন্যদিকে শান্তি ও স্থিরতার অনুভূতি জাগায়। ছবির প্রতিটি রেখা যেন নারীর স্থিতধী চরিত্র, সহনশীলতা ও অন্তর্গত শক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে।
কামরুল হাসান সবসময়ই বিশ্বাস করতেন, শিল্পের মূল উৎস হলো মানুষের জীবন ও মাটির টান। তাই তাঁর অধিকাংশ কাজেই গ্রামীণ মানুষ, কৃষক, নারী ও প্রকৃতির প্রতিফলন দেখা যায়। তিনি জয়নুল আবেদীনের সমসাময়িক ছিলেন এবং তাঁদের যুগল প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের শিল্পচর্চা এক নতুন মাত্রা পায়। ‘তিন কন্যা’ সেই ধারারই একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে নারী শুধু বিষয়বস্তু নয়, বরং বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও সমাজের প্রতীক হিসেবে উঠে এসেছে।
এই চিত্রকর্মটি বাংলাদেশের শিল্পকলার পাঠ্যক্রমে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে অন্তর্ভুক্ত এবং দেশ-বিদেশে বহু প্রদর্শনীতে এটি প্রশংসিত হয়েছে। কামরুল হাসানের শিল্পদৃষ্টিতে যেমন আধুনিকতার ছোঁয়া ছিল, তেমনি গভীরভাবে প্রোথিত ছিল লোকজ ঐতিহ্য ও বাঙালিয়ানার চেতনা। তাঁর অন্যান্য বিখ্যাত চিত্রকর্মের মধ্যে রয়েছে ‘গণজাগরণ’, ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’, ‘বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি’, ইত্যাদি, যা বাংলাদেশের ইতিহাস ও জাতীয় অনুভূতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত।
সবশেষে বলা যায়, ‘তিন কন্যা’ কেবল একটি চিত্রকর্ম নয়, বরং বাঙালি নারীর সৌন্দর্য, মর্যাদা ও মানবিক শক্তির প্রতীক। কামরুল হাসানের তুলির ছোঁয়ায় এই ছবিটি বাংলাদেশের শিল্প-ঐতিহ্যে স্থায়ীভাবে স্থান করে নিয়েছে। তাঁর এই সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি, কীভাবে একজন শিল্পী নিজের জাতির সংস্কৃতি ও আবেগকে চিত্ররূপে অমর করে রাখতে পারেন।
0
Updated: 3 days ago