CEDAW ঘোষণা কী বিষয় নিয়ে?
A
শিশু ও অধিকার ও শিক্ষা
B
শিক্ষার প্রযুক্তি
C
নারীশিক্ষা ও ক্ষমতায়ন
D
শিক্ষার বিনিয়োগ
উত্তরের বিবরণ
CEDAW (Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women) একটি আন্তর্জাতিক চুক্তি যা নারীশিক্ষা ও নারীদের ক্ষমতায়নের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়। ১৯৭৯ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই চুক্তিটি গৃহীত হয় এবং এর লক্ষ্য ছিল নারী ও পুরুষের মধ্যে সকল প্রকার বৈষম্য দূর করা। এই চুক্তি বিশেষভাবে নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিভিন্ন দেশের সরকারকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করতে উৎসাহিত করে।
এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল নারীদের জীবনে যে সমস্ত বৈষম্যমূলক আচরণ এবং সাংস্কৃতিক, সামাজিক বাধা রয়েছে, সেগুলির বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টা গড়ে তোলা। CEDAW বিশেষভাবে নারীশিক্ষা এবং নারীদের ক্ষমতায়নকে প্রাধান্য দেয়, যাতে নারীরা তাদের জীবন, পেশা, ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সমান অধিকার ভোগ করতে পারে।
-
নারীশিক্ষা: CEDAW নারীশিক্ষাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে, কারণ এটি নারীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। শিক্ষা শুধুমাত্র নারীদের জ্ঞান ও দক্ষতা বাড়ায় না, বরং তাদের জীবনের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
-
ক্ষমতায়ন: নারীদের ক্ষমতায়ন একটি শক্তিশালী ও প্রাথমিক বিষয় CEDAW এর মধ্যে। নারীদের অধিকার এবং স্বাধীনতা প্রদান করা, তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশীদারিত্ব নিশ্চিত করা, এবং তাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সমান সুযোগ সৃষ্টি করা, CEDAW এর লক্ষ্য। নারীশিক্ষা ও ক্ষমতায়ন একে অপরের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত, কারণ একটির অভাব আরেকটির উন্নতি বাধাগ্রস্ত করে।
-
বিশ্বব্যাপী প্রভাব: CEDAW আন্তর্জাতিকভাবে নারীদের অধিকার সুরক্ষা এবং তাদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এটি বিভিন্ন দেশে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করে নারীদের জন্য শিক্ষা, কর্মসংস্থান এবং রাজনৈতিক অধিকার উন্নত করার প্রচেষ্টা চালাতে।
-
সরকারের দায়বদ্ধতা: CEDAW সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে নারীদের প্রতি বৈষম্য দূরীকরণে আইন ও নীতিমালা প্রণয়নের জন্য বাধ্য করে। এটি নারীশিক্ষা ও নারীদের ক্ষমতায়ন বিষয়ক সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দেশগুলোর কাছে প্রত্যাশা রাখে।
এই চুক্তি বাস্তবায়নে নারীদের শিক্ষা ও ক্ষমতায়ন বিশ্বের প্রতিটি কোণায় একটি মৌলিক দাবি হয়ে উঠেছে, যা নারীদের স্বাধীনতা, সমান অধিকার এবং সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
0
Updated: 23 hours ago
বাংলাদেশ কখন নারীর বিরুদ্ধে সকল প্রকার বৈষম্য (CEDAW) দূরীকরণ সনদে সম্মতি জানায়?
Created: 1 month ago
A
১০ ডিসেম্বর ১৯৮৪
B
৬ নভেম্বর ১৯৮৪
C
৫ আগস্ট ১৯৮৫
D
২ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৭
বাংলাদেশ ৬ নভেম্বর ১৯৮৪ সালে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণের সনদ CEDAW-এ (Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women) সম্মতি প্রদান করে।
এটি আন্তর্জাতিকভাবে নারীর অধিকার ও সমতার নিশ্চয়তা প্রদানকারী একটি গুরুত্বপূর্ণ কনভেনশন। নিচে এর মূল তথ্যগুলো দেওয়া হলো—
-
CEDAW-এর পূর্ণরূপ: Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination Against Women (নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য প্রতিরোধ কনভেনশন)
-
গৃহীত হয়: ১৮ ডিসেম্বর, ১৯৭৯
-
সনদ স্বাক্ষর শুরু: ১ মার্চ, ১৯৮০
-
কার্যকর হয়: ৩ সেপ্টেম্বর, ১৯৮১
-
বর্তমান চেয়ারপারসন: আনা পেলেজ নারভেজ
-
মোট অনুচ্ছেদ: ৩০টি
-
অনুচ্ছেদ ৩-১৬: নারীর অধিকার বিষয়ক
-
অনুচ্ছেদ ১৭-২২: কর্মপন্থা ও দায়িত্ব
-
অনুচ্ছেদ ২৩-৩০: প্রশাসনিক বিষয়
-
CEDAW কমিটিতে সারা বিশ্ব থেকে নারী অধিকার বিষয়ক ২৩ জন বিশেষজ্ঞ রয়েছেন। তারা প্রত্যেকে ৪ বছরের জন্য নির্বাচিত হন।
-
কনভেনশন গৃহ-নির্যাতন, প্রজনন অধিকার, আইনগত, রাজনৈতিক, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি এবং সামাজিক জীবনের ক্ষেত্রে নারীর সমান মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করতে কাজ করে।
-
এটি রাষ্ট্রসমূহকে নারীর মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা, নারী পাচার ও পতিতাবৃত্তি রোধ, জাতীয়তা অর্জন ও পরিবর্তনের সমান অধিকার দেওয়া, এবং রাজনৈতিক ও জনজীবনে বৈষম্য দূর করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানায়।
-
এছাড়াও গ্রামীণ নারীর সমস্যা, বিবাহ ও পারিবারিক জীবনে সমান অধিকার, এবং আইনের দৃষ্টিতে সমতা কনভেনশনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
-
কনভেনশন অনুযায়ী নারীর নিজ দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে অংশগ্রহণ এবং সরকারের সব পর্যায়ে কাজ করার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে—
-
বাংলাদেশ ৬ নভেম্বর ১৯৮৪ সালে CEDAW অনুমোদন করে।
-
স্বাক্ষরের সময় বাংলাদেশ অনুচ্ছেদ ২, অনুচ্ছেদ ১৩(ক) এবং অনুচ্ছেদ ১৬(১)(গ)(চ) সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে অনুচ্ছেদ ২ ও ১৬(১)(গ) সংরক্ষণ রেখে বাকিগুলো থেকে সংরক্ষণ তুলে নেয়া হয়।
-
অনুচ্ছেদ ২ মূলত পুরুষ ও নারীর মধ্যে সমতার নীতি সংবিধান বা আইনে অন্তর্ভুক্ত করা, নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক আইন ও প্রথা বাতিল বা সংশোধন করা এবং প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়নের বিষয়টি স্পষ্ট করে।
-
অনুচ্ছেদ ১৬(১)(গ)-তে বলা হয়েছে বিবাহ, বিবাহে পছন্দ-অপছন্দ ও বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার ও দায়দায়িত্ব থাকবে।
অতিরিক্ত তথ্য হিসেবে, প্রতি বছর ৩ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক CEDAW দিবস পালন করা হয়।
0
Updated: 1 month ago