বাংলাদেশে নতুনধারার নাটকের পথিকৃৎ কে ?
A
আলাউদ্দিন আল আজাদ
B
সেলিম আল দীন
C
আব্দুল্লাহ আল মামুন
D
সৈয়দ শামসুল হক
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশে নতুনধারার নাটক এক নতুন উন্মোচন ঘটায়, যেখানে নাটকটির ধরন, ভাষা এবং গল্প বলার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা হয়েছিল। সেলিম আল দীন বাংলাদেশের নাট্যজগতের একটি অনন্য নাম, যিনি নতুনধারার নাটকের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত। তার নাটকগুলো সাধারণত সামাজিক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে গড়ে উঠেছিল এবং দেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছিল।
-
নতুনধারা নাটক: নতুনধারা নাটক মূলত এক ধরনের নাট্যধারা, যা প্রচলিত নাট্যধারা থেকে আলাদা ছিল। সেলিম আল দীন এর নাটকে দর্শকদের জন্য গভীর সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বার্তা থাকত। তিনি কেবল নাটকের মাধ্যমে মঞ্চের সংস্কৃতিকে নয়, বরং দেশের বিভিন্ন সমস্যাকে তুলে ধরার চেষ্টা করতেন।
-
সেলিম আল দীন: সেলিম আল দীন ১৯৪৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিনি বাংলাদেশের নাট্যচর্চায় এক নতুন ধারা সৃষ্টি করেন। তার নাটকগুলোর মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, মানুষের মানবিক দিক, বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি উঠে এসেছে। তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন, শহুরে বাস্তবতা এবং মানুষের মনস্তত্ত্বের সঙ্গে মিশে একটি নতুন নাট্যশৈলী তৈরি করেন। তার নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নাটক যেমন "তপস্বী", "কৃষ্ণকলি", "বহমান", "হীরক রাজার দেশে" ইত্যাদি।
-
সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব: সেলিম আল দীনের নাটকগুলো সমাজের নানা দিক তুলে ধরত, যেখানে মানুষদের জীবনযাপন, সংগ্রাম এবং সংস্কৃতির শিকড় সম্পর্কে চিন্তা করা হতো। তিনি সমাজের গঠনমূলক পরিবর্তন চেয়েছিলেন, যা তার নাটকে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তার নাটকগুলো শুধু মঞ্চে নয়, সমগ্র বাংলাদেশের দর্শকদের মধ্যে নতুন চিন্তাভাবনা এবং সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা তৈরি করেছিল।
-
অন্য বিকল্পরা: অন্যান্য অপশনগুলির মধ্যে আলাউদ্দিন আল আজাদ, আব্দুল্লাহ আল মামুন, এবং সৈয়দ শামসুল হকও বাংলাদেশের নাটক জগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তবে তারা সকলেই সেলিম আল দীনের মত পুরোপুরি নতুনধারা নাটকের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত নন। তাদের নাটকগুলো মূলত বাংলা নাটকের বিভিন্ন ধারায় অবদান রেখেছে, কিন্তু সেলিম আল দীন ছিলেন নতুনধারা নাটকের স্রষ্টা, যিনি নাটককে একটি নতুন মাত্রায় নিয়ে গিয়েছিলেন।
সেলিম আল দীনের অবদান বাংলাদেশের নাট্যাঙ্গনে চিরকাল স্মরণীয় থাকবে। তার নাটকগুলো আজও বাংলাদেশের সংস্কৃতির অংশ হিসেবে রয়ে গেছে।
0
Updated: 1 day ago
বাংলা মৌলিক নাটকের যাত্রা শুরু হয় কোন নাট্যকারের হাতে?
Created: 3 months ago
A
মধুসূদন দত্ত
B
দীনবন্ধু মিত্র
C
জ্যোতিন্দ্রনাথ ঠাকুর
D
তারাচরণ শিকদার
বাংলা সাহিত্যে মৌলিক নাটকের সূচনা ঘটে ১৮৫২ খ্রিষ্টাব্দে, যখন তারাচরণ শিকদার রচনা করেন ‘ভদ্রার্জুন’ নামক একটি প্রহসনধর্মী নাটক। এই নাটকের মাধ্যমে বাংলা ভাষায় মৌলিক নাট্যচর্চার পথপ্রদর্শক হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি।
একই বছরে, ১৮৫২ সালে, বাংলা সাহিত্যে প্রথম ট্রাজেডি নাটক ‘কীর্তিবিলাস’ প্রকাশিত হয়, যার রচয়িতা ছিলেন যোগেন্দ্রচন্দ্র গুপ্ত। এটি ছিল বাংলা নাটকে শোকাত্মক আবহ সৃষ্টির প্রাথমিক প্রয়াস।
এর প্রায় এক দশক পর, ১৮৬১ সালে, মাইকেল মধুসূদন দত্তের লেখনীতে জন্ম নেয় বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক ট্রাজেডি নাটক ‘কৃষ্ণকুমারী’, যা সাহিত্যিক ও নাট্যপ্রেমী মহলে গভীর প্রভাব ফেলে।
তথ্যসূত্র: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, ড. মাহবুবুল আলম।
0
Updated: 3 months ago
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের 'ভ্রান্তিবিলাস' কোন নাটকের গদ্য অনুবাদ?
Created: 3 months ago
A
মার্চেন্ট অব ভেনিস
B
কমেডি অব এররস
C
অ্যা মিডসামার নাইটস ড্রিম টেমিং অব দ্য শ্রুনাইটস ড্রিম
D
টেমিং অব দ্য শ্রু
ভ্রান্তিবিলাস
- ভ্রান্তিবিলাস রচিত হয় ১৮৬৯ সালে, বিদ্যাসাগরের প্রথম রচনা বেতালপঞ্চবিংশতির বাইশ বছর পরে।
- ভ্রান্তিবিলাস বিশ্বখ্যাত নাট্যকার শেক্সপীয়রের 'কমেডি অব এররস' নাটক অবলম্বনে রচিত।
- বইয়ের 'বিজ্ঞাপন' শিরোনাম অংশে তিনি লিখেছেন:
'কিছু দিন পূর্বে, ইংলন্ডের অদ্বিতীয় কবি শেক্সপীয়রের প্রণীত ভ্রান্তিপ্রহসন পড়িয়া আমার বোধ হইয়াছিল, এতদীয় উপাখ্যানভাগ বাঙ্গালাভাষায় সঙ্কলিত হইলে লোকের চিত্তরঞ্জন হইতে পারে। তদনুসারে ঐ প্রহসনের উপাখ্যানভাগ বাঙ্গালাভাষায় সঙ্কলিত ও ভ্রান্তিবিলাস নামে প্রচারিত হইল।'
- এরপরে তিনি বলেছেন যে এই নাটকের কাব্য-অংশ শেক্সপীয়রের অন্যান্য নাটকের চেয়ে 'নিকৃষ্ট', কিন্তু এর কাহিনী-অংশ কৌতুকপূর্ণ। সেজন্য তিনি এই নাটকটি বাংলাভাষায় রূপান্তরের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন।
-------------------------
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর:
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
- ১৮৩৯ সালে সংস্কৃত কলেজ ঈশ্বরচন্দ্রকে ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি প্রদান করে।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর 'ঈশ্বরচন্দ্র শর্মা' নামেও স্বাক্ষর করতেন।
- ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরকে বাংলা গদ্যের জনক বলা হয়। তিনি প্রথম গদ্যে যতিচিহ বা বিরামচিহ্নের ব্যবহার শুরু করেন।
- তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ বেতাল পঞ্চবিংশতি (১৮৪৭)। এই গ্রন্থে তিনি প্রথম যতি বা বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করেন।
• বিদ্যাসাগরের কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থের নাম:
- শকুন্তলা,
- সীতার বনবাসের,
- ভ্রান্তিবিলাস ইত্যাদি।
• ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত শিক্ষামূলক গ্রন্থ:
- আখ্যান মঞ্জরী,
- বোধোদয়,
- বর্ণপরিচয়,
- কথামালা ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর এবং ‘ভ্রান্তিবিলাস’ গ্রন্থ।
0
Updated: 3 months ago
সিরাজগঞ্জে সংঘটিত কৃষক-বিদ্রোহের পটভূমিকায় রচিত নাটক কোনটি?
Created: 1 month ago
A
জমিদার দর্পণ
B
নবান্ন
C
নুরুলদীনের সারা জীবন
D
গোত্রান্তর
‘জমিদার দর্পণ’ নাটক
-
রচয়িতা: মীর মশাররফ হোসেন।
-
বিষয়বস্তু: ১৮৭২-৭৩ সালের সিরাজগঞ্জের কৃষক-বিদ্রোহের প্রেক্ষাপট।
-
কাহিনী: অত্যাচারী জমিদার হায়ওয়ান আলী এর অত্যাচার এবং অধীনস্থ প্রজা আবু মোল্লার গর্ভবতী স্ত্রী নূরন্নেহারকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা।
-
বৈশিষ্ট্য: নাটকটির দৃশ্য ও ঘটনা সম্পূর্ণ বাস্তবসম্মত, কোন অংশই সাজানো নয়।
-
প্রভাব: নামকরণে ও ঘটনা বিন্যাসে দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীল-দর্পণ’ নাটকের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
অন্য সমকালীন নাটকসমূহ:
-
‘নবান্ন’ – বিজন ভট্টাচার্য রচিত; পঞ্চাশের মন্বন্তরের পটভূমিতে কৃষক জীবনের দুঃখ ও সংগ্রামের কাহিনি।
-
‘গোত্রান্তর’ (১৯৬০) – বিজন ভট্টাচার্য রচিত; ছিন্নমূল পূর্ববঙ্গবাসীর ভাগ্যবিপর্যয়।
-
‘নুরুলদীনের সারা জীবন’ – সৈয়দ শামসুল হক রচিত কাব্যনাট্য; রংপুরের কৃষক বিদ্রোহের বিষয়বস্তু।
0
Updated: 1 month ago