মীর মশার্রফ হোসেন রচিত গ্রন্থ কোনটি?
A
বিষাদসিন্ধু
B
মহাশ্মশান
C
ভ্রান্তবিলাস
D
কথোপকথন
উত্তরের বিবরণ
বাংলা সাহিত্যে মীর মশাররফ হোসেন এমন একজন লেখক যিনি সমাজ, ধর্ম ও মানবতার গভীর দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সাহিত্য রচনা করেছেন। তাঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি ‘বিষাদসিন্ধু’, যা তাঁকে বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে এক বিশেষ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে। এই গ্রন্থটি শুধু একটি উপন্যাস নয়, বরং তা বাঙালি মুসলমান সমাজে সাহিত্যিক জাগরণের অন্যতম নিদর্শন।
• ‘বিষাদসিন্ধু’ রচনার সময়কাল ১৮৮৫ থেকে ১৮৯১ সালের মধ্যে। এটি তিন খণ্ডে প্রকাশিত হয় এবং মূলত কারবালা যুদ্ধের মর্মান্তিক কাহিনিকে কেন্দ্র করে রচিত। এখানে ইসলামের ইতিহাস, মানবিক মূল্যবোধ ও আত্মত্যাগের আদর্শ সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে।
• এই উপন্যাসে হযরত ইমাম হোসেন (রঃ) ও তাঁর পরিবারের আত্মত্যাগের কাহিনি অত্যন্ত হৃদয়স্পর্শীভাবে উপস্থাপিত হয়েছে। লেখক ইতিহাসের ঘটনাকে সাহিত্যিক রূপে প্রকাশ করে পাঠকের আবেগকে গভীরভাবে নাড়া দিয়েছেন।
• মীর মশাররফ হোসেনের লেখনীর বৈশিষ্ট্য ছিল তাঁর ধর্মীয় আবেগ, বাস্তব সমাজচেতনা ও মানবিক মূল্যবোধের মিশ্রণ। ‘বিষাদসিন্ধু’-তে তিনি কেবল ধর্মীয় বিষয় নয়, মানুষের নৈতিক সংকট ও সহানুভূতির কথাও তুলে ধরেছেন।
• ভাষা ও শৈলীতে তিনি ব্যবহার করেছেন মধ্যযুগীয় প্রভাবযুক্ত কিন্তু আবেগপূর্ণ বাংলা। তাঁর বর্ণনা পাঠককে ইতিহাসের ভেতরে নিয়ে যায় এবং চরিত্রগুলোর মানসিক দিক স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে।
• ‘বিষাদসিন্ধু’ বাংলা সাহিত্যের প্রথম দিকের দীর্ঘ উপন্যাসগুলোর একটি। এটি বাংলা মুসলিম সমাজে উপন্যাসধারার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লেখকের দৃষ্টিভঙ্গি ধর্মীয় হলেও তাঁর সাহিত্যিক উপস্থাপনা ছিল সর্বজনীন মানবতার প্রতীক।
• উপন্যাসটির মাধ্যমে মীর মশাররফ হোসেন প্রমাণ করেন যে, তিনি শুধু একজন গল্পকার নন, বরং বাংলা মুসলিম সমাজে সাহিত্যচর্চার পথিকৃৎ। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে আছে ‘গজাল-ই-বদর’, ‘জীবন চরিত’, ‘রচনাবলী’, ‘রাত্রিদৃষ্টি’, ‘তারা বালিকা’ প্রভৃতি।
• ভুল বিকল্পগুলোর মধ্যে –
‘মহাশ্মশান’ রচনা করেছেন সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত, যা কবিতার সংকলন।
‘ভ্রান্তবিলাস’ বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের রচনা, যা একটি সামাজিক উপন্যাস।
‘কথোপকথন’ লিখেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যা প্রবন্ধধর্মী রচনা।
অতএব, সঠিক উত্তর ‘বিষাদসিন্ধু’, যা মীর মশাররফ হোসেনকে বাংলা সাহিত্যের এক অনন্য স্থান দিয়েছে এবং ধর্মীয় ইতিহাসকে সাহিত্যরূপে অমর করে রেখেছে।
0
Updated: 1 day ago
কোন নাটকে রাজার পুত্রের প্রতি বিমাতার আকর্ষ, পুত্রের প্রত্যাখ্যান ও বিমাতার ষড়যন্ত্রে পরিবারের সকলের মৃত্যু হয়?
Created: 3 weeks ago
A
টালা অভিনয়
B
এর উপায় কি
C
বসন্ত কুমারী নাটক
D
ফাঁস কাগজ
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন ঔপন্যাসিক, নাট্যকার এবং প্রাবন্ধিক। তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন জমিদার। নিজগৃহে মুনশির নিকট আরবি ও ফারসি শেখার মাধ্যমে মশাররফ হোসেনের লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়। মশাররফ হোসেন আজিজননেহার ও হিতকরী নামে দুটি পত্রিকাও সম্পাদনা করেছেন। তিনি বঙ্কিমযুগের অন্যতম প্রধান গদ্যশিল্পী এবং উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত।
• ‘বসন্তকুমারী’ নাটক:
-
মীর মশাররফ হোসেনের নাটকগুলোর মধ্যে ‘বসন্তকুমারী’ নাটক (১৮৭৩) উল্লেখযোগ্য।
-
মুসলমান নাট্যকার রচিত প্রথম নাটক হিসেবে এটিকে নির্দেশ করা যায়।
-
কাহিনিঃ ইন্দ্রপুরের বিপত্নীক রাজার বৃদ্ধ বয়সে যুবতী স্ত্রী গ্রহণ, রাজার যুবক পুত্রের প্রতি বিমাতার আকর্ষণ এবং প্রেম নিবেদন, পুত্রের প্রত্যাখ্যান ও বিমাতার ষড়যন্ত্র; পরিশেষে রাজপরিবারের সকলের মৃত্যু।
-
নাটকটির অপর নাম ‘বৃদ্ধস্য তরূণী ভার্যা’।
• তাঁর সাহিত্যকর্ম:
নাটক:
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
উপন্যাস:
-
বিষাদ-সিন্ধু
গ্রন্থ:
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ:
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
0
Updated: 3 weeks ago
মীর মশাররফ হোসেনের কোন গ্রন্থের উপজীব্য হিন্দু-মুসলমানের বিরোধ?
Created: 1 month ago
A
গো-জীবন
B
ইসলামের জয়
C
এর উপায় কী
D
বসন্তকুমারী নাটক
মীর মশাররফ হোসেন ছিলেন একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক, নাট্যকার এবং প্রাবন্ধিক, যিনি উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম পথিকৃৎ।
তার সাহিত্যিক যাত্রা শুরু হয়েছিল সাংবাদিকতার মাধ্যমে, যখন তিনি ছাত্রাবস্থায় সংবাদ প্রভাকর (১৮৩১) এবং কুমারখালির গ্রামবার্তা প্রকাশিকা (১৮৬৩)-এর মফঃস্বল সংবাদদাতা হিসেবে কাজ করতেন। তিনি বঙ্কিমযুগের গদ্যশিল্পী হিসেবে পরিচিত।
-
তার প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ হলো 'রত্নাবতী' (গল্পগ্রন্থ)।
-
তিনি প্রহসনও রচনা করেছেন, যার মধ্যে প্রধান হলো 'এর উপায় কি?'
-
তার নাটকগুলো হলো:
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
-
গো জীবন (১৮৮৯) একটি প্রবন্ধ পুস্তিকা, যার মূল বক্তব্য হলো কৃষি নির্ভর অর্থনীতিতে যেকোনো কারণে গোরহত্যা অনুচিত। মীর মশাররফ হোসেন এই প্রবন্ধ রচনা করেছিলেন হিন্দু ও মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ করার মানস থেকে।
তবে এ গ্রন্থের কারণে তিনি মামলায় জড়িয়ে পড়েন এবং অবশেষে মৌলবাদীদের প্রবল চাপের মুখে প্রবন্ধটি প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন।
0
Updated: 1 month ago
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক কে?
Created: 4 weeks ago
A
মীর মশাররফ হোসেন
B
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ
C
ইসমাইল হোসেন সিরাজী
D
সেলিনা হোসেন
বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক ছিলেন মীর মশাররফ হোসেন, যিনি ঔপন্যাসিক, নাট্যকার ও প্রাবন্ধিক হিসেবে খ্যাত। তিনি ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর কুষ্টিয়া জেলার লাহিনীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাকে বাংলা সাহিত্যের প্রথম মুসলিম ঔপন্যাসিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। গ্রামবার্তার সম্পাদক কাঙাল হরিনাথ ছিলেন তার সাহিত্যগুরু। তার রচিত প্রথম গ্রন্থ হলো রত্নাবতী। ছাত্রাবস্থায় তিনি সংবাদ প্রভাকর ও কুমারখালির গ্রামবার্তা প্রকাশিকার মফঃস্বল সংবাদদাতার দায়িত্ব পালন করেছিলেন, যা তাঁর সাহিত্যজীবনের সূচনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এছাড়াও তিনি আজিজননেহার ও হিতকরী নামে দুটি পত্রিকা সম্পাদনা করেছেন। মীর মশাররফ ছিলেন বঙ্কিমযুগের একজন প্রধান গদ্যশিল্পী ও উনিশ শতকের বাঙালি মুসলমান সাহিত্যিকদের পথিকৃৎ।
-
নাটক
-
বসন্তকুমারী
-
জমীদার দর্পণ
-
বেহুলা গীতাভিনয়
-
-
প্রহসন
-
টালা অভিনয়
-
এর উপায় কি
-
ফাঁস কাগজ
-
ভাই ভাই এইতো চাই
-
-
উপন্যাস
-
বিষাদ-সিন্ধু
-
-
আত্মজীবনীমূলক রচনা
-
উদাসীন পথিকের মনের কথা
-
গাজী মিয়াঁর বস্তানী
-
আমার জীবনী
-
কুলসুম জীবনী
-
অন্য উল্লেখযোগ্য মুসলিম ঔপন্যাসিক:
-
সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ: আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রধান ঔপন্যাসিক, বিখ্যাত উপন্যাস লালসালু (১৯৪৮) রচয়িতা।
-
ইসমাইল হোসেন সিরাজী: মুসলিম জাগরণের সাহিত্য রচনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
-
সেলিনা হোসেন: বাংলাদেশের সমসাময়িক জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক, যিনি মুক্তিযুদ্ধ, নারীজীবন ও সামাজিক বাস্তবতা বিষয়ক উপন্যাস লিখেছেন।
0
Updated: 4 weeks ago