সেলিনা হোসের কোন গ্রন্থ অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে?
A
কাঁটাতারে প্রজাপতি
B
পোকামাকড়ের ঘরবসতি
C
কালকেতু ও ফুল্লরা
D
নিরন্তর ঘন্টাধ্বনি
উত্তরের বিবরণ
সেলিনা হোসেন বাংলাদেশের আধুনিক কথাসাহিত্যের এক উজ্জ্বল নাম, যিনি সমাজ, রাজনীতি ও মানবজীবনের বাস্তব চিত্র গভীরভাবে তুলে ধরেছেন তাঁর রচনায়। তাঁর অন্যতম প্রসিদ্ধ উপন্যাস ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সমাজ-বাস্তবতা ও মানুষের অন্তর্গত মানসিক অবস্থার প্রতিফলন ঘটায়। এই উপন্যাসটির গভীর বাস্তববোধ ও মানবিক মূল্যবোধের কারণে এটি পরে চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়, যা সাহিত্য ও চলচ্চিত্র উভয় ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশংসা অর্জন করে।
পোকামাকড়ের ঘরবসতি সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো—
-
উপন্যাসের মূল বিষয়বস্তু হলো স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়কালীন গ্রামীণ সমাজের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তন। এখানে লেখিকা দেখিয়েছেন কীভাবে সাধারণ মানুষ যুদ্ধের আগুনে দগ্ধ হয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করে এবং মানবিক মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলে।
-
উপন্যাসের প্রধান চরিত্রগুলো জীবনের গভীরতা ও বাস্তবতার প্রতীক। তাদের মাধ্যমে লেখিকা দেখিয়েছেন যুদ্ধ মানুষের অন্তর্লোককে কীভাবে বদলে দেয়। নারী চরিত্রগুলোর দৃঢ়তা, কষ্ট ও সংগ্রাম এই রচনাকে আরও বাস্তব করে তুলেছে।
-
এই উপন্যাসে মানুষ ও সমাজের সম্পর্ক এক বিশেষভাবে চিত্রিত হয়েছে। লেখিকা বোঝাতে চেয়েছেন, যুদ্ধ কেবল রাজনীতি নয়—এটি মানুষের জীবনের গভীরে ঢুকে থাকা নৈতিকতা ও মূল্যবোধেরও পরীক্ষা।
-
চলচ্চিত্রে রূপান্তর হওয়ার পর এটি আরও জনপ্রিয় হয়। সিনেমাটি নির্মাণের সময় উপন্যাসের কাহিনির মূল ভাব অক্ষুণ্ণ রাখা হয়, যা দর্শকদের মনে দারুণ প্রভাব ফেলে।
-
চলচ্চিত্রটি সেই সময়ের বাংলাদেশি চলচ্চিত্র জগতে এক উল্লেখযোগ্য সাহিত্যনির্ভর কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয় যে সাহিত্য ও চলচ্চিত্র একে অপরের পরিপূরক, যদি গল্পটি মানবিক ও সমাজসচেতন হয়।
-
সেলিনা হোসেনের অন্যান্য জনপ্রিয় গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘হাঙর নদী গ্রেনেড’, ‘গাঙচিল’, ‘জাহান্নাম হইতে বিদায়’, ‘ভালোবাসার গল্প’ প্রভৃতি। তবে ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ সাহিত্যিক ও চলচ্চিত্র উভয় দিক থেকেই তাঁকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যায়।
-
এই উপন্যাসে ব্যবহৃত প্রতীকী ভাষা, সংবেদনশীল বর্ণনা ও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি পাঠককে গভীরভাবে নাড়া দেয়। লেখিকা সমাজের অবহেলিত মানুষের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন অত্যন্ত বাস্তবভিত্তিকভাবে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ‘পোকামাকড়ের ঘরবসতি’ শুধু একটি সাহিত্যকর্ম নয়, এটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সমাজের মনস্তাত্ত্বিক চিত্র। আর এই গভীর বাস্তবচিত্রই চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অনুপ্রাণিত করেছে একে পর্দায় রূপ দিতে, যা বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্রের সম্পর্ককে আরও নিবিড় করেছে।
0
Updated: 1 day ago
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘ওরা ১১ জন’ চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন কে?
Created: 1 month ago
A
আলমগীর কবির
B
আমজাদ হোসেন
C
চাষী নজরুল ইসলাম
D
খান আতাউর রহমান
ওরা ১১ জন বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর নির্মিত প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র। মূল তথ্যসমূহ হলো:
-
পরিচালনা করেছেন চাষী নজরুল ইসলাম।
-
সিনেমাটি মুক্তিপ্রাপ্ত হয় ১৯৭২ সালে।
-
সিনেমার বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাজ্জাক, শাবানা, নূতন, সৈয়দ হাসান ইমাম, এটিএম শামসুজ্জামান, খলিলউল্লাহ খান প্রমুখ।
-
সিনেমার ১১ জন চরিত্রের মধ্যে ১০ জন ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা।
-
তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মুক্তিযোদ্ধারা হলো খসরু, মুরাদ, হেলাল ও নান্টু।
0
Updated: 1 month ago
স্বাধীনতা উত্তর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র কোনটি?
Created: 3 days ago
A
জীবন থেকে নেয়া
B
লেট দেয়ার বি লাইট
C
ওরা ১১ জন
D
অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র হলো “ওরা ১১ জন”। এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সংগ্রাম এবং বিজয়ের এক বাস্তবচিত্র, যা দেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। মুক্তিযুদ্ধের ত্যাগ, বীরত্ব ও দেশপ্রেমকে শিল্পের মাধ্যমে তুলে ধরাই ছিল এই ছবির মূল লক্ষ্য।
• পরিচালনা ও নির্মাণ: “ওরা ১১ জন” চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেন চাষী নজরুল ইসলাম। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা, যিনি নিজে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর চলচ্চিত্রে দেশপ্রেম, মানবিক মূল্যবোধ ও সংগ্রামী চেতনার প্রতিফলন স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
• মুক্তির সময়কাল: ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে, অর্থাৎ স্বাধীনতার মাত্র এক বছর পর। তখন দেশের মানুষ যুদ্ধের ভয়াবহতা ও স্বাধীনতার আনন্দে ভাসছিল, আর এই চলচ্চিত্র সেই আবেগকে জীবন্ত করে তোলে।
• চরিত্র ও কাহিনি: ছবিতে দেখানো হয় ১১ জন মুক্তিযোদ্ধার দল, যারা জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে। চরিত্রগুলো ছিল সাধারণ মানুষ—শিক্ষার্থী, শ্রমিক, কৃষক—যারা স্বাধীনতার আহ্বানে অস্ত্র তুলে নেয়। তাদের সম্মিলিত লড়াইয়ে উঠে আসে ঐক্য ও আত্মত্যাগের এক অনন্য চিত্র।
• অভিনয়শিল্পী: চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন রাজীব, আসাদ, গোলাম মোস্তফা, আবদুল্লাহ আল মামুন, আনোয়ার হোসেনসহ অনেক গুণী শিল্পী। তাঁদের প্রাণবন্ত অভিনয় ছবিটিকে বাস্তবধর্মী করে তুলেছিল।
• চলচ্চিত্রের বার্তা: “ওরা ১১ জন” শুধু যুদ্ধের গল্প নয়, এটি স্বাধীনতার আদর্শে বিশ্বাসী একটি জাতির গল্প। ছবিটি শেখায়, স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে রয়েছে হাজারো প্রাণের ত্যাগ ও অনুপ্রেরণার ইতিহাস।
• প্রভাব ও গুরুত্ব: এই চলচ্চিত্র বাংলাদেশের চলচ্চিত্রজগতে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ধারার সূচনা করে। পরবর্তীতে “অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী”, “সূর্য দীঘল বাড়ি”, “গেরিলা” প্রভৃতি চলচ্চিত্র এই ধারাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
• ভুল বিকল্প বিশ্লেষণ:
জীবন থেকে নেয়া চলচ্চিত্রটি জহির রায়হান পরিচালিত, মুক্তি পায় ১৯৭০ সালে, অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের আগে। এটি স্বাধীনতার চেতনা জাগ্রত করলেও মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী নয়।
লেট দেয়ার বি লাইট একটি ইংরেজি ভাষার প্রামাণ্যচিত্র, যা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তৈরি হয়েছিল, তবে এটি পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা ফিচার ফিল্ম নয়।
অরুণোদয়ের অগ্নিসাক্ষী মুক্তি পায় পরে, ১৯৭২ সালের পরবর্তী সময়ে, যদিও এটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক, কিন্তু প্রথম নয়।
সুতরাং, স্বাধীনতা-উত্তর মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা চলচ্চিত্র হিসেবে “ওরা ১১ জন”-এর স্থান অনন্য এবং এটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসে এক যুগান্তকারী সৃষ্টি।
0
Updated: 3 days ago
মুক্তির গান চলচিত্র কে পরিচালনা করেছেন?
Created: 1 week ago
A
জহির রায়হান
B
আলমগীর কবীর
C
তারেক মাসুদ
D
গীতা মেহতা
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গুরুত্বপূর্ণ প্রামাণ্যচিত্র “মুক্তির গান” পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা তারেক মাসুদ ও তার স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ ।
0
Updated: 1 week ago