কোনটি দ্বন্দ্ব সমাস?
A
ভালোমন্দ
B
তুষার শুভ্র
C
সেতার
D
শতবর্ষ
উত্তরের বিবরণ
দ্বন্দ্ব সমাস এমন এক প্রকার সমাস যেখানে দুটি শব্দ একে অপরের সঙ্গে সমানভাবে যুক্ত হয়, এবং উভয় শব্দই সমান গুরুত্ব বহন করে। এখানে কোনো শব্দ অপরটির বিশেষণ বা কর্ম নয়, বরং দুটি শব্দ একত্রে মিলে একটি নতুন অর্থ প্রকাশ করে। “ভালোমন্দ” শব্দটি এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত, কারণ এটি দুটি বিপরীতার্থক শব্দের সমন্বয়ে গঠিত।
• ভালোমন্দ শব্দটি গঠিত হয়েছে “ভালো” ও “মন্দ” — এই দুটি বিপরীত অর্থের শব্দ থেকে। এদের যুক্তিতে একটি সমষ্টিগত ভাব প্রকাশ পেয়েছে, যার অর্থ “সব কিছু মিলিয়ে” বা “সমস্ত দিক থেকে বিচার করলে”। এ কারণেই এটি দ্বন্দ্ব সমাস।
• দ্বন্দ্ব সমাসে সাধারণত দুই বা ততোধিক শব্দ একত্র হয়ে একটি যৌগিক পদ তৈরি করে, যেখানে প্রতিটি শব্দের অর্থ স্বাধীন হলেও তাদের মিলিত অর্থ একটি সামগ্রিক ধারণা দেয়। যেমন— রামলক্ষণ, দেনাপাওনা, ভালোমন্দ।
• এই সমাসে কোনো নির্দিষ্ট শব্দ প্রধান নয়। দুটি শব্দই সমান মর্যাদা পায়, তাই একে “দ্বন্দ্ব” বলা হয়।
• বাংলায় দ্বন্দ্ব সমাসের দুটি প্রধান ধরন রয়েছে—
– সমার্থক দ্বন্দ্ব সমাস, যেখানে দুইটি সমার্থক শব্দ যুক্ত হয়। যেমন— দুখকষ্ট, হাসিখুশি।
– বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব সমাস, যেখানে দুইটি বিপরীতার্থক শব্দ যুক্ত হয়। যেমন— ভালোমন্দ, সুখদুঃখ।
• “ভালোমন্দ” শব্দটি বিপরীতার্থক দ্বন্দ্ব সমাসের উৎকৃষ্ট উদাহরণ, কারণ “ভালো” অর্থাৎ শুভ ও “মন্দ” অর্থাৎ অশুভ — দুইটি বিপরীত ভাবের শব্দ মিলেই এখানে একটি নতুন অর্থ তৈরি করেছে।
• বাক্যে এর ব্যবহার দেখা যায়— “মানুষের জীবনে ভালোমন্দ দুটোই থাকে।” এখানে শব্দটি জীবনের বিভিন্ন দিক বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে, যা দ্বন্দ্ব সমাসের প্রকৃত উদ্দেশ্যকে স্পষ্ট করে।
• অন্য বিকল্পগুলোর বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়—
– তুষার শুভ্র: এটি কর্মধারয় সমাস, যেখানে “তুষারের মতো শুভ্র” অর্থ প্রকাশ পায়।
– সেতার: এটি তৎসম শব্দ, কোনো সমাস নয়।
– শতবর্ষ: এটি দ্বিগু সমাস, কারণ “শত” (সংখ্যা) শব্দটি “বর্ষ” শব্দকে বিশেষিত করেছে।
তাই বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রদত্ত বিকল্পগুলির মধ্যে একমাত্র “ভালোমন্দ”-ই দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ।
0
Updated: 1 day ago
কোনটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ ?
Created: 4 months ago
A
সিংহাসন
B
ভাই-বোন
C
কানাকানি
D
গাছপাকা
সংজ্ঞা: যে সমাসে পূর্বপদ ও পরপদ—উভয়েরই অর্থ সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়, সেই সমাসকে দ্বন্দ্ব সমাস বলে। ব্যাসবাক্যে এই সমাস বিশ্লেষণ করতে গেলে "ও", "এবং", বা "আর" এই ধরনের সমুচ্চয় অব্যয় ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণ:
-
ভাই ও বোন → ভাইবোন
-
তাল ও তমাল → তালতমাল
-
দোয়াত ও কলম → দোয়াতকলম
-
মাতা ও পিতা → মাতাপিতা
এই ধরনের সমাসে দুটি শব্দের সংমিশ্রণে একটি যৌথ ধারণা সৃষ্টি হয়, যেখানে দুটি উপাদানই সমান গুরুত্ব বহন করে।
অন্যান্য সমাসের কিছু ভিন্ন উদাহরণ:
১. সিংহ চিহ্নিত আসন → সিংহাসন
→ এটি মধ্যপদলোপী কর্মধারয় সমাস। এখানে মধ্যবর্তী পদটি (যেমন "চিহ্নিত") লুপ্ত হয়ে গেছে।
২. কানে কানে যে কথা → কানাকানি
→ এটি ব্যতিহার বহুব্রীহি সমাস, যেখানে বহুবচনধর্মী শব্দের পুনরুক্তি দেখা যায় এবং সমাসবদ্ধ পদ দিয়ে অন্য কিছুকে বোঝানো হয়।
৩. গাছে পাকা → গাছপাকা
→ এটি তৎপুরুষ সমাস। এখানে পরবর্তী শব্দ "পাকা" প্রধান, এবং প্রথম পদটি তার সঙ্গে যোগ হয়ে একটি নির্দিষ্ট অর্থ গঠন করে।
দ্বন্দ্ব সমাস এমন এক ধরনের সমাস যেখানে উভয় পদই সমান অর্থবহ। তবে বাংলা ব্যাকরণে শুধু দ্বন্দ্ব নয়, আরও বিভিন্ন ধরনের সমাস রয়েছে, যেগুলোর গঠন ও বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া ভিন্ন। প্রতিটি সমাসের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকায় ভাষার সৌন্দর্য ও গভীরতা বৃদ্ধি পায়।
0
Updated: 4 months ago
'কুশীলব' শব্দটি কোন সমাসের অন্তর্গত?
Created: 6 days ago
A
বহুব্রীহি
B
কর্মধারয়
C
তৎপুরুষ
D
দ্বন্দ্ব
‘কুশীলব’ শব্দটি বাংলা ভাষার সমাসবিদ্যায় একটি দ্বন্দ্ব সমাসের উদাহরণ। দ্বন্দ্ব সমাস হলো এমন একটি সমাস যেখানে দুটি বা ততোধিক শব্দকে মিলিয়ে একটি নতুন অর্থ উদ্ভূত হয়, এবং প্রতিটি শব্দ সমানভাবে মূল অর্থ প্রকাশ করে। অর্থাৎ, সমাসের প্রতিটি অংশের গুরুত্ব সমানভাবে থাকে এবং নতুন শব্দটি সম্পূর্ণভাবে দুটি শব্দের মিলনফলের অর্থ বহন করে।
এই সমাসের ক্ষেত্রে কিছু মূল বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা যায়:
-
দুই বা ততোধিক সমান গুরুত্বের শব্দের সংমিশ্রণ: ‘কুশীলব’ শব্দে ‘কু’ এবং ‘শীলব’—উভয় অংশই নতুন শব্দের অর্থ নির্ধারণে সমান ভূমিকা রাখে।
-
নতুন অর্থের উদ্ভব: প্রতিটি উপাদান স্বতন্ত্র অর্থ বহন করে, কিন্তু একত্রিত হলে একটি নতুন ধারণা বা বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়। ‘কুশীলব’ মূলত সৎ, ন্যায়পরায়ণ এবং আদর্শ আচরণসম্পন্ন ব্যক্তি বোঝায়।
-
অর্থগত সুষমতা: দ্বন্দ্ব সমাসে প্রতিটি উপাদান সমানভাবে নতুন শব্দের অর্থকে সমৃদ্ধ করে এবং কোনো একটি অংশকে প্রাধান্য দেওয়া হয় না।
-
সাহিত্যিক ও দৈনন্দিন ব্যবহারে গুরুত্ব: এই ধরনের সমাস সাধারণত সাহিত্যকর্ম, প্রবন্ধ ও কথ্যভাষায় ব্যবহার করা হয়, যাতে সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জলভাবে বৈশিষ্ট্য বা ধারণা প্রকাশ করা যায়।
সারসংক্ষেপে, ‘কুশীলব’ শব্দটি একটি দ্বন্দ্ব সমাস, যা দুটি সমান গুরুত্বের উপাদানকে একত্রিত করে নতুন অর্থ বহন করে। এটি শুধুমাত্র শব্দগঠনের দিক থেকে নয়, বরং ব্যক্তির গুণাবলী বা চরিত্রগত বৈশিষ্ট্য প্রকাশের ক্ষেত্রে বাংলা ভাষায় সমৃদ্ধ এবং কার্যকর একটি উদাহরণ। দ্বন্দ্ব সমাসের মাধ্যমে ছোট শব্দগুলোকে সংমিশ্রণ করে দীর্ঘ বা জটিল অর্থকে সহজ এবং স্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা যায়, যা ভাষার সৌন্দর্য এবং কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে।
0
Updated: 6 days ago
অলুক দ্বন্দ্ব সমাস সাধিত শব্দ কোনটি?
Created: 2 months ago
A
হাট-বাজার
B
মা-বাপ
C
সাত-পাঁচ
D
হাতে-কলমে
দ্বন্দ্ব সমাস
১. অলুক দ্বন্দ্ব
যে দ্বন্দ্ব সমাসে কোনো সমস্যমান (পদের) বিভক্তি লোপ পায় না, তাকে অলুক দ্বন্দ্ব বলে।
উদাহরণ:
-
হাতে ও কলমে → হাতে-কলমে
-
চোখে ও মুখে → চোখে-মুখে
-
চলনে ও বলনে → চলনে-বলনে
২. সমার্থক শব্দযোগে দ্বন্দ্ব
একই অর্থবোধক শব্দ যোগে যে দ্বন্দ্ব সমাস হয়।
উদাহরণ: হাট-বাজার
৩. মিলনার্থক শব্দযোগে দ্বন্দ্ব
যেখানে দুটি ভিন্ন কিন্তু সম্পর্কিত অর্থবোধক শব্দ যোগ হয়।
উদাহরণ: মা-বাপ
৪. সংখ্যাবাচক শব্দযোগে দ্বন্দ্ব
সংখ্যাবাচক শব্দের যোগে গঠিত দ্বন্দ্ব।
উদাহরণ: সাত-পাঁচ
উৎস: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ, নবম ও দশম শ্রেণি (২০১৯ সালের সংস্করণ)
0
Updated: 2 months ago